আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি। আজকের বিষয়ঃ শিমুল গাছের মূলের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম। তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
শিমুল গাছের মূলের উপকারিতা
শিমুলের মূলকে একটি কার্যকরী ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমাদের মধ্যে প্রায় সবাইই শিমুল গাছ চিনি। এর অপর নাম বোম্বাক্স। একে ইংরেজিতে ‘Silk Cotton’ বলে। এটি পশ্চিম আফ্রিকা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও উত্তর অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশের জন্য স্থানীয় একটি গাছ। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া, চীন, তাইওয়ান এবং হংকং এ ব্যাপকভাবে এই গাছের চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশের সব স্থানেও এই গাছ পাওয়া যায়। শিমুল গাছের উচ্চতা ১০ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। কান্ডের চারপাশে শাখা প্রশাখা থাকে। গাছের গায়ে কাটা থাকে তবে গাছ বয়স্ক হয়ে গেলে আর কাটা থাকে না। শীতের শেষের দিকে সব পাতা ঝরে যায়। ফাল্গুন নাসের মধ্যে ফুল ফোটে। চৈত্র কিংবা বৈশাখ মাসে ফুল ফেটে শিমুল তুলা বেরিয়ে আসে।
এখন এর গুণাগুণ ও উপকারিতা নিয়ে কথা বলা যাক। শিমুল গাছের মূলের উপকারিতা
শিমুল গাছ (মূল) অনেক উপকারী ও কার্যকরী একটি ওষুধ। এর ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক নাম হচ্ছে সেম্ভল। এটিকে বিভিন্ন রোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে এটিকে বিভিন্ন শারীরীক দুর্বলতার প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। শিমুল গাছের কুসুম, গুল্ম থেকে সনাতনী প্রথায় রস বের করে গায়ে দিয়ে ভাল ফল পাওয়া যেত। একসময় এগুলো গুটিবসন্তের প্রতিরোধক হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। এর ছাল ঘা সারতে সহায়তা করে।
এটিকে পুরুষের যৌ…ন শক্তি বৃদ্ধির উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শিমুল মূল পুরুষের শুক্রাণু বৃদ্ধি করে ও দীর্ঘদিন যৌবন ধরে রাখে বলে মনে করা হয়৷ এই মূল চূর্ণ করে খেলে শুক্রাণু বেড়ে যায় এবং সন্তান হওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি পায়। যেসকল পুরুষদের সহবাসে সমস্যা হয় অর্থাৎ বেশিক্ষণ টিকতে পারেনা তাদের শিমুল মূল খেলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। অনেকেই রক্ত আমাশয়ে ভুগে থাকি। আর এই রক্ত আমাশয় থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য শিমুল মূল অত্যন্ত উপকারী। ফোরার ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে হলে শিমুল মূল এক মহৌষধ। এটি উদরাময় ও মেছতা রোগ থেকে রক্ষা করে। অনেক সময় নারীদের অতিরিক্ত রক্তস্রাব্য হয়। এক্ষেত্রেও শিমুল মূল কার্যকর।
শিমুল গাছের মূল খাওয়ার নিয়ম
বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে শিমুল মূল বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতে হয়। কিছুক্ষেত্রে কম লাগে, কিছুক্ষেত্রে বেশি লাগে আবার কিছু ক্ষেত্রে মূল চূর্ণের সাথে অন্য কিছু মিলিয়ে খেতে হয়।
শারীরিক ও যৌ…ন সমস্যার ক্ষেত্রেঃ শারীরীক ও যৌ….ন দুর্বলতার জন্য প্রতিদিন শিমুল মূল ৭ থেকে ১২ গ্রাম গ্রহণ করতে হবে। সাথে সমপরিমাণ চিনি দিতে হবে। চাইলে সঙ্গে মধু মিশিয়েও খাওয়া যায়। প্রতিদিন কমপক্ষে একবার ও সর্বোচ্চ দুইবার খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। স.হ..বা..সে সমস্যার ক্ষেত্রে শিমুল মূলের সাথে তেতুল বীজের গুড়া ও অর্শ্বগন্ধা খেলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।
রক্ত আমাশয়ঃ রক্ত আমাশয় থেকে পরিত্রাণের জন্য শিমুল মূলের চূর্ণ খেতে হবে সঙ্গে ছাগলের দুধ পান করতে হবে।
এরকম কয়েকদিন খেলে আমাশয় সেরে যাবে।
ফোরাঃ ফোরার জন্য শিমুল মূল সরাসরি খেতে হবে না। এই মূল ছেচে ক্ষত স্থানে লাগাতে হবে। এটি করলে খুব দ্রুত ফোরা ঠিক হয়ে যাবে।
রক্তস্রাব্যঃ দিনে এক থেকে দুই গ্রাম শিমুল ও তার সাথে সমপরিমাণ চিনি দিয়ে ক্ষেতে হবে এবং সঙ্গে দুধ পান করলে আরো ভালো হবে। প্রতিদিন দুইবার খেলে অতিরিক্ত রক্তস্রাব্য কিছুটা দমন হবে।
তো আজকের জন্য এতটুকুই (শিমুল গাছের মূলের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম)। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।