মস্তিষ্কের আকার পরিবর্তন ও বিবর্তন সমস্যা

মস্তিষ্কের আকার পরিবর্তন ও বিবর্তন সমস্যা লিখাটা একটু বড়ো, যদি মন দিয়ে পড়া শুরু করেন তাহলে আমার লিখার চেয়ে আপনার পড়া অনেক দ্রুত শেষ হবে। বিবর্তনবাদিরা এপ দিয়ে মাসুষের ব্রেইনের আকারের পার্থক্যকে হাইলাইট করে। বিষয়টি যেহেতু সাধারন মানুষের সহজবোধ্য নয় সেহেতু ব্রেইন নিয়ে ধোকা দেওয়াটা স্বাভাবিক। কারন ব্রেইনের পার্থক্যহয় মূলত অর্গানাইজেশনে, আকারে নয়-[1]।
হা আকার বড় হয় ততটুকু, যতটুকু অর্গানাইজেশন পরিবর্তন করতে গিয়ে। কিন্তু আকার ছোটো রেখেও অর্গানাইজেশন এক রাখলে বিচারবুদ্ধিও একই থাকে। মানুষের ব্রেইনের আকার সর্বনিম্ন ৮০০সিসি থেকে ২২০০ সিসি পর্যন্ত হয়ে থাকে-[2]।
তারমানে এই না যে ৮০০ সিসি’র মস্তিস্কের বুদ্ধি কম।
মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জির ব্রেইনের মূল পার্থক্য ফ্রন্টালকর্টেক্স নামক ব্রেইনের অগ্রভাগের অংশে স্পষ্ট।
শুধু ফ্রন্টালকার্টেক্সের আকার যদি বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলেই কি এপ জাতীয় প্রাণী মানুষে পরিণত হবে? না। যারা এরূপ দাবী করে তারা তথ্য গোপন করে এড়িয়ে যান।

ফ্রন্টাল কার্টেক্স বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে তারা ফ্রন্টালকর্টেক্সের সাথে ব্রেইনের অন্যান্য অংশের সুসংগঠিত যোগাযোগ গুলির কথা বলেন্না।

ফ্রন্টালকর্টেক্স মানুষের ব্রেইনের কম্প্লেক্স ফাংশন করতে গিয়ে, প্রাইমারি ও সাপ্লি মেন্টারি মোটোর এরিয়া বা সেনসরি এরিয়া ভিজুয়েল কর্টেক্স, অডিটরি কর্টেক্স, ভারনিক্স এরিয়া, লম্বিক সিস্টেম, কর্পাস স্ট্রায়েটাম, ডায়েনসেফালন এবং পিছনের ব্রেইনের সাথে নিবিড় ভাবে সম্পর্কযুক্ত। সুতরাং ব্রেইনের এই জটিল গঠন তৈরি করতে যে জটিল রিঅর্গানাইজেশন প্রয়োজন, অনিয়ন্ত্রিত বিবর্তন ব্যখ্যা করতে গেলে এগুলোর ব্যখ্যা করতে হবে।
আর বিবর্তনবাদিদের দাবী অনুসারে আনগাইডেড বিবর্তন হয় ‘রেন্ডম মিউটেশন’ এর ফলে যদি কোন ‘নতুন ফাংশনাল ভেরিয়েশন’ তৈরি হয় তার ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’ এর মধ্য দিয়ে।

সমস্যা হলো প্রাণী দেহের অধীকাংশই হলো ‘জিন’ এর সাথে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ সম্পর্কযুক্ত না। অর্থাৎ একটি জিন একটি ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করছে (মনোজেনিক) তা নয়। বরং অনেকগুলো জিন একত্রে একটি বৈশিষ্ঠের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় (পোলিজেনিক)।

সুতরাং উপরোক্ত দাবী ব্যখ্যা করতে গেলে অসংখ্য Simultaneous and Exact মিউটেশন একসংগে হতে হবে। তদুপুরি এমব্রায়ো থেকে ডেভেলপমেন্টের সময় জেনেটিক সুইচ (ডিএনএ মিথাইলেশন প্যাটার্ণ) ও বিভিন্ন হওয়ায় ব্যাখ্যা করতে হবে এপিজেনেটিক রিঅর্গানাইজেশন।-[3]
অথচ এরিকডেভিডসনের ডেভেলপমেন্টাল জিন রেগুলেটরি নেটওয়ার্ক (dGRN) মিউটেশন নয়ে পরিক্ষা থেকে আমরা জানি
এগুলো হাইলি কনজার্ভড অর্থাৎ সামান্য মিউটেশনে মারাত্মক ডিফেক্ট তৈরি করে।-[4]
অন্যদিকে মাইকের বিহের স্টাডি থেকে জান্তে পারিঃ
একই সাথে চারটির বেশি মিউটেশন প্রয়োজন হলে এবং তা রেন্ডমলি হতে হলে পৃথিবীর বয়স সীমা পার হয়ে যায়-[5]।

আবার ডগলাস এক্স ও এন গজার দেখিয়েছেন একটি ফাংশনাল এনজাইমকে আরেকটি ফাংশনাল এনজাইমে পরিণত করতে ৫টি বা তার অধিক সাইমালটেনিয়াস ও স্পেসিফিক মিউটেশন লাগবে-[6]।

কিন্তু কোষের নতুন কোনো কাজ একটি এনজাইমের উপরতো নির্ভর করে না। অনেকগুলো এনজাইমের সামগ্রিক সহযোগিতায় একটি নতুন ফাংশন তৈরি হয়। আর এ ধরনের এরূপ অনেকগুলো নতুন ফাংশনযুক্ত কোষের সমন্বয়ে তৈরি হয় নতুন ফাংশন বা বৈশিষ্ট্য-যুক্ত টিস্যু।

মস্তিষ্কের আকার পরিবর্তন ও বিবর্তন সমস্যা

আর এ ধরনের টিস্যুগুলোর পারস্পরিক সুনির্দিষ্ট ও পরিকল্পিত যোগাযোগের মাধ্যমেই শুধু হবে রিঅর্গানাইজেশন।
~~
সুতরাং পাঠক বুঝে নিন বিবর্তনবাদিদের দাবী কোন পর্যায়ের ‘বিজ্ঞান’

Related Posts

21 Comments

মন্তব্য করুন