বুদ্ধির জয়! সুমন ও হেডস্যারের গল্প

এক সময়ে এক গ্রাম ছিল। গ্রামের নাম হাটতোলি। সেই গ্রামে ছিল একটিই মাত্র স্কুল। স্কুলটির নাম ছিল রাউজ্ঞা হিলি সরকারি হাই স্কুল। সেই স্কুলএ অনেক কড়া নিয়ম কানুন। যে ছাত্র নিয়ম মেনে চলবে না তার শাস্তি অপরিহার্য। তবে সেই স্কুল এ ভালোই পড়াশোনা হতো। কেউ আজ পর্যন্ত বলতে পারেনি স্কুলে কোন পড়ালেখা হয় না। আর সেখানকার স্যার ম্যাডাম গুলো সবসময় নিয়মকানুন মেনে চলতো। আর তারা ছিল উচ্চ সুশিক্ষিত।

কিন্তু সেই স্কুলের ছাত্ররা এতো নিয়মকানুন মেনে চলতে চায় না। তারা একটুকু স্বাধীন ভাবে লেখাপড়া করতে চায়। সেখানকার প্রধান শিক্ষক ছিলেন অনেক রাগী। তিনি স্কুল মিস করা শিক্ষার্থীদের শাস্তি হিসেবে কান ধোরিয়ে দেন এবং সূর্যের দিকে তাদের মুখ তাকিয়ে থাকতে বলেন। সেই স্কুল এ পড়তো সুমন। সে ক্লাস ৯ এ পড়তো। সুমন স্কুলের নিয়মকানুন মানতে চাইতো না। সে বলতো এই স্কুল এ কোন স্বাধীনতা বলতে কিছুই নেই। তাই সুমন একদিন স্কুল থেকে পালিয়ে স্কুলের পাশের পার্কে খেলা দেখতে গেলো।

এই কথা প্রধান শিক্ষকের কাছে পোঁছে গেলো। তাই প্রধান শিক্ষক ঠিক করলেন সুমনকে ২ ঘন্টা সূর্যের দিকে তাকিয়ে রাখবেন। আর তার পড়া না হওয়া পর্যন্ত তাকে সারাদিন স্কুল এ কান ধরিয়ে রাখবেন। এই কথা সুমন জানতে পারলো। তাই সে স্কুলে তারাতারি চলে আসলো। প্রধান শিক্ষককে জানতে পেলেন সুমন স্কুল এ এসেছে। তিনি সুমনকে অফস রুমে ডেকে আনতে আনলেন। আর সুমন অনেক ভয় পেয়েছিল।

কিন্তু সুমন জানতো তাদের প্রধান শিক্ষককে কোন রকম খুশি করালে তার শাস্তি মাফ হয়ে যাবে। আর প্রধান শিক্ষক ফুল খুবই পছন্দ করতো। তাই সুমন পার্ক থেকে আসার সময় ফুলের তোরা সঙ্গে নিয়ে এসেছিল। আর যেমনিই সুমন অফিসে প্রবেশ করলো, সে ফুলের তোরা প্রধান শিক্ষককে দিয়ে বলে স্যার আমি তো আপনার জন্যই পার্কে ফুল আনতে গিয়েছিলাম। আমি জানি আপনি ফুল অনেক ভালো বাসেন।

এই কথা শুনে সুমনের প্রধান শিক্ষক অনেক খুশি হয়ে গেলো। আর বলল, আমাকে স্কুলে কেউ পছন্দ করেনা জানি কিন্তু কেউ আবার আমাকে এতো শ্রদ্ধা করে আজকে জানতে পেলাম। প্রধান শিক্ষক তাই সুমনকে বলল, আজ থেকে তোমার কোন নিয়মকানুন মানতে হবে না। তুমি শুধু আমার জন্য মাঝে মাঝে ফুল নিয়ে আসবে।

সুমন তো অনেক খুশি। আর সে তার বুদ্ধির জন্য শাস্তির থেকে বেঁচে গেলো। সে কাউকে তার বুদ্ধির কথাটা বলল না। এরপর সুমন নিজের মতো করে স্কুলে চলতে থাকে। কারো কোথা কানে নেয় না। সে তাই মাঝে মাঝে প্রধান শিক্ষককে ফুলের তোরা দিতো।

তো কি বুঝলে বুদ্ধির জোর কতটুকু?
সকলকে ধন্যবাদ।

Related Posts

15 Comments

মন্তব্য করুন