সাতক্ষীরা জেলাতে ক্ষেত আছে কিন্তু চাষের উপায় নেই

বাংলাদেশ ভৌগলিক দিক দিয়ে কৃষিকাজের উপর নির্ভলশীল একটি দেশ।  বাংলাদেশের বিরাট একটি অংশ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল যার ভেতর সাতক্ষীরা অঞ্চলও অন্তর্ভুক্ত। সাতক্ষীরা অঞ্চল ভৌগলিক দিক দিয়ে নাতিষীতোষ্ম অঞ্চলের ভেতর অন্তর্ভুক্ত এবং এ জেলায় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বেশীরভাগ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।

তবে এবছর বন্যা ও পর্যায়ক্রমে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে হেক্টর হেক্টর কৃষিজমি। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সাতক্ষীরা জেলার বিস্তীর্ণ কৃষিজমি। কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা জেলার বেশীরভাগ জমিতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে এবং বন্যার পানি ক্ষেতে উঠে যাওয়ার কারণে বীজ ও সবজির চারা নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে কৃষিজমিতে চাষাবাদের জন্য একেবারেই অকেজো হয়ে গেছে। সাতক্ষীরা খুলনা বিভাগের একটি জেলা এবং বিগত বছরে সাতক্ষীরা জেলাতে অন্যান্য জেলা থেকে বেশী ফলন ও সবজি উৎপাদন হয়েছে।

তবে এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকাতে কৃষিজমি একেবারেই চাষাবাদের জন্য অকেজো হয়ে গেছে। সাতক্ষীরা জেলার কৃষি জমিতে বিগত বন্যার পর কৃষিজমিতে লবনাক্ত পানি দেখা দিয়েছে এবং যার কারণে বীজ ও ফসলের চারার ব্যাপক ক্ষতি সাধণ হয়েছে। এছাড়াও মাছ উৎপাদনেও অত্যন্ত ভোগান্তির সম্মুখিন হয়েছে। বিগত বছর সাতক্ষীরা জেলা থেকে সোনালী ধানের বাম্পার ফলন হয়েছিল এবং ধান সরবারহ করেও কৃষকেরা অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। এছাড়াও মরিচের বাগান, বেগুনের বাগান, হলুদ ও বিভিন্ন সবজি কৃষিজমিতে চাষাবাদ করে কৃষকেরা ব্যাপকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন। কিন্তু এই বছর বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং পর্যায়ক্রমে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কৃষিজমি একেবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে।

কৃষি গবেষকরা আশংকা করছেন যে, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কারণে কৃষকের যেই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটি পূরণ করতে হয়তো কৃষকের অনেক সময় লাগতে পারে। এছাড়াও পরিত্যক্ত কৃষিজমি পুনরায় উর্বর করতে কৃষকের জন্য খুবই কঠিন সাধ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। কৃষি জমিতে নতুন করে মাটি ভরাট করে সার ও কীটনাশক ফেলে কৃষিজমি উর্বর করে তোলা হয়। এবছর অধিক বৃষ্টি ও বন্যার কারণে কৃষিজমি ও ক্ষেতের এই দূরবস্থা হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলার অধিকাংশ খেঁটে-খাওয়া কৃষকেরা বর্তমানে অলস ও বেকার সময় কাটাচ্ছে।

কৃষকের জমি থাকলেও তারা চাষাবাদ করতে পারছে না এবং কিছু কিছু কৃষক বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। কোন উপায় না পেয়ে তারা অন্য পেশা যেমন রিকশা চালক, ভ্যান চালক ও চায়ের দোকানে চা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। তবে সাতক্ষীরা জেলার কৃষকেরা আশা করছে যে সেই সুদিন তাদের ভেতর পনরায় ফিরে আসবে এবং তারা আবারও জমি ও ক্ষেতে আউশ, আমন ও বোরো ধান ফলিয়ে চাষাবাদে ফিরে আসবে।

সূত্র: বিবিসি

Related Posts

11 Comments

মন্তব্য করুন