শৈশবে হাসিখুশি থাকা মানুষটি বড় হতে হতে এত কেন পরিবর্তন??

আমরা সকলেই ছোট বেলা তথা শৈশবে সবাই আনন্দে, হাসি খুশিতে দিনযাপণ করি। বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে ঘুরাফেরা করি। কারো মনে কোন অবহেলা অবজ্ঞা থাকে না। সবাই তখন শুধু ভালবাসাটাই বুঝি। তখন আমাদের মনে হয় পৃথিবীর থেকে সুখের যায়গা বুঝি আর কোথাও নেই। অথচ আমরা বর্তমানে বড় হতে হতে নিজের মাঝে কতটা পরিবর্তন লক্ষ্য করি। বড় হতে হতে আমাদের মনে অন্যের প্রতি শুধু রাগ , ঘৃণা, জেদ, তিরস্কার ছাড়া আর কিছুই থাকে না। তখন আমি ভাবতাম এমনটি আসলে কেন হয়? তার উত্তর পেতে অবশ্য বেশি দেরী হয়নি যখন একই ঘটনা আমার সাথেও ঘটেছে। এবার আসা যাক মুল গল্পে।

আমার নাম জসিম উদ্দিন। কিশোর বয়স কেবল পার হচ্ছি। অনেক বন্ধু বান্ধব গড়েছিলাম। একে অন্যের সাথে খুব হাসিখুশিতেই সময় পার হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ ঘটল এক বিসম্নয় কর ঘটনা।যখন বন্ধুদের সাথে হাসি খুশি সময় পার হচ্ছিল তখন এটাকেই জান্নাতের সুখ মনে হচ্ছিল কিন্তু সেই বিশ্বস্ত বন্ধুরা যখন বিনা কারণে আপনার সাথে বেঈমানী করে তখন????

তখন যেকোননো ভাল মনের মানুষের একটাই ডিপ্রেশন থাকবে যাদের আমি এত ভালবাসলাম, এত কাছের করে নিয়েছি, নানা রকম আপদের বিপদে সাহায্য করে অথচ বিনিময় কিছুই নেইনি সে বন্ধুরাই অকারণে যদি বেইমানী করে তখন কোন ভাল মনের মানুষ আর ভাল থাকতে পারেনা। এটা তো গেল একটি বিষয়। যখন মানুষ সেইসব বিষয়ে কাটিয়ে উঠে অন্য একটি কাজের সন্ধানে যায়, সৎভাবে চলতে চায় তখনো আবার সে বেঈমানীর স্বীকার হয়।

আর এরূপ বার বার ঘটতে থাকায় এই ভাল মনের মানুষটি এক সময় চিন্তা করে আমি যদি কারো খারাপ না করি তবে কেন আমার সাথেই এমনটি বার বার হয়।এসব চিন্তা করতে করতে এক সময় সেই মানুষটি বলে আজ থেকে আর কাউকে ভালবাসবো না, কাউকে বিশ্বাস করবো না, কারো উপকার করবো না।

আর সাথে সাথে তাদের প্রতিও রাগ আর জেদ বেড়ে যায় যারা এত বেইমানী করেছে, বিশেষ করে তাদের উপর যাদের সে নিজের থেকেও বিশ্বাস করেছে আর ভালবেসেছে। আর এভাবেই একজন মানুষ অন্যের প্রতি রাগী, জেদী এবং বদমেজাজী পাত্র হয়ে উঠে। এখন আপনারা বলেন এসবের জন্য দায়ী কে? আপনিও এক সময় এইলাকের খারাপ আচরণ দেখে নিজেকেও এক না এক সময় ঐ লোকের মতই পরিবর্তন করে ফেলবেন।

অথচ প্রতিটি খারাপ লোকের শৈশব ছিল ফুলের মত সুন্দর। মানুষ কখনো নিজের থেকে পরিবর্তিত হয় না। পরিস্থিতি,সময় আর মানসিক চাপ মানুষকে পরিবর্তিত হবে বাধ্য করে। যে ভাল হয়ে থাকতে চায় তাকে ভাল হয়ে থাকতে না দেয়াটা পরিবর্তিন করে বাধ্য করে। 

মানুষ যতই বড় আর পরিবর্তিত হোক না কেন একটা সুন্দর শৈশব তার মাঝে চিরকালই বিদ্যমান থাকে। কিন্তু প্রকাশ করতে ভয় পায় কারণ সে ভাবে যে বিশ্বাস আর ভালবাসায় এক সময় সবাইকে হারিয়েছে দ্বিতীয়বার সে হারানোর ক্ষমতা তার মাঝে আর নেই। মানুষ যখন কাছের কাওকে হারায় সেই ব্যাথার যন্ত্রণা যেন মৃত্যুকেও হার মানায়।

Related Posts