Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

শেষটা কি দেখে ফেললেন পূজারা?

চেতেশ্বর অরবিন্দ পূজারা। ক্রিকেট বিশ্ব যাকে চেতেশ্বর পূজারা নামেই চিনে থাকে। ভারতীয় টেস্ট ব্যাটিং লাইনআপের অন্যতম স্তম্ভ। টেস্ট ফরম্যাটে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের তিন নম্বর পজিশন টা বহুদিন ধরেই যিনি সামলে আসছেন।       ২০১০ সালে বেঙ্গালুরুতে অষ্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষিক্ত হন পূজারা। কিন্তু তখন দলে জায়গা পাকা করতে পারেননি। এক ফিফটিতে ২ টেস্টে ৪ ইনিংসে ২৬ গড়ে ১০৫ রান করার পর দলে থেকে বাদ পড়েন তিনি।

বিশ্ব ক্রিকেটে পূজারা নিজেকে চিনান ২০১২ সালে। সেই বছর টেস্ট দলে ফিরেই ৬ টেস্টের ১০ ইনিংসে অবিশ্বাস্য প্রায় ৮২ গড়ে করেন ৬৫৪ রান। যাতে ছিল ১ টি ডাবল সেঞ্চুরি আর ৩ টি সেঞ্চুরি। সেই থেকে এখন অবধি ভারতীয় টেস্ট দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ তিনি। কিন্ত সম্প্রতি দলে পূজারার জায়গাটা বড্ড নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। তার কারণ আর কিছুই নয়। ব্যাট হাতে পূজারার পারফরম্যান্স। এই বছর পূজারার রান ৩ টেস্টের ৬ ইনিংসে ১ ফিফটিতে মাত্র ১২৪। গড়টাও ২০ এর কিছু বেশি।

অবশ্য শুধু এই বছরেই নয়। পূজারার ব্যাটে যে রান নেই আরো আগে থেকেই। মূলত ২০২০ সাল থেকেই পূজারার খারাপ সময় শুরু। সেই বছর খেলা ৪ টেস্টের ৮ ইনিংসে ১ ফিফটিতে করেন মাত্র ১৬৩ রান। গড়টাও ছিল যাচ্ছেতাই। ২০ এর কিছুটা বেশি।

২০২১ সালে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও পূজারার নামের সাথে সেটাও যে বড্ড বেমানান। সেই বছর খেলা ১৪ টেস্টের ২৬ ইনিংসে ২৮ গড়ে ৬ ফিফটিতে ৭০২ রান করেন তিনি।পূজারার সর্বশেষ টেস্ট সেঞ্চুরিটা ছিল ২ বছর আগে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি । এরপরের খেলা আর কোনো ইনিংসে আর তিন অংকের রানের দেখা পাননি পূজারা। তাতে অবশ্য একটা অনাকাঙ্খিত রেকর্ডের মালিক হয়েছেন তিনি। ভারতীয়দের মধ্যে টানা টেস্টে সবচেয়ে বেশি ইনিংস সেঞ্চুরিবিহীন থাকার রেকর্ড টা যে এখন পূজারারই।

অবশ্য ২০১৯ সালের পর থেকেই ফর্ম খারাপ গেলেও দল জিততে থাকায় পূজারার দলে থাকা নিয়ে খুব একটা সমালোচনা হয়নি। যেটা হচ্ছে এই বছর। কেননা দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম টেস্ট জিতে এগিয়ে থেকে ও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে ভারত। অথচ কখনোই আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট সিরিজ না জেতা দলটির এই বারই ছিল জেতার সেরা সুযোগ। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা দলটি ছিল অনভিজ্ঞ। রাবাদা, বাভুমা, এলগার বাদে আফ্রিকা দলের বাকিদের টেস্ট অভিজ্ঞতা তেমন নেই বললেই চলে। এই আনকোরা দলের কাছে সিরিজ হারের পিছনে দায়ী করা হচ্ছে ভারতীয় ব্যাটিং দুর্বলতাকেই। বিশেষত পুজারা আর রাহানের রান না পাওয়াটাকে।

সদ্য সমাপ্ত দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের ৩ ম্যাচের ৬ ইনিংসে ১ ফিফটিতে ২০ এর সামান্য বেশি গড়ে ১২৪ রান। যেটা মোটেও পূজারার নামের সাথে যায়না।আর ইদানীং ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে পূজারার টেকনিকের দুর্বলতাও চোখে পড়ার মত। যেই পাকাপোক্ত ডিফেন্সিভ টেকনিকের জন্য পূজারার নামডাক তাতেই যেন বড়সড় ফাটল দেখা যাচ্ছে বিগত ২ বছরে। যার ফলাফল পূজারার এই ব্যাটের এই করূণ দশা।

ইতিমধ্যেই সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে সুনীল গাভাস্কারের মত কিংবদন্তী পূজারাকে টেস্ট দল থেকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছেন। সব মিলিয়ে ভারতের টেস্ট দল থেকে পূজারার বাদ পড়াটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

আর বাদ পড়লে যে ঘরোয়াতে পারফর্ম করলেই যে আবার টেস্ট দলে ফেরত আসতে পারবেন সেটাও জোর দিয়ে বলা যাচ্ছেনা। কারণ বয়সটাও যে পক্ষে নেই ৩৩ বছর বয়সী পূজারার। শতকোটির দেশের ক্রিকেট পাইপলাইনে এত এত প্রতিভা যে তরুণ কোন ব্যাটারকে ঘরোয়াতে সিজনের পর সিজন দারুণ পারফর্ম করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুযোগ পেতেই অনেক অপেক্ষা করতে হয়। সেখানে ৩৩ বছর বয়সী পূজারাকে নির্বাচকরা আবার টেস্ট দলে সুযোগ দিবেন কিনা ভবিষ্যতে সেটাও প্রশ্নসাপেক্ষ। কারণ ভারতের টেস্ট দলের রিজার্ভ বেঞ্চে শ্রেয়াস আয়ার, হনুমা বিহারীর মত প্রতিভাবান তরুণরা সুযোগের অপেক্ষায়।সব মিলিয়ে বলা যায়, আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষটা হয়ত দেখেই ফেললেন ৯৫ টেস্টে প্রায় ৪৪ গড়ে ৬৭১৩ রান করা চেতেশ্বর পূজারা।

Related Posts

39 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No