” শিশু মন জাতীয় পদ্মফুল “

মাটির ভেতরে লুকিয়ে থাকা বীজ থেকে শিশু উদ্ভিদ যে ,জন্ম নেয় সেও খুব উদগ্রীব হয় উন্মুক্ত পরিবেশে আত্ম প্রকাশ করতে।শিশু উদ্ভিদগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা সৃষ্টি হয়। প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে যে, কে কার আগে আপন শাখা প্রশাখার বিস্তারণ ঘটাতে পেড়ে ভূমির বুকে বিস্তৃতি লাভ করবে!সফলভাবে পৃথিবীতে ঐতিহ্য ও অস্তিত্বের ফসল আবাদ করে মুক্ত মনে বিচরণ করবে। ঠিক তেমন-ই ভাবে মানব প্রকৃতির পদ্ম বীজ শিশু জন্মগত ভাবেই মহান সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে স্বপ্নচারী এবং দায়িত্বশীল ও কর্তব্যপরায়ন হয়ে জঙ্গলাকৃতির এই পৃথিবীতে জন্ম লাভ করে।

আশরাফুল মাখলুকত তথা সৃষ্টির সেরা জীব
মানব প্রকৃতির পদ্মবীজ যাদের জ্ঞান ,বিবেক ,বুদ্ধি ও সৃষ্টির রহস্য উন্মোচন করার গভীর হেকমত ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য সহকারে এপৃথিবীতে প্রেরণ মহান রাব্বুল আলামিন প্রেরন করেন।বিশেষ ভালোবাসা ও স্বয়ং ইচ্ছা এবং আগ্রহে। তাই মানব প্রকৃতির এ সৃষ্টি হয়ে থাকে সর্বোৎকৃষ্ট উদ্যমী ।
পৃথিবী আবাদ করার জন্য তার আত্মপ্রকাশ। কেননা আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি মানব সন্তানকে প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব সহকারে প্রেরণ করেন।এবং মহানবী( স) বলেন প্রতিটি মানব শিশু ফিতরতের বা, ইসলামের উপরে জন্ম লাভ করে।আর পিতা মাতাই তাকে ধার্মিক তথা আস্তিক বা নাস্তিক বানায় ,ন্যায় পরায়ণ ,আস্তিক কিংবা নাস্তিক হিসেবে গড়ে তুলে।

পাতার মত করে বেড়ে ওঠা শিশুকে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার ভিতরে সুন্দর স্বপ্ন , চিন্তন দক্ষতা ,এবং কোন বিষয়ে শিশুর মধ্যে উদ্যোগ এবং ইচ্ছা শক্তি ভালো সেটা বিবেচনা করে ধাপে ধাপে সে পথে তাকে এগিয়ে দিতে হব। যদিও সে শিশু। কারণ তার ভেতরে থাকা সুপ্ত প্রতিভার মাঝে রয়েছে বৃহৎ জাতি গোষ্ঠীর মহৎ সম্ভাবনাময় প্রত্যাশা।
জাতীয় চেতনার বাস্তবায়ন এবং অপরিসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণের লক্ষদৃষ্টি। তাইতো বলি -লক্ষ আশা-লক্ষের হাসা* আজকে শিশুর অন্তরে ,আজকে শিশুর অন্তরে ,নেই হতাশা- চাই প্রত্যাশা নেই হতাশা- চাই প্রত্যাশা ,সকল শিশুর মন্তরে।

শিশুর মন মস্তিষ্ক পদ্ম ফুলের মতো। এবং তার চোখ ফুলের পাপড়ির মতো।ফুলের কুঁড়ি যেমন কোমল , শিশুদের স্পর্শ আর দর্শনও সেরকম প্রেমময় ও স্নেহ ভরা মায়াময়। শৈশব থেকে হয়ে উঠে মিশুক। তবে সে মেশে কেবল সুন্দরের সাথে। মননশীল চিত্তাকর্ষক মূলক কর্মকান্ডের কাছে।তাই শিশুকে সঙ্গ দিতে হবে তার মত করে,শিশু সুলভ আচরণের মাধ্যমে,এবং তাদের কাছে সুন্দর লাগে, প্রিয় ও পছন্দনীয় হতে পারে এমন সব বস্তু দিয়ে শিশু মন জয় করতে হবে। পিতা মাতা শিশুর একমাত্র ভরসা বল। তাই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার আলোকে ধাপে ধাপে শিশুর তাকে এগিয়ে দিতে হব। মেধা ,মননশীলতা ,চিন্তন দক্ষতা ,এবং তার প্রতিভা বিকাশের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করার মহান দায়িত্ব পিতা মাতারই।বিস্মায়নের এ যুগে যদিও অনেক বাবা ,মা উভয়ই কর্মরত থাকেন।ফলশ্রুতিতে শিশুকে সময় ও সঙ্গ দিতে না পারায় জাতিসংঘ শিশু অধীকার আইনে ১৮ বছর শৈশব পার না হতেই অনেক শিশু সমাজদ্রোহী ,এবং ধর্মদ্রোহী ধ্বংসাত্মক জঘন্য কাজে অকালে ঝরে পড়ে। এহেন ঝরে পড়ার অভিশপ্ত থেকে তাকে শৈশবেই তথ্যনির্ভর কর্মমুখী শিক্ষার পাশাপাশি শিষ্টাচার ও আচরণবিধি শিক্ষা দেয়া প্রত্যেক বাবা মায়ের উপর একান্তই অত্যাবশ্যক।

শৈশবেই তাকে আদর্শ স্বপ্ন শিক্ষা দেয়ার উপযুক্ত সময়।আর এ বয়সে ই বড় হওয়ার শখ তাদের প্রবল।তাই বড় ও মহৎ স্বপ্নগুলো শিক্ষা দিতে হবে। কেননা “মানুষ স্বপ্নের মাধ্যমে স্বপ্ন দেখতে শেখে।ভাবতে হবে
– ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা,সব শিশুদের অন্তরে “
অতএব ,ভবিষ্যতের প্রত্যাশিত পিতা যেন আপনার থেকে বড় হয়। সফলতার অভীষ্ট লক্ষে পৌছাতে পিতা মাতা এবং দায়িত্বশীল অভিভাবকেই শিশুকে স্বপ্ন দেখানো শিখাতে হয়। যেহেতু পরিবার, সমাজ, এবং রাষ্ট্রের জন্য আজকের শিশুই মূল্যবান একটি সম্পদ।

ভবিষ্যতকে ঢেলে সাজানো , পৃথিবীর সম্পদ সংরক্ষণ এবং প্রজন্মকে সুন্দর ও নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তার মূল উপকরণ এই শিশুটির মাঝে পুষ্পবদ্ধমূল। বীজ যেমন উদ্ভিদ জগতের ধারক ও বাহক। শিশু তেমন। সুন্দর কল্যান ও যুগোপযোগী ফসল উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। তবে প্রতিটি জিনিসের সহনীয় পর্যায় রয়েছে কোমলমতি শিশুর বয়স ,শারীরিক ও মানসিক অবস্থা চিন্তা করাও জরুরি। অতি আবেগ প্রবণ হয়ে শিশুর অন্তর্জগৎ পরিশুদ্ধ করণের উপর এমন না হয় ,শিশু মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে আপনার আকাশ কুসুম স্বপ্নগুলো চির অধরাই থেকে যায়।সোনামণি হারিয়ে না ফেলে উজ্জল ভভিষ্যৎ।

“আজকের শিশু আগামীর সুর্য”
মুহা. কবির হোসেন

শিশু মন পদ্মফুল মাতৃ ক্রোরে বাড়ে
আদর স্নেহ সোহাগ দিয়ে শিশু বড় করে।
মাতৃগর্ভ ছিল শিশুর বিকাশ এক জগৎ
নিরাপদে সেথায় ছিল ভীতিহীন মহৎ।

ধরাপৃষ্ঠে যবে শিশু দেখে সবার মুখ
রোগ শোক ভয় হতাশায় বাড়ে তাহার দুঃখ।
শিশু হতে বিকাশ পথে ধিরে ধিরে বেড়ে
বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এই বিশ্ব মাজারে।

স্নেহ প্রীতি ভালোবাসা যেথায় শিশু পায়
দৌড়ে গিয়ে শিশু তথায় আপন মত বিলায়।
স্কুল জীবন এলে শিশুর সঙ্গ সাথী মিলে
ভয় আতঙ্ক স্যারের কাছে অপরিচিত বলে।

জয় করলে ভয় সফল শিশু জানে না ভবিষ্যৎ
আকাঙ্ক্ষিত জীবন তাহার কত বড় সুমহৎ!
স্বপ্ন আশা প্রেম ভালোবাসায় তাই শিশুরে গড়ো
তবেই শিশু সগৌরবে হবে মহৎ বড়ো।

কুহক অর্থে শ্রমের ভার দিওনা শিশুর কাঁধে
পদ্মাবতী শিশু তবে ঝরবে ধ্বংসের ফাঁদে।
আজকের শিশু আগামীর সুর্য লক্ষ্য পৃথিবীর প্রাণ
আলোয়ে আলোক দেখবো তারে স্বমহিমায় কীর্তিমান।

হিত কথা :
” তুমি কত বড় মানুষ তার পরিচয় মানে নয়, মনুষ্যত্বে।”
মুহা. কবির হোসেন

Related Posts

21 Comments

মন্তব্য করুন