সবকিছুতে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করুন।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

সকল কাজে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করাটা অনেক ভালো ব্যাপার। কিন্তু আমাদের সমাজে এমনও অনেকে আছেন, যারা মধ্যমপন্থা অবলম্বন সম্পর্কে একটুও সজাগ নয়। অনেকে ভাবতে পারেন যে মধ্যমপন্থা কি! মধ্যমপন্থা হলো, যেটা খুব বেশীও নয় আবার খুব কমও নয়। তাড়াহুড়ো করে কোনো কাজ করা শয়তানের কাজ, আবার একেবারে আস্তে খুবই কম হওয়াটা অলসতার ব্যাপার। তাড়াহুড়ো করে কোনো কাজ করলে কাজে বিঘ্নতা ঘটবেই, আবার খুব আস্তে ধীরে কাজ করলেও কাজ অলসতার দরুন পালন হবে না।

এবার মধ্যমপন্থা নিয়ে কাজের দিকে নজর দেয়া যাক। ধরুন, আপনি একজন চাকরিজীবী পেশাদার মানুষ অথবা একজন স্টুডেন্ট। আপনি আপনার গন্তব্যে নিয়মিত ঠিক সময়েই যান। কিন্তু একদিন আপনি আপনার গন্তব্যে খুব তাড়াহুড়ো করে গেলেন। গন্তব্য স্থানে গিয়ে দেখলেন আপনার অমুক অমুক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পত্র আপনার সাথে নেই। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পত্র আনতে খেয়ালই ছিল না। তাড়াহুড়ো যে শয়তানের কাজ এবং কাজে বিঘ্নতা ঘটায় তা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।

আবার আপনার গন্তব্য স্থানে যেতে এখনও খুব সময় বাকি আছে। আপনি ভাবলেন; হাতে তো এখনও পর্যাপ্ত সময় আছে, দশ মিনিট বিশ্রাম করে নিই। পরে নাহয় ঠিক সময়ে চলে যেতে পারবো। এবার বিশ্রাম শেষে আপনি ঘড়িতে দেখলেন এক ঘন্টা পেরিয়ে গেছে। এবার তো আপনার মাথায় হাত, কি করলাম বিশ্রাম করে! অলসতার দরুন আপনি বলে উঠলেন, আজ আর যাবো না। আগামীকাল নাহয় ঠিক সময়ে যাবো। খুব আস্তে কাজ করাটাও যে আলসেমির পরিচয় বহন করে এটাও প্রমানিত হলো।

আমাদের রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যমপন্থা অবলম্বন করাটা খুব পছন্দ করতেন। মসজিদে বয়ানে যখন তিনি তাশরীফ নিয়ে যেতেন, তখন তিনি খুব লম্বা বয়ান করতেন না যাতে শ্রোতারা বিরক্ত বোধ করে। আবার বয়ান এমন সংক্ষিপ্তও করতেন না যাতে শ্রোতারা আরো শোনার ইচ্ছা করে। খুবই মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে তিনি বয়ান করতেন। আবার খাবারের ব্যাপারের রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে খাবার খেতেন।

উদর পূর্তি করে খাবার খেলে ইবাদাতে বিঘ্নতা ঘটে। আবার একেবারে খুব কম খেলে শরীরে শক্তি লাভ হয় না, আর কাজেও খুব অলসতা আসে। আমাদের ইসলাম ধর্মে কুরআন তেলাওয়াত পড়া, আল্লাহর যিকর আযকার করা নফল ইবাদাত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ নফল ইবাদাত করলে ততক্ষন আদায় করবে যতক্ষন তার অন্তরে প্রশান্তি ও প্রফুল্লতা বিরাজ করে। আর ক্লান্তিবোধ করলে সে যেন নফল ইবাদাত থেকে বিরত থাকে।

আমাদের সকলের সবকিছুতে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা উচিৎ। একেবারে বেশিও না আবার একেবারে কমও কোনো কাজ করা যাবে না। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। খোদা হাফেজ।

Related Posts

8 Comments

মন্তব্য করুন