রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে ভ্রমন।

ভ্রমন সবসময়ই আনন্দের হয়। তাই মানুষ সময় পেলেই ভ্রমনে বের হয়। আমার অবস্থাও একই।ছোট বেলা থেকেই আমার ভ্রমনের প্রতি প্রচুর ঝোক  

প্রতি বছরই আমরা সাধারণত কোননা কোন জায়গা বেড়াতে যায়।এবার আমরা বেড়াতে গিয়েছিলাম এমন এক জায়গায় যেখানে লোকজন খুব একটা বেড়াতে যায় না। আর জায়গাটি ঐতিহাসিক বা কোন পার্কও না।জায়গাটির আশপাশের প্রায় ৫০০ মিটারের মধ্যে কোন বাড়িঘর নাই।এটি বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় একে বোরিন বলে।

জায়গাটি আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১৫ কি.মি. দূরে।প্রায় ১কি.মি. পরেএকটি নদী আছে।নদী পার হয়ে সেখানে যেতে যেকোন গাড়িতে ২০ টাকা ভাড়া নেই।জায়গাটি মাঠ অঞ্চল।এখন আপনাদের প্রশ্ন জাগতে পারে যে,আমরা কেন এমন একটা জায়গা ভ্রমনের জন্য বাছাই করলাম,যা খুব একটা বিখ্যাতও না আবার বাড়ি থেকে অনেক দূরে?এর কারণ হলো এখানে আমার দাদার কিছু জমি আছে।এসব জমি দাদা কিংবা দাদার বাবার সময়ে কেনা হয়েছিল।

আপনারা হয়ত ভাবছেন এত দূরে জমি কেনার কি প্রয়োজন?বাড়ির আশপাশের জমি কিনলেই তো হয়। হ্যা বাড়ির আশপাশেও আমাদের ফসলি জমি আছে।তবে আমার  দাদাদের সময়ে প্রতিবছর আমাদের এলাকায় বন্যার প্রাদুর্ভাব ঘটত।আর ফসল সব ডুবে যেত।তাই তারা তাই তারা সেখানে জমি কিনত।সেখানকার জমিগুলো তুলনামূলক উঁচু ছিল,তাই ডুবত না।তবে এখন আর বন্যা হয়না।কেননা তখন যেসব যায়গা দিয়ে নদীর জল এলাকায় প্রবেশ করত তাতে এখন বাঁধ দেওয়া হয়েছে।শুধু আমাদেরই না প্রতিবেশীদের মধ্যে অনেকেরই সেখানে জমি আছে।

আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করি সকাল ১০:৩৫ মিনিটে।প্রথমে আমরা একটা গাড়ি ভাড়া করে নদী পর্যন্ত যায়।তারপর নৌকায় করে পার হলাম।অতঃপর একটা গাড়ি ভাড়া করলাম এবং তাতে চড়ে আমরা পথ চলতে শুরু করলাম।অবশেষে আমরা সেই বরেন্দ্র ভূমিতে পৌঁছলাম প্রায় এক ঘন্টা পর।প্রথমে আমরা লোকালয়ে নামলাম। গাড়ির ভাড়া মিটিয়ে হাটতে লাগলাম।সেখানে বাংলাদেশের এক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাওতালরা বসবাস করে ।আমরা কয়েকজন সাঁওতালের বাড়ি ঘুরে দেখলাম। তাদের মাটির বাড়ি।কারো আবার মাটির দোতলা বাড়ি।তাদের বাড়িতে নানারকম কারুকার্য করা রয়েছে।তারা এসব বরেন্দ্র ভূমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে।

তারপর আমরা জমিতে গেলাম,যা সাঁতার বাড়ি থেকে হাফ কিলোমিটার দূরে।আমরা মাঠের মাঝের একটি ঘরের পাশে বসে দুপুরের খাবার খেলাম।খাবার বাড়ি থেকেই নিয়ে এসেছিলাম।বিরিয়ানি। আমরা দেখলাম চারদিকে সবই ফসলি জমি।এই বরেন্দ্র ভূমির মধ্যে সবচেয়ে যেটি মুগ্ধকর তা হচ্ছে এখানকার উঁচু-নিচু ভূমি।কিছুদূর পর দেখলাম একটা পেয়ারা বাগান রয়েছে।আরো কিছুক্ষণ ঘোরার পর আমরা বাড়ির পথে রওনা দিলাম।

বলে রাখা ভাল যে আমরা ছিলাম ১১ জন।গাড়িতে কিছুদূর আসার পর এক আত্মীয়ের বাড়িতে গেলাম।তাদের বাড়িতে কিছুক্ষণ থাকলাম।অনেকদিনের জমে থাকা সেয়ার করলাম।তারপর বাড়ি চলে আসলাম।

Related Posts

21 Comments

মন্তব্য করুন