সুপ্রিয় পাঠক গন। আপনারা সকলে কেমন আছেন। আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছেন। আপনাদের দোয়ায় আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে ষষ্ঠ শ্রেণির পঞ্চম সপ্তাহের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করব। আপনাদের যাদের প্রয়োজন হবে তারা এখান থেকে দেখে নিন।
অধ্যায়ের নাম আদর্শ জীবন চরিত।
প্রশ্ন 1:
সমাজের ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমরা হযরত ওমর (রা) এর খেলাফত থেকে কি কি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি? তোমার পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করো?
= হযরত ওমর রা এর খেলাফত থেকে শিক্ষা লাভ
পৃথিবীতে এমন অনেক মহৎ ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটেছে যাদের জীবন চরিত্র অন্যের জীবনের জন্য আদর্শ। এমনই এক জনের জীবনাদর্শ হলো হযরত ওমর রাঃ । তিনি ছিলেন মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় খলিফা ৫৮০ খ্রিস্টাব্দে কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। হযরত ওমর রাঃ এর খিলাফা থেকে আমরা অনেক শিক্ষা লাভ করতে পারি যেমন-
১. হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ সমাজের ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হযরত ওমর রাঃ তার শাসন ব্যবস্থায় হযরত মুহাম্মদ সা এর আদর্শ অনুসরণ করতেন। বিচারের মঞ্চে সকলেই সমান যদিও সে অন্য ধর্মের হোক না কেন।
২. ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: হযরত ওমর রাঃ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ছিলেন খুবই কঠোর। মদ্যপানের অপরাধের তিনি নিজ পুত্র আবু শাহমাকে শাস্তির মধ্যে দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন আইনের চোখে সকলেই সমান।
৩. কোমলমতি হৃদয়: হযরত ওমর রাঃ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় যেমন কঠোর ছিলেন অন্যদিকে তার হৃদয় ছিল কোমল। প্রজাদের অবস্থা দেখার জন্য তিনি রাতের অন্ধকারে একাকি হাঁটতেন।
৪. কর্তব্য পরায়ন: হযরত ওমর রাঃ ছিলেন একজন কর্তব্য পরায়ন শাসক। তিনি নিজ কাঁধে খাদ্য সামগ্রী বহন করে প্রজাদের মাঝে পৌঁছে দিতেন।
৫. নির্মাতা: হযরত ওমর রাঃ শুধু একজন শাসক ছিলেন না বরং তিনি একজন নির্মাতা ও ছিলেন। তিনি অসংখ্য মসজিদ, বিদ্যালয়, সড়ক সেতু হাসপাতাল নির্মাণ করেছেন।
৬. সাম্যবাদী: হযরত ওমর রাঃ এর খেলাফতকালে তিনি বায়তুলমাল থেকে যতটুকু কাপড় বরাদ্দ ছিল ঠিক ততটুকুই নিতেন। ভৃত্যকে উটের পিঠে রেখে নিজে উটের রশি ধরে জেরুজালেম যাওয়ার মাধ্যমে তিনি সাম্যবাদের দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন।
এককথায় হযরত ওমর রাঃ এর সরলতা ও কর্তব্য জ্ঞান ছিল তার জীবন আদর্শ। তার খিলাফত থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।
প্রশ্ন 2
প্রজাহিতৈশী হিসেবে একজন মহান শাসকের মূর্ত প্রতীক ছিলেন খলিফা ওমর রা ব্যাখ্যা করো?
= ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর রাঃ একদিকে যেমন ছিলেন কঠোর অন্যদিকে তেমন ছিলেন কোমল হৃদয়ের অধিকারী। তিনি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তিনি ছিলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শে আদর্শিত এক মহাপুরুষ। প্রজাহিতৈষী হিসেবে তিনি ছিলেন একজন মূর্ত প্রতীক।
অর্ধ পৃথিবী শাসন করা দ্বিতীয় খলীফা হযরত ওমর রাঃ খুব সহজ সরল অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন। খেজুর পাতায় ছিল তার আসন এবং তার কোন দেহরক্ষী ছিল না। স্বাগতিক লোভ-লালসা দিকে তিনি কখনও আসক্ত হতেন না। তারমধ্যে কোমলতা কঠোরতা উভয়ের সমন্বয় ঘটে ছিল । শাসক হয়ে তিনি প্রতিরাতে প্রজাদের দুর অবস্থা দেখার জন্য ঘর থেকে বের হতেন। খাদ্য সামগ্রী নিজ কাঁধে বহন করে তিনি তা পৌঁছে দিতে মানুষের মাঝে। কৃষিকাজে উন্নয়নের জন্য তিনি নিজ হাতে খাল খনন করেন। বিচারের মধ্যে তিনি ছিলেন অত্যন্ত কঠোর আরে প্রকাশ ঘটে যখন তিনি নিজ হাতে মদ্যপানের অপরাধে তার পুত্রকে শাস্তি দিয়েছিলেন। জনকল্যাণের জন্য তিনি অসংখ্য মসজিদ-মাদ্রাসা সেতু হাসপাতাল নির্মাণ করার মাধ্যমে তিনি এ প্রজাদের অসুবিধা গুলো দূর করেন। এত বড় শাসক হয়েও তিনি কখনো অংকার করতেন না। আরে প্রমাণ ঘটে যখন তিনি জেরুজালেম যাওয়ার পথে ভৃত্যকে উটের পিঠে বসিয়ে নিজে উটের রশি বহন করেছিলেন।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাদের যাদের দরকার তারা এখান থেকে দেখে নিতে পারেন আজকের মতো এই পর্যন্তই অন্য একদিন আরেকটি হাজির হব ধন্যবাদ সবাইকে।