আসসলামু আলাইকুম,
প্রিয় পাঠক-পাঠিকা গন আশা করি ভাল আছেন, সুস্থ আছেন।
আমিও ভাল আছি।
আজকে আমি আপনাদেরকে সপ্তম শ্রেণীর প্রথম সপ্তাহের ইসলাম ধর্ম অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন সহ উত্তর দিব।
আপনারা যারা যারা অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর খুঁজছেন তারা এই পোস্ট থেকে সহজে উত্তর পেয়ে যাবেন। মনোযোগ সহকারে পোস্ট টি পড়ার অনুরোধ রইল।
তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক-
পােস্টারের শিরােনামঃ
আমাদের চারপাশে সৃষ্টি জগতের মাঝে মহান আল্লাহ তায়ালার
একত্ববাদের নমুনা
একত্ববাদের সঙ্গঃ
তাওহিদ আরবি শব্দ। বাংলা ভাষায় একে বলা হয় একত্ববাদ।
আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় সত্তা হিসেবে বিশ্বাস
করাকে তাওহিদ বা একত্ববাদ বলা হয়। আল্লাহ তায়ালাই
একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিযিকদাতা। তিনি ব্যতীত
ইবাদতের যােগ্য কেউ নেই। তিনিই হলেন একমাত্র ইলাহ।
আল্লাহ তায়ালার প্রতি এরূপ বিশ্বাসই হলাে তাওহিদ বা
একতবাদ।
আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদের নিদর্শনঃ
আমরা আমাদের চারপাশে নানারকম জিনিস দেখতে পাই।
সুন্দর সুন্দর ফুল-ফল, গাছপালা, তরুলতা, পশু-পাখি ইত্যাদি।
এছাড়া রয়েছে নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, সাগর
মহাসাগর। আরও আছে বিশাল আকাশ, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র
ইত্যাদি। আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না এমন অনেক বস্তু
এবং প্রাণীও রয়েছে। এসব কিছুই সৃষ্টিজগতের অন্তর্গত।
এগুলাে সৃষ্টিকর্তা ছাড়া নিজ থেকে সৃষ্ট হয়নি। নিশ্চয়ই একজন
স্রষ্টা এগুলাে সৃষ্টি করেছেন। তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনিই
সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। তাঁর কোনাে সাহায্যকারীর প্রয়ােজন
হয়নি। তিনি ” হও” বলার সাথে সাথেই সবকিছু সৃষ্টি হয়ে যায়।
বিশ্বজগতের সবকিছুই তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি
করেছেন। মানুষ জ্ঞান-বুদ্ধি প্রয়ােগ করে এগুলাে থেকে
উপকার লাভ করে।
সুতরাং মানুষের উচিত তার স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
এক আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য ও ইবাদত করা। তাঁর ইবাদতে
অন্য কাউকে শরিক করা যাবে না। এভাবে মহান আল্লাহর
তাওহিদ বা একত্ববাদের প্রতি অনুগত হলে মানুষ দুনিয়া ও
আখিরাতের জীবনে কল্যাণ ও সফলতা লাভ করতে পারে।
বস্তুত আল্লাহ তায়ালাই সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা ও নিয়ন্ত্রক।
মহাজগতের নিয়ম-শৃঙ্খলা তাঁরই দান। পৃথিবীর সকল কিছুর
স্রষ্টাও তিনিই। আর পশু-পাখি, গাছপালাসহ সবকিছুর
নিয়ন্ত্রকও তিনি। তিনিই সবকিছু করেন। বরং তিনি যা ইচ্ছা
করেন তা-ই হয়। এসব কিছুতে যদি একের বেশি নিয়ন্তা থাকত,
তবে নানারকম বিশৃঙ্খলা দেখা দিত। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র
কুরআনে বলেছেন,
অর্থ: ‘যদি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে, আল্লাহ ব্যতীত বহু
ইলাহ থাকত, তবে উভয়েই ধ্বংস হয়ে যেত। (সূরা আলআম্বিয়া, আয়াত ২২
একটু চিন্তা করলেই আমরা বিষয়টি বুঝতে পারব। যেমন
মহাজগতের সৃষ্টিকর্তা ও বিধানদাতা যদি একাধিক হতেন,
তাহলে মহাজগৎ এত সুশৃঙ্খলভাবে চলত না। একজন স্রষ্টা
চাইতেন সূর্য পূর্ব দিকে উঠুক। আরেকজন চাইতেন পশ্চিম
দিকে। আবার অন্যজন দক্ষিণ বা উত্তর দিকে সূর্যকে উদিত
করতে চাইতেন। ফলে এক চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিত।
এমনিভাবে আমগাছে আম না হয়ে কোনাে কোনাে সময়
কাঁঠাল, জাম ইত্যাদিও হতে পারত। এতে আমরা বেশ
অসুবিধায় পড়তাম। বস্তুত একাধিক স্রষ্টা বা নিয়ন্ত্রক থাকলে
বিশ্বজগতের সুন্দর সুশৃঙ্খল অবস্থা বিনষ্ট হয়ে যেত।
আল-কুরআনের অন্য এক আয়াতে মহান আল্লাহ বলেনঅর্থ:“আর তাঁর (আল্লাহর) সাথে কোনাে ইলাহ নেই। যদি তা
থাকত,তবে প্রত্যেক ইলাহ নিজ নিজ সৃষ্টিকে নিয়ে পৃথক হয়ে
যেত এবং একে অপরের উপর প্রাধান্য বিস্তার করত।” (সূরা
আল-মু’মিনূন, আয়াত ৯১)
এ আয়াতেও তাওহিদ বা একত্ববাদের তাৎপর্য সুন্দরভাবে ফুটে
উঠেছে। নিচের উদাহরণের মাধ্যমে আমরা তা বুঝতে পারি।
একাধিক স্রষ্টা থাকলে তারা তাঁদের সৃষ্টিকে নিয়ে আলাদা হয়ে
যেতেন। যেমন আগুনের স্রষ্টা আগুন নিয়ে পৃথক হয়ে পড়তেন
অতঃপর সমস্ত কিছুকে আগুন দ্বারা জ্বালিয়ে দিয়ে তার নিজ
ক্ষমতার প্রকাশ করতেন। তেমনি মহাসাগরের স্রষ্টা সারা পৃথিবী
তার সৃষ্টি দ্বারা ডুবিয়ে দিতে চাইতেন। এভাবে স্রষ্টাগণ নিজ নিজ
সৃষ্টি দ্বারা অন্যের উপর বিজয়ী হতে চাইতেন। ফলে আমাদের
অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যেত। পৃথিবীর সকল কিছুই ধ্বংস হয়ে
যেত।
উপসংহারঃ
তাওহিদ বা আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদে বিশ্বাস আকাইদের
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইমান ও ইসলামের মূলভিত্তি হলাে
তাওহিদ। তাওহিদে বিশ্বাস না করলে কেউ মুমিন বা মুসলিম
হতে পারে না। সকল নবি-রাসুল (আ.) তাওহিদের দাওয়াত
দিয়েছেন। সকলেই ঘােষণা করেছেন যে, আল্লাহ তায়ালা এক
ও অদ্বিতীয়। তার তুল্য কিছুই নেই। আমাদের চারপাশে
তাওহিদের নানা নিদর্শন রয়েছে, যা দেখে আমরা সহজেই
অনুধাবন করতে পারি আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয়।
তাওহিদে বিশ্বাস মানুষকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করে। আর
তাওহিদে বিশ্বাসীগণ আখিরাতে জান্নাত লাভ করবেন। আমরা
তাওহিদে বিশ্বাস করব এবং সে অনুযায়ী আমল করব। আল্লাহ
তায়ালার সাথে কোনাে কিছুকে শরিক করব না।
সবাইকে ধন্যবাদ।