রাত পোহালেই বিশ্বকাপের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট, প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত!
ফুরফুরে মেজাজে গোটা বাংলাদেশ দল।হোটেলে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন সবাই,হয়ত সেরে নিচ্ছিল গেম প্ল্যানিংটাও।
হঠাৎই অধিনায়ক বাশারের মোবাইলে একটা কল এলো, ওপার থেকে কি একটা কথা শুনে বাশারের হাসিমাখা চেহারাটাই ভর করল আমাবস্যার ঘোর অন্ধকার।
সবাই কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করল,”কি হয়েছে,বাশার ভাই?”
কোন কথা বের হচ্ছিলো না তার মুখ দিয়ে, দ্বিতীয়বারের জিজ্ঞাসাতে ঘোর কাটিয়ে বলে উঠল, রানা আর নেই। কান্না স্নাত কণ্ঠে বলে উঠল, এ-কি করলি রানা।
মুহূর্তের মধ্যে যেন সবার অন্তরে এক কাল বৈশাখী ঝড় বয়ে গেল। সবাই স্তব্ধ।
দলে রানার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিল, মাশরাফি। সে কোন কথা না বলে চুপ করে নিজের রুমে গিয়ে লাইট অফ করে বালিশে মুখ গুজে ফেলেছে।
মাশরাফির পিছুপিছু তার রুমে যায় তৎকালীন পেসার সৈয়দ রাসেল।রুমের লাইট জ্বালাতেই মাশরাফি বলে উঠল, লাইট জ্বালাসনে রাসেল।
রাসেল কারণ জিজ্ঞেস করাতেই হাউমাউ করে কেঁদে দিয়ে বলে উঠে,আলো জ্বালাতে রানা ঘুমাতি পারত না।
কে জানত পরেরদিন রানার মৃত্যুর শোককে শক্তিতে পূরণ করবে বাংলাদেশ।
কে-ইবা জানত ভারাক্রান্ত অসুস্থ শরীরটাকে বয়ে নিয়ে নিজের সবটুকু নিংড়ে দিবে মাশরাফি?
হয়ত বন্ধুর ভালবাসায় আর দেশপ্রেমেই তাকে সেটা করতে বাধ্য করেছে। ব্যাট হাতে তামিম, সাকিব, মুশফিকরাও ছিল অনবদ্য।
এরপর বাংলাদেশ খেলেছে বহু ম্যাচ, ধীরে ধীরে হয়েছে সুগঠিত ও পরিপক্ক। এখন হরহামেশাই শক্তিশালী দলগুলোকেও নাজেহাল করে ছাড়ে।
যখনই নাভিশ্বাস তোলে প্রতিপক্ষের, যখনই জিতে যায় কোন একটি ম্যাচ নিশ্চয়ই রানা তখন ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি নিয়ে ওপারের বন্ধু ফিল হিউজকে বলে বসে, দেখো ফিল, আমরা জিতেছি!
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, সর্বকনিষ্ঠ টেষ্ট ক্রিকেটার হিসেবে মৃত্যুর রেকর্ডটা আমাদের রানার দখলে। এটা নিশ্চিত অন্য রেকর্ড ভাঙ্গার ইচ্ছে থাকলেও এই রেকর্ডটা ভাঙ্গতে চাইবে না কেউ!
আকাশে অজস্র তারার ভিড়ে রানা নামক ধ্রুবতারাটাও হয়ত জ্বলজ্বল করছে, দেশের অগনিত ক্রিকেট প্রেমী বাংলার ক্রিকেট আকাশে এখনো রানা নামক তারাটাকে খুঁজে ফিরে।
বাংলার ক্রিকেট থেকে হারিয়ে যাওয়া তারাটার আজ জন্মদিন।
শুভ জন্মদিন মানজারুল ইসলাম রানা..!
হ্যাপি বার্থডে জার্সি নম্বর ৯৬….!!
আপনার বিদেহী আত্মাার মাগফেরাত কামনা করছি!!