আসসালামু আলাইকুম, সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৬ সপ্তাহের পরিকল্পিত এ্যাসাইনমেন্ট প্রোগ্রামে আজকে নিয়ে এলাম এই সপ্তাহে চলমান ৭ম শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা (পার্ট-২, ৫ম সপ্তাহ) এ্যাসাইনমেন্টের সমাধান। তাহলে শুরু করা যাক।
(গ)উত্তর: জনাব “ক”এর মধ্যে আখলাকে হামিদাহর শালীনতাবোধের গুণটি ফুটে উঠেছে।
আচার-আচরণ, কথাবার্তায়, বেশভূষায় ও চাল-চলনে মার্জিত পন্থা অবলম্বন করাকে শালীনতা বলে। শালীনতার আরবি প্রতিশব্দ “তাহসিব” যার অর্থ ভদ্রতা, নম্রতা ও লজ্জাশীলতা। শালীনতা মানুষের একটি মহৎ গুণ। মহান আল্লাহ আমাদেরকে শালীনতার শিক্ষা দিয়েছেন। শালীনতাবোধ মানুষকে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। শালীনতা আল্লাহর অনুগত বান্দা হতে সাহায্য করে। সুন্দর ব্যবহারকারী শালীন ব্যক্তিকে সবাই পছন্দ করে। শালীন পোষাক-পরিচ্ছেদ সৌন্দর্যের প্রতীক। শালীন ও ভদ্র আচরণ এর মাধ্যমে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়। সমাজকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাখতে শালীনতার প্রয়োজন সর্বাধিক। শালীনতাপূর্ণ আচার-ব্যবহার সম্প্রতির চাবিকাঠি। অপরপক্ষে অভদ্র বা অশালীন আচরন, বন্ধুকে দূরে ঠেলে দেয়। মানুষ অশালীন ব্যক্তিকে পছন্দ করেনা। মহানবী (সা:) বলেন, “মানুষের মধ্যে ওই ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট যারা অশ্লীলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লোকেরা তাকে পরিত্যাগ করে।” শালীনতা মানুষের জীবনে অপরিহার্য বিষয়। সূরা লোকমানে উল্লেখ আছে যে হযরত লোকমান (আ:) তা পুত্রকে শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেন, “আল্লাহ কোন অহংকারী ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না। তুমি পদচারণ করবে সংযতভাবে এবং তোমার কণ্ঠস্বর নিচু করবে।”
উপরে বর্ণিত স্বাধীনতার সবগুলো গুন জনাব “ক” এর মধ্যে বিদ্যমান। কেননা জনাব “ক” নিয়মিত মার্জিত বেশভূষায় অফিসে যাওয়া-আসা করেন।
তার সহকর্মী ও সেবা গ্রহণকারী সবাই তার ব্যবহারে মুগ্ধ। মানব জীবনে শালীনতার গুরুত্ব অপরিসীম। শালীনতার মাধ্যমে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, আখলাকে হামিদাহর বিশেষ গুণ জনাব “ক” এর মধ্যে বিদ্যমান।
(ঘ)উত্তর: জনাব “খ” এর কার্যক্রমটি হলো সৃষ্টির সেবা।
আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি দয়া ও সহানুভূতিশীল হয়ে আদর-যত্ন করাই হলো সৃষ্টির সেবা। আল্লাহর সৃষ্টি কুলের সব কিছু যেমন জীবজন্তু, পশুপাখি, গাছপালা, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি মানুষের উপকারের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তাই আমাদের সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতি দেখানো এবং সেগুলোর যত্ন করা আমাদের অবশ্যই কর্তব্য। সৃষ্টির প্রতি মানুষের কর্তব্য গুলোর মধ্যে যেমন অসহায় ও দুস্থ মানুষকে সাহায্য ও সহযোগিতা করা যেমন কর্তব্য, তেমনি গাছপালা পশুপাখি বৃক্ষলতা এবং পরিবেশের প্রতি মানুষের কর্তব্য রয়েছে। জনাব “খ” তার এলাকায় অসুস্থপীড়িত পশুপাখি, বিপন্ন গাছগাছালি পরিচর্যার জন্য একটি বহুমুখি ইনস্টিটিউশন পরিচালনা করেন। জনাব “খ” মূলত ইনস্টিটিউশন পরিচালনা করে সৃষ্টি সেবা করছেন।এভাবে সৃষ্টির প্রতি সদয় হলে লালন-পালন ও রক্ষণাবেক্ষণ করলে আল্লাহ খুশি হন।তেমনি এদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করলে আল্লাহর সন্তুষ্ট হন।এ সম্পর্কে মহানবী (সা:) এর হাদীস হল, “সমগ্র সৃষ্টি জগত আল্লাহর পরিবার। আল্লাহর কাছে সেই ব্যক্তি প্রিয় যে তার পরিবারের প্রতি বেশি অনুগ্রহ করেন।” আমাদের চারপাশে কীটপতঙ্গ গাছপালা তরুলতা এবং ওষুধ খেয়ে তাদের সব কিছুর প্রতি মানুষের দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। কারণ এই সবকিছু নিয়েই আমাদের পরিবেশ। আমাদের স্বার্থে এই পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। মহান আল্লাহতালা সবকিছু আমাদের উপকারের জন্য সৃষ্টি করেছেন। এজন্য মহানবী (সা:) বলেন, “তোমরা জমিনের অধিবাসীদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করবে। তাহলে আসমানের অধিপতি মহান আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।”( তিরমিজি)
সুতরাং উপরে পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, জনাব “খ” এর কার্যক্রমটি সৃষ্টির সেবা।
কোন সমস্যা হলে কমেন্ট করুন এবং পরবর্তী এ্যাসাইনমেন্টগুলো পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
আগের পোস্টটি পড়তে ক্লিক করুন।