পার্ট-১
—————মানুষের আদি উৎস —————-
মানুষের আবির্ভাব ও ধর্মগ্রন্থসমূহের আলােকে
আমাদের একটা কথা মনে না রাখলে ভুল হবে যে, একত্ববাদী
ধর্মসমূহ-ক্রম-অনুসারে ইহুদীবাদ, পরবর্তীতে খ্রিস্টীয় মতবাদ এবং তারপর
ইসলাম—বিশ্বের মােট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের
প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। এক্ষেত্রে অন্যান্য ধর্ম মানুষের অরিজিন সম্পর্কে কি
বলেছে, আমি সে বিষয়ে কোন গবেষণা পরিচালনা করি নাই। তবে যতদূর
জানি, এসব বিষয় নিয়ে তেমন গভীর কোন আলােচনা এসব ধর্মে নাই। কিংবা
পাশ্চাত্যে যাকে বলা হয় বস্তুগত বিশ্লেষণ, ওইসব ধর্মে মানুষের অরিজিন বা
আদি উৎস নিয়ে তেমন কোন আলোচনা কিংবা বিশ্লেষণ অনুপস্থিত।
সুতরাং পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব সম্পর্কে আলােচনা করতে গেলে,
আমরা অন্তত উপরে উল্লিখিত তিনটি প্রধান ধর্মকে ( ইহুদীবাদ, খ্রিস্টধর্ম ও
ইসলাম ) উপেক্ষা করতে পারি না। অন্য কথায়, পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব
সম্পর্কে এই তিনটি ধর্মের স্ব-স্ব ধর্মীয়গ্রন্থে যা কিছু রয়েছে বৈজ্ঞানিক গবেষণা
ও বিশ্লেষণের স্বার্থেই আমাদের পক্ষে সে-সম্পর্কে উদাসীন থাকা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য যে, অধুনা আমরা এইসব ধর্মের ধর্মীয়গ্রন্থসমূহের আদি উৎসের
ব্যাপারে বেশকিছু তথ্যজ্ঞান অর্জন করেছি। শুধু তাই নয়, দেখা গেছে, প্রাপ্ত
এইসব তথ্য-জ্ঞানের আলােকে এতদসংক্রান্ত বিচার-বিশ্লেষণের ফলাফল
সবিশেষ মনােজ্ঞও বটে। এই অবস্থায় মানুষের অরিজিন-সম্পর্কিত যে কোন
বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা পর্যালােচনায় এসব ধর্মীয় গ্রন্থের বক্তব্য উপেক্ষা করা বা
এড়িয়ে যাওয়া মােটেও উচিত নয়।
সবচেয়ে বড় কথা, মানুষের অরিজিন বা আদি উৎস সম্পর্কে বিভিন্ন
ধর্মগ্রন্থের বক্তব্যের পর্যালােচনায় যে সব ধারণা পাওয়া যায়, তা শুধু নবতর নয়,
চমকপ্রদও বটে। এক কথায়, মানুষের আদি উৎস সম্পর্কে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের তথ্যজ্ঞান এ যুগের মানুষের কাছে একান্তভাবেই অভাবিত। অন্যদিকে, ওইসব।
ধর্মগ্রন্থে মানুষের অরিজিন সম্পর্কে যা কিছু আলােচিত হয়েছে সে সম্পর্কে এ।
যাবত তেমন কোন বস্তুগত পর্যালােচনা কোথায়ও দেখা যায় না।
| অথচ আজ আমরা এসব ধর্মের ধর্মীয়গ্রন্থসমূহের আদি-উৎসের ব্যাপারে
বিভিন্ন তথ্যজ্ঞান লাভ করেছি। সে সব তথ্যজ্ঞানের আলােকে এতদসংক্রান্ত
পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিচার-বিশ্লেষণ মনােজ্ঞ বলে প্রতিভাত হতেও দেখা যাচ্ছে।
এই অবস্থায় আমাদের পক্ষে বিষয়টা কোনক্রমেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের এই ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যে ধারণার
সৃষ্টি হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে নবতর। আর এর থেকে যে তথ্যজ্ঞান আমরা ।
পাচ্ছি, বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে সে ধরনের তথ্যজ্ঞান এ যুগের মানুষের কাছে
সত্যি কথা বলতে কি-একান্তই অপ্রত্যাশিত।