বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
অভিনতা আনোয়ার হোসেনঃ
বাংলা চলচিত্রের কিংবদন্তী ও বাংলা চলচিত্রের নবাব খ্যাত বিশিষ্ট অভিনেতা আনোয়ার হোসেন যিনি ৫ সন্তানের জনক ছিলেন। তার এক ছেলে তার পরিবারসহ থাকেন সুইডেনে। বাকী তিনজন ছেলে ও একজন মেয়ে তাদের পরিবারসহ থাকেন আমেরিকায়। জীবনে তিনি যত টাকা আয় করেছেন তার সিংহ ভাগ টাকাই খরচ করেছেন তার আদরের সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। নিজের পেটের তাগিদে ও সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জীবনের শেষ বয়স পর্যন্ত চলচিত্রে করেছেন চাকর-বাকরের অভিনয়। কিন্তু, কি ভাগ্য তার! মৃত্যুর সময় একটা ছেলে মেয়েতো কাছে আসা দুরের কথা, বাবাকে শেষ দেখা দেখতে দেশেও আসেননি।
বিশিষ্ট কবি আল মাহমুদঃ
বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে এক বিশেষ নাম কবি আল মাহমুদ। তিনি দুই সন্তানের জনক। সন্তানরা আজ প্রতিষ্ঠিত। সন্তানদের সুউচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য অর্থাভাবে নিজের সাজানো গোছানো বনানীর বাড়িটি বিক্রী করে দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিদেশ পাঠান দুই ছেলেকে। এ যাওয়াই ছিলো সন্তানদের শেষ যাওয়া। তার সেই আদরের সন্তানেরা আর দেশে ফিরে আসেনি। এক সময় সব হারিয়ে কবি আল মাহমুদ অসুস্থ হয়ে নিজের গ্রামের বাড়ীতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ঐ সময় তার দেখাশুনার মতো তার পাশে কেউ ছিলো না। এমনি এক ভরাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি চলে যান না ফেরার দেশে।
বিশ্লেষণঃ
সন্তান যদি মেধাবী হয় তবে পৃথিবীর কেনো বাবা মা তাদের সন্তানের জন্য টাকা পয়সা মেধা শ্রম ব্যয় করতে এতটুকুও পিছপা হননা। সারা জীবনের কামাই সব উজার করে দেয় সন্তানের কল্যানার্থে। অথচ এই সন্তানের যখন বড় ও প্রতিষ্ঠিত হয় ও ভালে একটা অবস্থান তৈরি করে নেয় তখন আর মা বাবার খোঁজ রাখেনা। মৃত্যুর সময়ও তারা সন্তানের শেষ দেখা পায়না। সন্তানরাও আসেনা।
আজকাল যখন আপনি বৃদ্ধাশ্রমের দিকে তাকাবেন তখন দেখবেন বেশির ভাগ উচ্চ শিক্ষিত ব্যাক্তি, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, নামকরা ডাক্তার, সচিবও ইঞ্জিনিয়ারের মা -বাবার আসল স্থান হয় বৃদ্ধাশ্রমে। যদি কারও বিশ্বাস করতে এতটুকু কষ্ট হয় তাহলে বলবো বৃদ্ধাশ্রমগুলি ঘুরে দেখে আসুন বাস্তবতার প্রমান পাবেন।
তাই আমি বলতে চাই শুধু শিক্ষা অর্জন করাটাই একজন মানুষের জন্য মুখ্য বিষয় নয় বরং মানুষের মতো মানুষ ও বিনয়ী হওয়াই শিক্ষা অর্জনের মূল বিষয় হওয়া উচিত।
শিক্ষাঃ
এসব দেখে কোরআনের সেই বানীটি বারবার মনে পরে যায়- স্ত্রী সন্তান এমনকি ধন সম্পদ কোন কাজের নয়!