রহস্য গল্প (অডিটরী হেলুসিনেশন)

ফ্যাশানী চলে যাওয়া আজ ৫ বছর হয়ে গেল। আজও সেই দৃশ্যস্পস্টত দেখতে পায় ফুয়াদ। ফ্যাশানী পানিতে ডুবে যাচ্ছে, আর ফুয়াদ পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য দেখছে। চাইলেই ফুয়াদ তাকে তুলতে পারত কিন্তু এগোয়নি । কেন এগোয়নি আজও সেটা সে বুঝতে পারে না। প্রচন্ড রাগে মাথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।বহু কষ্টে নিজেকে ধরে রেখেছে । কিন্তু মনে হচ্ছে আর বেশিক্ষণ পারবে না । মেয়েদের সাথে অশ্লীল ব্যবহার তার মোটেই পছন্দ নয় ।

পাশে দাঁড়ানো লোকটার মুখে একটা ঘুষি বসিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে তার বহুক্ষণ ধরেই হচ্ছে । ঢাকায় সিটিং সার্ভিস কয়টা, অকাজের সিটিং । দিনের বিশেষ বিশেষ মুহূর্তগুলোয় যখন চেকার বাসে উঠে, তখনই এরা ভদ্র হয়ে যায় । বাকি সময়গুলো হেল্পারদের ধান্ধাই থাকে ড্রাইভারের কোল পর্যন্ত একটা করে মানুষ তোলার ।

এক তরুণীকে ফুয়াদের মতই বাধ্য হয়ে দাঁড়াতে হয়েছে। পাশের লোকটা ভীড়ের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইচ্ছে করেই মেয়েটার কোমরে হাত দিচ্ছে । যদিও মুখে ফুটিয়ে রেখেছে রাজ্যের সারল্য । আর ওদিকে লজ্জায়-অপমানে মেয়েটা লাল হয়ে আছে ।

সামনেই বাস থামতে নিজের গন্তব্য না হওয়া স্বত্তেও নেমে পড়ল ফুয়াদ। প্রচন্ড ইচ্ছে থাকা শর্তেও লোকটিকে কেন ঘুষি মারল না সেটা বুঝে উঠতে পারছে না সে নিজেই।

রাস্তার মোড়ে গলির মাথায় চায়ের দোকানী তার আট বছরের ছেলেকে প্রচন্ড মারছে, সে নাকি না বলে ৩টি বিস্কুট খেয়ে ফেলেছে, এই আজব কারণে দোকানী ছেলেটাকে বেদম মার মারছে। অনেকেই দোকানীকে ধমকাচ্ছে এই বাচ্চা ছেলেটাকে আর মারিস না বলছে। ফুয়াদের প্রচন্ড ইচ্ছে করছে সে বাচ্চাটাকে তার বাবার হাত থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আনতে আর পকেটে যে ৫০০ টাকার নোটটা আছে তা দিয়ে যতগুলো বিস্কুট পাওয়া যায় ততগুলো ঐ ছেলেটাকে কিনে দিতে। এবার সে ইচ্ছে টাকে দমন না করার সিদ্ধান্ত নিল । ছেলেটার কাছে এগিয়ে গেল। দোকানীর হাত থেকে ছেলেটাকে কেড়ে নিল। তারপর প্রচন্ড জোড়ে সে ঐ বাচ্চা ছেলেটাকেও একটা চড় দিল। চড় টা দেবার পর সে বুঝতে পারল, সে আসলে চড়টা দোকানীকে দিতে চেয়েছিল। প্রচন্ড অবাক হয়ে বাচ্চাটা ফুয়াদকে দেখছে। দোকানীও যার পর নাই অবাক হয়ে ফুয়াদকে বলল ‘’ ভাই আফনে মারেন কেরে ? আমার পোলা আমি যা করার করমু ,আফনের কি?’’ দোকানীর রক্তচক্ষুর দিকে তাকিয়ে ফুয়াদ নিজের অজান্তেই ক্ষমা চেয়ে বসল।

নিজের আচরণে নিজেই অবাক ফুয়াদ আনমনে হাঁটতে হাঁটতে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো বিশ্লেষনের চেষ্টা করছে কিন্তু হচ্ছে না। সাইকিয়াট্রিস্ট সামনে বসা ফুয়াদ। সাইকিয়াট্রিস্ট ডাঃ আহমদ সাহেব তার শকুনের মত কুতকুতে দৃষ্টিতে ফুয়াদের দিকে তাকিয়ে আছে। ফুয়াদের হঠাৎ বিরক্ত লাগছে। এই ব্যাটা সব ঘটনা শোনার পর কোন কথায় বলেনি শুধু অদ্ভুত ভাবে তাকিয়েই আছে।

ফুয়াদই নিরবতা ভঙ্গ করে ডাঃ আহমদ সাহেবের কাছে জানতে চাইল ‘‘ রোগটা কি ধরতে পারছেন?’’

আহমদ সাহেব মুখে কিছু না বলে একগাদা ঔষুধ লিখে দিলেন আর বললেন একটানা ঘুম দিন। কয়েকদিন অফিস ছুটি নিন আর ঘুমান। তারপর মেডিটেশান করে নিজের কনফিডেন্স ফিরিয়ে আনতে হবে।

ডাঃ আহমদ সাহেবের দেয়া প্রেসক্রিপশান তার চেম্বার থেকে বের হবার সাথে সাথেই ফুয়াদ ছিড়ে টুকরা টুকরা করে ড্রেনে ফেলে দিল। মনে মনে ভাবল ১০০০ টাকা গচ্ছা গেল। কেন যে আসলাম এই শকুন ডাক্তারের কাছে ! নিজের মাথার চুল নিজেই ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে। এসব ভাবতে ভাবতে হাঁটছে ফুয়াদ।

হঠাৎ মনে হলো তার পেছনে একটা এ্যাক্সিডেন্ট হবে। ফুয়াদ পেছন ফিরে দাড়িয়ে রইল এ্যাক্সিডেন্ট দেখার জন্য। ১০ মিনিট পেরিয়ে গেল কিন্তু কোন এ্যাক্সিডেন্ট হলো না। ঘাড় ফিরিয়ে চলে আসবে ঠিক তখনিই ফুল বিক্রি করছিল যে ১২ বছরের কিশোরী তার চিৎকারে সেদিকে তাকায়, দেখতে পেল মেয়েটা তার দিকে তাকিয়ে চিৎকার করছে। কেন চিৎকার করছে বোঝা যাচ্ছে না। মেয়েটা দৌড়ে এসে ফুয়াদকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় আর একটি মিনি বাস ঠিক তখনই মেয়েটাকে ধাক্কা দেয়।আর মেয়েটি রাস্তায় পরে কাতরাতে থাকে।

ফুয়াদ অবাক হয়ে সে দৃশ্য দেখে। লোকজন জড়ো হতেই ফুয়াদ সেখান হতে এক রকম পালিয়ে আসে। ঘণ্টাখানেক পরে তার মনে হতে থাকে, এভাবে পালিয়ে আসাটা ঠিক হয়নি।মেয়েটার চিকিৎসার দায়িত্ব তার নেয়া উচিত ছিল। ফুয়াদ আবার সেই এ্যাক্সিডেন্ট স্পটে যায় কিন্তু সেখানে কেউ কিছু বলতে পারে না। কখন, কোথায় কোন হসপিটালে মেয়েটাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছি তার কেউ কিছু বলতে পারল না।

——–

প্রচন্ড শীতের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়ে লেপের মধ্যে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে ফুয়াদ। কুম্ভকর্ণের ঘুম বলা যায়, কিছুতেই তাকে ডেকে তোলা যায় না। তবে আজ ফ্যাশানীর এক ডাকেই ঘুমটা ভেঙে গেল ফুয়াদের। ধরমর করে লাফিয়ে উঠেও পরল। ফ্যাশানীকে চোখের সামনে দেখে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে । ফ্যাশানীকে ছুয়ে দেখতে ওর গালে হাত রাখল। ফ্যাশানী বিরক্ত হয়ে বলল ‘‘উঠত ভাইয়া, তুই উঠছিস না আর মা আমাকে বকছে। তুই ফ্রেশ হয়ে নে, আমি তোর জন্য ভাপা পিঠা আনছি। পুকুর থেকে রাতের বাসন গুলো ধুয়ে নিয়ে তারপর আসব ততক্ষনে তুই মুখহাত ধুয়ে নে’’।

ফুয়াদ ফ্যাশানীর চলে যাওয়া দিকে তাকিয়ে রইল। ফুয়াদের জানালা দিয়ে পুকুরঘাটটা দেখা যায়। সেখানে ফ্যাশানীকে দেখা যাচ্ছে। ফুয়াদ তাকিয়ে আছে, যেন কোন অপেক্ষা করছে। একটা চামুচ পড়ে গেল ফ্যাশানীর হাত থেকে সেটা তুলবার জন্য ফ্যাশানী পুকুরের পানিতে নামছে। ফুয়াদ চিৎকার করে উঠল ‘‘ফ্যাশানী নামিস না’’ ফুয়াদের হঠাৎ চিৎকারে ফ্যাশানী চমকে উঠে পা পিছলে পরে গেল পুকুরে, শীতের পানি প্রচন্ড ঠাণ্ডা আর ফ্যাশানীও সাঁতার না জানা। ফুয়াদ ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে পুকুর পারে যেতে চাইল। কিন্তু দরজার সাথে ধাক্কা খেযে জ্ঞান হারিয়ে পরে রইল।

কতক্ষন জ্ঞান ছিল না জানা নাই। তবে জ্ঞান ফিরে দেখে সকলে ফ্যাশানীকে খুঁজছে। কিন্তু কোথাও পাচ্ছে না। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে বেলা বারোটা বাজে। ফুয়াদ ঘর থেকে বের হয়ে মা কে গিয়ে জানাল ফ্যাশানী কোথায়।

৫ বছর পর ফ্যাশানীর মৃত্যুদিন এলো, ফুয়াদ সেই স্বপ্নটা আজও ভুলেনি। সে কোন ভাবেই স্বপ্নটাকে সত্য হতে দিতে পারে না। যথারীতি বাসে উঠল। এক সুন্দরী তরুনী ফুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে। লোভাতুর লালসাগ্রস্থ একটা হাত তরুনীর কোমর স্পর্শ করতে আসছে। ফুয়াদ কপ করে ধরে ফেলল হাতটা। লোকটা ভিষণ বিরক্ত হয়ে ফুয়াদের দিকে স্বপ্রশ্ন দৃষ্টিতে তাকাল।

ফুয়াদ বলল আপনি মেয়েটিকে স্পর্শ করতে যাচ্ছিলেন। লোকটি রাগান্বিত হলো, বাস শুদ্ধ সকল মানুষ ফুয়াদের উপর ক্ষিপ্ত হলো এমনটি মেয়েটিও ক্ষিপ্ত, বলল ‘‘ আমিতো কিছুই বুঝলাম না আর আপনি বুঝলেন?’’ ফুয়াদ বোঝানোর চেষ্টা করল কিন্তু কেউ ওরা কথা শুনল না বাস থামিয়ে তাকে এক রকম ধাক্কা দিয়েই নামিয়ে দেয়া হলো।

রাস্তার মোড়ে গলির মাথায় যে চায়ের দোকানটা আছে সেখানে গিয়ে বসল ফুয়াদ। কই দোকানী কাউকে মারবে বলে মনে হচ্ছে না। দোকানীর আজ মেজাজ ফুরফুরে। খুশ মেজাজে মোবাইলে জোরে জোরে হিন্দী গান বাজাচ্ছে। ফুয়াদ জানতে চাইল ‘‘তোমার কোন ছেলে আছে 8-10 বছরের ?’’ দোকানী হে হে করে হেসে ফেলল – ‘‘কি বলেন ভাইজান, অহনও বিয়া করি নাই’’ ।

ফুয়াদ নিশ্চিন্ত হয়ে বাসায় যাওয়া জন্য রওনা হলো। হঠাৎ হৈ চৈ এ পিছন ফিরে দেখে দোকানী একটা বাচ্চা ছেলেকে মারছে। ফুয়াদ এগিয়ে গেল। দেখল ছেলেটির হাতে ফুয়াদের ম্যানিবাগ। ফুয়াদকে ম্যানিব্যাগটি ফেরত দেয়া হলো। দোকানী তার ভালমানুষির ঘুষ হিসেবে কিছু বখশিস চাইল। এবার ফুয়াদ রাগান্বিত হয়ে দোকানীকে একটা চড় বসিয়ে দিল।

‘‘না চাইতেও সব ঘটনার পূণরাবৃত্তি হচ্ছে। তবে এখন কি হবে ? মেয়েটাকে কি এ্যাক্সিডেন্টের হাত থেকে তবে রক্ষা করা যাবে না ?’’

ফুয়াদ এ্যাক্সিডেন্টের অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছে রাস্তার মাঝখানে। সারাদিন পেরিয়ে সন্ধ্যা হলো তবু কোন এ্যাক্সিডেন্ট হলো না। ফিরে যেতে ভয় হচ্ছে যদি যাবার সময়ই এ্যাক্সিডেন্টটা হয়, সে ভয়।

তবু সন্ধ্যা পার হতেই ফুয়াদ রওনা হলো বাসার পথে।না কোন এ্যাক্সিডেন্টের দেখা নাই। বাসার সামনে আসতেই ফুয়াদ দেখল, একটা ১২ বছরের কিশোরী ফুল বিক্রি করছে। ফুয়াদ মেয়েটিকে চিনতে পারল। ওর অপেক্ষায় ফুয়াদ এতক্ষন রাস্তায় দাড়িয়ে ছিল অথচ মেয়েটা এখানে।

ফুয়াদ মেয়েটির সব কটি ফুল কিনে নিল, মেয়েটিকে বলল, খিদে পেয়েছে ? হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল মেয়েটি। ফুয়াদ মেয়েটিকে তার বাসায় নিয়ে গেল। ভাত খেতে দিল। মেয়েটি অবাক নয় মোটেও। বলল, আমি জানি আপনি খাওয়া শেষে হলে আমাকে বিছানায় ডাকবেন। ফুয়াদের ভিষণ রাগ হলো। তবু চুপ থাকল। বাথরুমে ফ্রেশ হতে গেল। বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখল মেয়েটির মাটিতে পড়ে রয়েছে আর মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। বিষ খেলে যেমনটি হয়।

ফুয়াদের মনে পড়ে গেল, খাবারে বিষ মিশিয়ে রেখে গিয়েছিল বিড়াল মারার জন্য। একটা বিড়াল কয়েকদিন হতে খুব ঝামেলা করছে। তাকে মারার জন্য গতরাতের বাসি তরকারীতে বিষ মিশিয়ে রেখে বের হয়েছিল। তবে সারাদিনের ধকলে ভুলেই গিয়েছে যে তরকারীতে বিষ দেয়া ছিল। এই মেয়েটা কে না নিয়ে আসলে সে নিজেই খেয়ে ফেলত এই তরকারী দিয়ে ভাত। কারণ বেমালুম ভুলে গেছে সব। ‘‘আশ্চর্য! এত বড় একটা ব্যাপার কি করে ভুলে ছিলাম’’ নিজের মনকে ধিক্কার দিচ্ছে ফুয়াদ।

‘‘এখন এই মেয়ের লাশ নিয়ে কি করব?’’ এক অজানা ভয় ফুয়াদকে গ্রাস করে।

রাত ২টা ।

ফুয়াদদের রোডেই খালি একটা প্লট । আগামী 2বছরে এখানে কেউ কাজ করবে না বলে মনে হয়। বেলচা দিয়ে যতদূর সম্ভব নিঃশব্দে কবর খোঁড়ে । আলতো করে শুইয়ে দেয় মেয়েটাকে ।

এখানেই পুরো ঝামেলা শেষ হতে পারত – কিন্তু শেষ হওয়ার পরিবর্তে বেড়েই চলল তা । কোন কিছুতেই স্বস্তি পায় না ফুয়াদ। বার বার মনে হয় ওর আশেপাশে মেয়েটি ঘুরছে। সে তাকে খুন করেছে। মেয়েটির নিরব ভাবলেশহীন চোখ জোড়া মনে ভাসে ফুয়াদের।

ড. আহমদ সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টাল হেড । বাংলাদেশের সেরা সাইক্রিয়াস্টিকদের মধ্যে অন্যতম । আহমদ নাম দেখেও সেখানেই যায় ফুয়াদ। সব শুনে ডাঃ আহমদ তাকে আশ্বাস দেন যে, পুরোটাই তার কল্পনা। কল্পনায় অনেক সময় এমন মনে হয় যে এই ঘটনা আগে একবার ঘটেছে বা সে দেখেছে। এই রোগকে বলে অডিটরী হেলুসিনেশন। এই রোগের অনেক লক্ষনের মধ্যে একটা হলো –

রোগী মনে করে সে স্বপ্নের মধ্যে বিশেষ ক্ষমতা পেয়েছে, তাকে বাহিরে থেকে কেউ নিয়ন্ত্রন করছে, রোগী মনে করে সে চাইলে অনেক অপরাধ দমন করতে পারবে, সে অনেক কিছু দেখতে পায় আগে থেকে ইত্যাদি ইত্যাদি।

ডঃ আহমদ ফুয়াদকে আশ্বস্ত করল আসলে তেমন কিছুই ঘটেনি যা আপনি ভাবছেন। আপনি নিশ্চিন্ত হয়ে বাসায় যান। আর প্রেসক্রিপশন ফলো করুন। চলুন আমি আপনার সাথে আপনার বাসায় যাব।

ডঃ আহমদ ফুয়াদের সাথে তার বাসায় আসে। গেটে দারোয়ানকে প্রশ্ন করে ‘‘ দারোয়ান ভাই বাসায় কি খুব বিড়ালের উৎপাত? । দারোয়ান অপরিচিত মানুষের মুখে হঠাৎ এমন প্রশ্নে হকচকিয়ে যায়, পরক্ষনেই আবার বলে। নাহ! নাতো। আমি 2 বছর হলো আছি এখানে কখনো কোন বিড়াল দেখিনি এই বাসায়। বাড়ি আলা খুব খুতখুতে মানুষ।তার প্রাণীতে এ্যালার্জী আছে, সকল ভাড়াটিয়াকে ভাড়া দেয়ার একটাই শর্ দেয়, কোন প্রকার প্রাণী পোষা যাবে না। আর আমাকে নিয়োগের সময় বার বার সতর্ করা আছে ‘‘বাসায় চোর ঢুকলেও ক্ষমা পাবা তবে কুকুর বিড়াল ঢুকলে ক্ষমা পাবা না’’।

দারোয়ানের কথা শুনে ডঃ আহমদ হাসতে হাসতে ফুয়াদ কে শুনালো। শুনলেনতো ? এ বাড়িতে বিড়ালই আসে না আর আপনি বিড়াল মারার বিষ দিয়ে ছিলেন ! হা হা হা !

নিজের হাসি নিজের কানেই হঠাৎ বেসুরে লাগল। তারপর আবার ফুয়াদের নিস্পলক ঠাণ্ডা দৃষ্টি।

সে রাতে নিজেকে সত্য প্রমান করতে ডঃ আহমদ রাত 2টা নাগাদ সেই খালি প্লটে আসে চুপি চুপি। অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজের হাসিকে টিকিয়ে রাখতে বদ্ধ পরিপক্ক ডাঃ আহমদ বেলচা দিয়ে মাটি খুঁড়তে লাগল, হঠাৎ বেলচাতে নরম কিছু একটা ঠেকতেই চমকে গেল ডঃ আহমদ ………।

Related Posts

22 Comments

মন্তব্য করুন