শুধু অনুবাদ করেই প্রতি মাসে উপার্জন করুন ১৫০০০-২০০০০ টাকা

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ। সুপ্রিয় পাঞ্জপাঠকবৃন্দ। সবাই কেমন আছেন। সবাই আশা করি ভাল আছেন সুস্থ আছেন এবং ঘরে নিরাপদভাবে অবস্থান করছেন। আজ আমি আপনাদেরকে খুবই ভালো একটি বিষয় শেয়ার করব।

আমরা বাঙালি, বাংলাদেশি। আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। বিশেষ প্রয়োজনে মাতৃভাষা ছাড়াও পৃথিবীর আরও অনেক ভাষার জ্ঞান অর্জন করতে হয়। যেমন, ইংরেজি ভাষা সারাবিশ্বেই অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক গবেষণামূলক কাজ, সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের কাজ বা শিক্ষাগত কাজের জন্য আমাদের অন্যান্য ভাষা শিখতে হয়। অফিসিয়াল কাজে অনবাদের এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।

অনুবাদের কাজ অনেক রকমের হয়। যেমনঃ দলিল, বই, হলফনামা, ডকুমেন্ট ইত্যাদি। এগুলো এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করতে হয়। এই ভাষাগত অনুবাদের ধরন প্রতিষ্ঠানভেদে পলিসি অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। অর্থাৎ, যেকোনো ভাষাতেই অনুবাদ করতে হতে পারে। আজ আলোচনা করছি ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদের বিষয়ে।

এক পৃষ্ঠা পরিমান লেখা যে কোন ভাষায় অনুবাদের জন্য শব্দসংখ্যা ও আর্টিকেলের মানের উপর ১০০ টাকা বা হাজার টাকাও পেতে পারেন। অনুবাদকের কাজ হলো একটি স্বাধীন পেশা। আমরা বিদেশি ভাষা থেকে অনুবাদ করা যে বইগুলো পড়ি তা কোনো না লেখক অনুবাদ করে দেন।

সব লেখকের অনুবাদ জনপ্রিয় হয় না। কারনটি হলো শব্দের অর্থের প্রকাশভঙ্গি। অনুবাদের সময় হুবহু অর্থ করলে অনেক সময় তার সঠিক অর্থ প্রকাশ পায় না। তাই অনুবাদের সময় ভাষার নিয়ম, শব্দ, বাক্য এবং প্রয়োগের উপর বিশেষ নজর দিতে হয়। মনে রাখতে হবে, পাঠক সহজ ও প্রাঞ্জলতা পছন্দ করে।

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য অনুবাদ করেন তাহলে প্রথমে নিজের দক্ষতা বাড়াতে হবে। অনুবাদ করে যদি টাকা আয় করতে চান তাহলে আজকের লেখাটি আপনার দারুনভাবে কাজে আসবে। কারন এখানে পাবেন অনুবাদ করার কিছু সঠিক টিপস। চলুন আর দেরী না করে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।

১। মাতৃভাষা ছাড়াও অন্যান্য ভাষা শেখাঃ

যে যে ভাষায় আপনি অনুবাদ করতে চাচ্ছেন সেই ভাষাগুলো প্রথমে ভালোভাবে শিখে নিবেন। ভাষা শিখার জন্য আমাদের দেশেই বিভিন্ন ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, অনলাইন ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে সেগুলোতে যেতে পারেন। বিভিন্ন দেশের ভাষা শেখার বইও এখন বাজারে পাওয়া যায় সেখান থেকে নিজে নিজেই শিখতে পারেন। বিভিন্ন ভাষার উপর দখল থাকলে তা আপনাকে অনুবাদ করতে সাহায্য করবে।

২। মূল বিষয়টি প্রথমে বুঝে নেয়াঃ

দ্বিতীয়ত, আপনি যে বইটি থেকে অনুবাদ করতে চাচ্ছেন সেটিকে আগে বার বার নিজে পড়ুন ও পুরো ধারনাটি ভালভাবে আয়ত্ত করে নিন। বার বার পড়ে বিষয়টি নিজের ভাষায় বুঝে অনুবাদ শুরু করুন। নিজের ভাষায় এমনভাবে বুঝে নিন যাতে বিষয়টি অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় অন্যের ভাষায় বলতে পারেন।অনুবাদের বেলায় বিষয়টি এমনভাবে উপস্থাপন করুন যেভাবে আপনি আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে গল্প করেন।

৩। সরাসরি বা কোনো ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে অনুবাদ না করাঃ

আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে, হুবহু অনুবাদ না করলে হয়তো অনুবাদের অর্থ পরিবর্তন হয়ে যাবে অথবা, বিষয়বস্তু অন্যরকম হয়ে যাবে।কিন্তু না, বিষয়টি এরকম নয়। মূল তথ্য ঠিক রেখে বাক্যে কিছু বিশেষন বা মূল শব্দের বিকল্প কোনো সহজ সমার্থক শব্দের ব্যবহার করবেন। এতে পাঠকরা সহজে বুঝতে পারবে। সম্পূর্ণ নিজের ভাষায় কিছু বিশেষন যোগ করুন। যে বিশেষণটও শুনতে ও পড়তে ভাল লাগে সেটিই দিন। এতে বাক্যের ভাব ঠিক থাকবে। এটাকেই বলা হয় মূলভাব ঠিক রেখে অনুবাদ।

৪। কঠিন শব্দ ব্যবহার করবেন না।

অনেকেই আছেন যারা ব্যাকরন দেখে শব্দ প্রয়োগ করেন। পাঠকদের বুঝতে পারার সুবিধার্থে ব্যকরনের কঠিন শব্দ বাদ দিন। সবাই যাতে বুঝতে পারে এমন শব্দ ব্যবহার করুন।

৫। অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দিয়ে লিখুনঃ

আপনি একটি ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করছেন সেটি মাথায় রাখবেন। অনেক সময় আছে যখন অনুবাদে করতে পুরো বর্ননার প্রয়োজন নেই। কোন অংশটুকু বাদ দিলে পুরো গল্পটা ঠিক থাকবে সেটা আপনি বার বার পড়লেই বুঝতে পারবেন।

৬। গল্পের ভঙ্গিতে অনুবাদ লিখুনঃ

পাঠকের পড়ার আকর্ষণের দিকে খেয়াল রাখবেন। আপনি আপনার বন্ধুদের বা উপস্থিত জনতার সামনে যেভাবে গল্প বলেন ঠিক সেভাবেই লিখবেন। তাহলে খেয়াল করবেন আপনার অনুবাদ পড়তে গিয়ে পাঠকের কাছে একটি সাবলীল গল্পের মত মনে হবে। আর তখনি পাঠক এটাকে আরও আগ্রহের সাথে পড়বে।

৭। সুস্পষ্ট উদাহরন ব্যবহার করে লিখুনঃ

যে ভাষা থেকে অনুবাদ করবেন সে ভাষায় থাকা উদাহরণের অংশটি বাদ দেবেন না। নিজে লেখার বিষয়বস্তুটি আগে ভালোভাবে বুঝে নিজের মতো করে বাড়তি উদাহরণও দিতে পারেন। তবে তা অবশ্যই বিষয়বস্তুর সাথে মিল থাকতে হবে। মনে রাখবেন, উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বললে পাঠকরা কঠিন বিষয়ও সহজে বুঝে নিতে পারে।

৮। বানান শুদ্ধির দিকে নজর রাখুনঃ

বানানে একটু এদিক সেদিক হলে যেমন শব্দের অর্থ বদলে যায় তেমনি বানান ভুলও হয়ে যাওয়ার সম্ভাআনা থাকে। তাই বানান শুদ্ধির দিকে নজর দিন। ভুল বানানে লেখাকে রুচিশীল পাঠকেরা নিম্নমানের মনে করে। তাই বানানের বিষয়ে বেশি সতর্ক থাকুন।

৯। গবেষনা চালিয়ে যানঃ

অনুবাদ করতে হলে প্রচুর অনুবাদের বই পড়তে হবে ও গবেষনা করতে হবে৷ পাঠকের বুঝার সক্ষমতা আছে এমন বাক্য গঠন করুন। এ সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জনে গবেষণা চালিয়ে যান। এতে আপনার জ্ঞান যেমন বাড়বে তেমনি অনুবাদের বিষয়ে আপনি আরও অভিজ্ঞ হবেন।

শেষ কথাঃ

অনুবাদ নিঃসন্দেহে একটি জনপ্রিয় পেশা।বর্তমানে অনুবাদ করে অনলাইনে আয় করার সুযোগ রয়েছে। অনুবাদে দক্ষতা থাকলে আর্টিকেল রাইটিংয়ের জন্য বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল, মিডিয়া, সরকারী দপ্তরসহ আরও বিভিন্ন কোম্পানিতে ভাল চাকরিরও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে যেখানে আপনি নিজের স্বাধীনতায় কাজ করতে পারবেন। প্রথম দিকে কম হলেও অভিজ্ঞ হয়ে গেলে লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। তাই এ পেশাকে সম্মানের সাথে গুরুত্ব দিন।

আশা করি, আজকের এই পোস্টটি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। অনুবাদ করে অর্থ আয় করার ক্ষেত্রে অনেক উপকারে আসবে আজকের এই পোস্টটি। প্রিয় পাঠক, আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়ার জন্য। পোস্টটি আপনাদের ভাল লাগলে শেয়ার করতে পারেন। নতুন আরো চমকপ্রদ টিপস এবং আইডিয়া নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব ইনশাল্লাহ। সেই পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন।

সকলে করোণাকালীন সময়ে অবশ্যই হ্যন্ডস্যানেটাইজার এবং মাষ্ক ব্যাবহার করবেন,,নিজে সুস্থ থাকুন,,পরিবারকে সুস্থ রাখুন,, আল্লাহ হাফেজ

Related Posts

15 Comments

মন্তব্য করুন