আসসালামু আলাইকুম , আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন । আজ আমি আপনাদের বিশ্বগ্রাম নিয়ে আলোচনা করব ।
বিশ্বগ্রাম কি , কাকে বলে ও কেন প্রয়োজন আমরা আজ তা নিয়ে আলোচনা করব ।
বিশ্বগ্রাম :- বিশগ্রাম বলতে বোঝায় এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষই একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে । বিশ্বগ্রাম এমন একটি শদ্ব যেখানে পুরো পৃথিবীকে একটি গ্রাম হিসেবে তুলনা করা হয় । আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি পৃথিবীকে একটি একক গ্রামে পরিনত করেছে ।
বিশ্বগ্রামের ধারনা :- বিশ্বগ্রামের ধারনা প্রথম দেন “ মারর্শাল ম্যাকলুহান ’’ । মারর্শাল ম্যাকলুহান কানাডার টরেন্টোর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিখ্যাত দার্শনিক । তিনিই সর্বপ্রথম বিশ্বগ্রাম শদ্বটি ব্যাবহার করেন । মারর্শাল ম্যাকলুহান বিশ্বগ্রামের প্রবাক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন । এছাড়াও তিনি “ দি মিডিয়াম ইজ দি মেসেজ ” এর প্রবক্তা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন । মারর্শাল ম্যাকলুহানের মতে , ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশন প্রযুক্তির ব্যাপক বিস্তারের ফলে সময় ও দূরত্ব সংকুচিত হয়ে পৃথিবী একটি গ্রামে পরিনত হয়ে গেছে । তিনি বিশ্বকে ইলেকট্রনিক ও টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তির বিস্তৃতিকে “ইলেকট্রনিক নার্ভাস সিস্টেম ” নামে আখ্যায়িত করা হয় । তার মতে পৃথিবী কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক নার্ভাস সিস্টেমের সাহায্যে সংযুক্ত হয়ে বিশ্বগ্রাম তৈরী হয়েছে ।
বিশ্বগ্রাম এর জন্য পাচঁটি উপাদান আবশ্যক । যথা :
১ . হার্ডওয়্যার ,
২ . সফটওয়্যার ,
৩ . নেটওয়ার্ক সংযুক্ততা ,
৪ . ডেটা এবং
৫ . মানুষের নিজ দখতা
১- হার্ডওয়্যার : বিশ্বগ্রামের যে কোন ধরনের যোগাযোগ ও তথ্য আদান প্রদানের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত হার্ডওয়্যার সামগ্রী । হার্ডওয়্যার বলতে বোঝায় – কম্পিউটার , মোবাইল ফোন ,স্যাটেলাইট , ল্যাপটপ ,অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ইত্যাদি ।
২ – সফটওয়্যার : বিশ্বগ্রামে কানেক্ট হওয়ার জন্য হার্ডওয়ার এর পাশাপাশি সফটওয়্যার প্রয়োজন ।সফটওয়্যার মধ্যে রয়েছে বিভন্ন অপারেটিং সিস্টেম , ব্রাউজিং ও কমউনিকেশন সফটওয়্যার ,প্রোগামিং ভাষা ইত্যাদি ।
৩ – কানেক্টিভিটি : বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড় হলো কানেকটিভিটি বা সংযুক্ততা । নিরাপদ তথ্য আদান -প্রদানই বিশ্বগ্রামের মূলভিওি ।কানেকটিভিটি ছাড়া বিশ্বগ্রামে যোগ হওয়া যায় না ।কানেকটিভিটি বিশ্বগ্রামের অপরিহার্য বিষয় ।
৪ . ডেটা : ডেটা হলো কোনো তথ্য যা দ্বারা আমরা কোন তথ্য জানতে পারি । কোন তথ্যকে সুশৃঙখল ভাবে সাজানোকে ডেটা বলা হয় । ডেটা খুবই গরুত্বপূর্ন ।
৫ . মানুষের নিজ দখতা : বিশ্বগ্রামে যোগ হওয়ার জন্য প্রথমত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর দখতা অর্জন করতে হবে ।
বিশ্বগ্রাম এক নতুন দিগন্ত এনে দিয়েছে । বিশ্বগ্রাম এর ধারনা পুরো পৃথিবীকে একটি গ্রামে পরিনত করেছে । বিশ্বগ্রাম কর্ম সেক্টরে এক নতুন সূচনা এনে দিয়েছে । আজ আমরা নিজ গৃহে বসে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের কাজ করতে পারি । আউটসোসিং জগৎ বিশ্বগ্রামের কারনে সৃষ্টি হয়েছে ।বিশ্বগ্রাম এডুকেশন সেক্টরে এক নতুন পরিবর্তন এনে দিয়েছে ।আজ আমরা নিজ দেশে বসে পৃথিবীর যেকোনো ইনসটিটিউট থেকে নিজেদের এডুকেশন গ্রহন করতে পারি ।বিশ্বগ্রাম মানবজীবনে আর্শীবাদ রুপে এসেছে ।