সূর্যগ্রহণ; কি করবেন আর কি করবেন না

পৃথিবীতে ভৌগোলিক পরিমণ্ডলে ঋতুবৈচিত্রের কারণে দিন ও রাতের সময়ব্যাপ্তির ভিন্নতা হয়ে থাকে।ভূগোলশাস্ত্র অনুযায়ী, উত্তর গোলার্ধের সবচেয়ে বড় দিন ২১ জুন, যা এই ২০২০ সালে রবিবারে পড়েছে অর্থাৎ আজ। এই দিনকে বছরের দীর্ঘতম দিন বা কর্কটক্রান্তি দিবসও বলা হয়ে থাকে। তবে মহামারীর এ বছরে দেশের আকাশে এক মহাজাগতিক দৃশ্যেরও দেখা মিলবে। এদিন সূর্য একটি নির্দিষ্ট সময়ে কর্কটক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে অবস্থান করবে। অর্থাৎ এর ফলে আংশিক সূর্যগ্রহণ হবে।
সারাদেশ থেকে অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এই আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। তবে তা অনেকটাই নির্ভর করবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকার ওপর। ঢাকার স্থানীয় সময় আনুমানিক দুপুর ১১টা ২৩ মিনিটে সূর্যগ্রহণ শুরু হবে। পরবর্তীতে দুপুর ১টা ১২ মিনিটে সূর্যগ্রহণের সর্বোচ্চ পর্যায় ও সর্বশেষে দুপুর ২টা ৫২ মিনিটে গ্রহণ শেষ হবে। এক্ষেত্রে, খালি চোখে এই গ্রহণ দেখার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নাসা।যেহেতু, মানুষের চোখের রেটিনা অত্যন্ত সংবেদনশীল, তাই চোখে কয়েক সেকেন্ডের জন্য হলেও সূর্য গ্রহণ দেখলে তা সরাসরি রেটিনার ওপর প্রভাব ফেলে।এমনকি টেলিস্কোপ, পেরিস্কোপ বা দূরবীন দিয়েও সরাসরি সূর্যের দিকে তাকাতে মানা করেছে নাসা। গ্রহনের সময় সূর্য রশ্মি তীব্রভাবে সংবেদনশীল থাকে,যা সরাসরি দেখার কারণে একজন মানুষ দৃষ্টিশক্তিও হারাতে পারে।
প্রকৃতির নিয়মে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে আমাদের বাংলাদেশে এসব বিষয়ে কিছু কুসংস্কার প্রচলিত আছে। যেমন : গ্রামাঞ্চলে এখনো ধারণা করা হয়,সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ ঈশ্বর প্রদত্ত কোন অভিশাপ যা ব্যাক্তিবিশেষের ক্ষতিসাধন করে থাকে। আবার, শিশু জন্মের ক্ষেত্রে এবং গর্ভবতী মহিলাদের ওপর এগুলোর নেতিবাচক প্রভাব আছে বলে বিশ্বাস ধারণ করে থাকে।
তবে একজন সচেতন মানুষ হিসেবে বিজ্ঞানকে বিশ্বাস করে কুসংস্কারকে পাশ কাটিয়ে সূর্যগ্রহনের সময় সার্বিক নিরাপদে থাকা উচিত। একই সাথে ধর্মীয় বিশ্বাসও অমূলক নয়। তাই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতের সাথে সাথে নিজ নিজ ধর্মীয় উপাসনা নিজেকে আরো ইতিবাচক করে তোলে। প্রকৃতি খেলে যায় তার নিজস্ব নিয়মে,তবে প্রকৃতির অংশ হিসেবে আমাদের মানুষদের উচিত নিজ জায়গায় সচেতন থাকা।

Related Posts