জীবনীভিত্তিক মুভি কিংবা জীবনীভিত্তিক বই সব সময়ই আমাকে একটু বেশি টানে। একটা মানুষ এর পুরো জীবনের চড়াই উতরাই এর গল্পগুলো আরেকজন মানুষ থেকে পুরোপুরি ভিন্ন হয় সবসময়। প্রতিটি মানুষের জীবনের গল্প হয় একদম ভিন্ন ভিন্ন। জীবনীভিত্তিক বই গুলো খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ করে দেয় যেনো সেই মানুষটকে।লকডাউনের দিনে বই খুঁজতে গিয়ে পেলাম ,কলেজ জীবনে পাওয়া পুরস্কার পাওয়া একটা জীবনীভিত্তিক বই।
আজকে যার জীবনীভিত্তিক বই নিয়ে আলোচনা করবো তিনি হচ্ছেন একজন এমন মানুষ যিনি ছিলেন একাধারে উদ্যোক্তা, দানবীর, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক। হ্যা বলছি , রণদাপ্রসাদ সাহার কথা।
বইয়ের নাম: রণদাপ্রসাদ সাহার জীবন কথা
লেখক: হেনা সুলতানা
বইয়ের ধরণ: ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জীবনী
প্রকাশক: বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র
প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ
লেখক পরিচিতি:
বইটি সম্পর্কে লেখার পূর্বে লেখক হেনা কামালের সঙ্গে একটু পরিচয় করিয়ে দেই যিনি কিনা ১৯৮৬ সালে ভারতেশ্বরী হোমস এ সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। মূলত সেই থেকে লেখকের মনে এক ধরনের গভীর অনুভূতি সৃষ্টি হয় যে কেনো রণদাপ্রসাদ সাহার জীবনী নিয়ে কোনো ধরনের পূর্ণাঙ্গ জীবনী লেখা হয় নাই,কেনো কোনো ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়নি এই বুদ্ধিজীবীর নামে, যে কিনা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলো ছিলো ,তাই তার অনুভূতিগুলো এক করে তিনি এই বই লেখার প্রয়াস করেন।
বই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
লেখক রণদাপ্রসাদ সাহার জীবনী নিয়ে লেখার সময় কিছু অংশে ভাগ করেছেন এবং আলাদা খন্ড করে প্রতিটি অংশ বই এ তুলে ধরেছেন।
যেমন: রণদাপ্রসাদ সাহার——-
১. জীবনযুদ্ধ
২. চিন্তাধারা ও আদর্শ
৩. শিক্ষাবিস্তার
৪. একজন সেবক
৫.জীবন যেখানে যেমন
৬. সম্রাট আলমগীরের ভূমিকায় রণদাপ্রসাদ
প্রতিটি অংশ এ লেখক রণদাপ্রসাদ সাহা সম্পর্কে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন খুব নিখুঁত ভাবে। জীবনযুদ্ধ অংশে ফুটে উঠেছে মা ছাড়া রণদাপ্রসাদ সাহার শৈশব কিভাবে কেটেছে।তার অস্থায়ী সুবেদার হিসেবে বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগদান, কাজী নজরুল ইসলামের সাথে তার সখ্যতা এবং আরো অনেক কিছু।
চিন্তাধারা ও আদর্শ এ রণদাপ্রসাদ সাহার ভাবনা জুড়ে ছিলো শুধু মানুষের সেবা।তিনি ছিলেন সম্পুর্ণ স্বশিক্ষিত।
শিক্ষাবিস্তারে তার অবদান যুগ যুগ ধরে এখনো মানুষ মনে করে ।তিনি প্রকৃত শিক্ষা অনুরাগী ছিলেন , ভারতেশ্বরী হোমস , কুমুদিনী হাসপাতাল , দেবেন্দ্র কলেজ এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তার বিশাল অবদান ।
কুমুদিনী হাসপাতাল একজন সেবক হিসেবে তার সবচেয়ে বড় পরিচায়ক,যার জন্য তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সংগ্ৰাম করে গেছেন।
শিক্ষার পাশাপাশি তিনি শিল্পের প্রতিও যে ছিলেন বিশেষ ভাবে আন্তরিক ৭৩ বছর বয়সে সম্রাট আলমগীরের ভূমিকায় অভিনয় তাই বলে দেয় আমাদের।