হোজ্জা নাসিরউদ্দিন মধ্যযুগে পারস্যের খুবই বিখ্যাত এক বুদ্ধিমান রসিক ও দার্শনিক ছিলেন। তাঁকে নিয়ে অনেক কৌতুক ও হাসির গল্প প্রচলিত আছে। তাঁর অনেক কর্মকাণ্ড ছিলো বোকার মতো। আবার অনেক কর্মকাণ্ড ছিলো খুবই বুদ্ধিমান মানুষের মতো। তবে বোকা ও বুদ্ধিমান যাই হোক, তার কর্মকাণ্ড ছিলো সত্যিই খুব মজার।
একদিন হোজ্জা নাসিরউদ্দিন গিয়েছেন বাজারে, উদ্দেশ্য কিছু মাংস কেনা। কিন্তু কসাইয়ের দোকানে ততক্ষণে মাংস সব বিক্রি হয়ে গিয়েছিলো। শুধু ভেড়ার একটা মাথা সেখানে পড়ে ছিলো। তাই দেখে হোজ্জা নাসিরউদ্দিন কসাইকে রসিকতা করে বললেন— “কিহে, তোমার ভেড়া তো আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।”
কসাই বুঝলো হোজ্জা নাসিরউদ্দিন ভেড়ার মাথাটি নিতে চাইছেন। সে হোজ্জাকে খুব পছন্দ করতো। তাই সেও রসিকতা করে বললো— “হ্যাঁ, সে মনে হয় আপনাকে খুব পছন্দ করেছে; তাই বোধহয় আপনার সাথে যেতে চাইছে।” এই বলে সে ভেড়ার মাথাটি খুব ভালো করে কেটেকুটে বানিয়ে দিয়ে বললো— এই মাথার মাংস বেগম সাহেবাকে দিয়ে বলবেন, মসলা দিয়ে খুব মজা করে রান্না করতে। খেয়ে খুব মজা পাবেন। কচি ভেড়ার মাথা। মাথাটাও বেশ বড়। এক কেজিরও বেশি মাংস হবে। তবে ভেড়ার এই মাথার জন্য আপনার কোনো টাকা দিতে হবে না। আমার ছোটো ছেলেটাকে মাঝেমধ্যে ফারসি পড়াবেন। তাহলেই হবে। আমার ছোটো ছেলেটা ফারসিতে খুবই দুর্বল। আপনি একটু দেখিয়ে দিলে খুব ভালো হয়।
“অবশ্যই তোমার ছেলেকে আমি খুব ভালো করে ফারসি শেখাবো।” —এই বলে হোজ্জা নাসিরউদ্দিন খুশি মনে ভেড়ার মাথার মাংস নিয়ে বাড়িতে এলেন। বেগম সাহেবার হাতে ভেড়ার মাথার মাংস তুলে দিয়ে বললেন, “এখানে এককেজি ভেড়ার মাথার মাংস আছে। খুব ভালো করে তেল-মসলা দিয়ে রান্না করো। আমি মসজিদে গিয়ে জোহরের নামাজ পড়ে এসে দুপুরে রুটি দিয়ে ভেড়ার মাথার এই মাংস খাবো।” গিন্নীকে মাংস দিয়ে হোজ্জা নাসিরউদ্দিন মসজিদে চলে গেলেন জোহরের নামাজ পড়তে। হোজ্জার গিন্নী সেই ভেড়ার মাথার মাংস রান্না করতে গিয়ে খুব ভালো করে তেল-মসলা দিলেন। মাংস কষাতে গিয়ে তার মনে হলো, আচ্ছা মাংসতে লবণ বেশি হয় নি তো, আবার মাংস ঠিকমতো সিদ্ধ হলো কিনা সেটাও দেখা দরকার। কেননা, হোজ্জা মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ না হলে খেতে পারেন না। তাই তিনি এক টুকরো মাংস মুখে দিলেন।
মাংস এতোই মজা হয়েছিল যে, তার আর হোজ্জার কথা মনেই রইলো না। এক টুকরো এক টুকরো করে খেতে খেতে তিনি সব মাংসই খেয়ে ফেললেন। যখন তার হুঁশ হলো, তখন হাঁড়ির সব মাংস শেষ! হোজ্জার গিন্নীর তো তখন মাথা নষ্ট অবস্থা!! এখন নামাজ পড়ে এসে হোজ্জা মাংস খেতে চাইলে তিনি কী করবেন? অনেক ভেবেচিন্তে তিনি একটা বুদ্ধি বের করলেন। তারপর খুশিমনে গোসল করতে চলে গেলেন।
হোজ্জা নাসিরউদ্দিন নামাজ পড়ে এসে দুপুরে ভেড়ার মাথার মাংস দিয়ে রুটি খেতে চাইলে তাঁর গিন্নী রুটি আর হালুয়া এনে দিলেন। হোজ্জা অবাক হয়ে বললেন— রুটি-হালুয়া কেন? ভেড়ার মাথার মাংস কই? হোজ্জার গিন্নী শান্ত গলায় বললেন, তোমার পোষা বেড়াল ভেড়ার মাথার সব মাংস খেয়ে ফেলেছে।
হোজ্জা অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তার গিন্নীর দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ দৌড়ে গিয়ে পোষা বেড়ালটাকে একহাতে ধরে আরেকহাতে বাসায় রাখা দাঁড়িপাল্লাটা নিয়ে এলেন। তারপর পাল্লার একদিকে এককেজি পরিমাণ পাথর আর একদিকে বেড়ালটা দিয়ে দেখেন যে, বেড়ালটার ওজন ঠিক এককেজি।
তখন গিন্নীর দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে হোজ্জা বললেন— তুমি বলছো, এই বেড়ালটা ভেড়ার মাথার এককেজি মাংস খেয়ে ফেলেছে। তবে তাই যদি হয়, তাহলে বেড়ালটার ওজন হওয়ার কথা দুইকেজি। এখন বেড়ালের ওজন দেখা যাচ্ছে এককেজি। যুক্তির কথায়— এই যদি হয় বেড়াল, তাহলে আমার ভেড়ার মাথার মাংস কই? আর এই যদি হয় ভেড়ার মাথার মাংস, তাহলে আমার বেড়াল কই?
NICE
ধন্যবাদ
খুব মজার হাসির গল্প। অনেক ভালো লাগলো। এ ধরনের গল্প গ্রাথোরে আরো দেখতে চাই।
ধন্যবাদ
আসলেই গল্পটা অনেক মজাদায়ক
Ha ha ha
Thanks
Nice
খুব মজার হাসির গল্প। অনেক ভালো লাগলো। এ ধরনের গল্প গ্রাথোরে আরো দেখতে চাই।
ধন্যবাদ
nice post
nice post…
nice post
gd
nice
nice post
❤️