বন্ধুরা, তোমরা যারা নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞানের ছাত্র, তাদের কাছে জীববিজ্ঞান বই একটি আশীর্বাদস্বরূপ। তোমাদের এই বইটির পড়া নিয়ে তাই আলোচনা করছি। আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে, ১ম অধ্যায়ের ১.২ পাঠের বিষয়বস্তু নিয়ে। চল দেড়ি না করে শুরু করা যাক।
আমরা ছোট থেকেই পড়ে আসি যে, যার জীবন আছে সেই জীব। তাহলে জীববিজ্ঞান পড়ে আমরা কি করব? জীববিজ্ঞানেও তো এই জীবদের নিয়েই আলোচনা করা হবে। তবে সেটা আলাদা করে পড়ার কি মানে আছে? তোমাদের মধ্যে যাদের মনে এই ধরণের প্রশ্ন জাগে, তারা চাইলে আমার লেখা নিচের আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারো।
আজকের পাঠে মননিবেশ করি। আমরা ছোটকাল থেকে এটাও পড়ে আসি যে, প্রাণী আর উদ্ভিদ এই দুই ধরণের জীব বিদ্যমান আছে আমাদের এই পৃথিবীতে। তবে আজকে কেন জীববিজ্ঞান বইয়ের এতো শাখার সৃষ্টি হয়েছে? কেনই বা এতো শাখা নিয়ে আলোচনা করতে হয়? নিচের লেখাগুলো পড়লে তোমরা তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে।
আমরা ছোটকাল থেকে যা পড়ে আসি, তার প্রচলন ছিল বহুদিন ধরে। জীববিজ্ঞানের শাখা ২টি- উদ্ভিদ আর প্রাণী বিজ্ঞান। কারণ, আমরা আমাদের চারপাশে তাকালে শুধু এই দুই ধরণের জীবেরই অস্তিত্ব দেখতে পাই। ফলে এই দুই শাখাই হচ্ছে জীববিজ্ঞানের ১ম এবং প্রাচীন শাখা। যদিও বর্তমানে এই রীতি কিছুটা হলেও চালু আছে।
কিন্তু যুগ পাল্টাচ্ছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতি হচ্ছে। বিজ্ঞানের এই অগ্রযাত্রায় এমন বহু জিনিসের আবিষ্কার হয়েছে, যাদের সাহায্যে নতুন নতুন জীবের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এসব জীবের সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় বিজ্ঞানীদের। কারণ, এই জীবগুলোর ব্যাখ্যা উদ্ভিদ আর প্রাণীবিজ্ঞান দিয়ে করা সম্ভব নয়। কেননা, এই জীবগুলো উদ্ভিদ নাকি প্রাণী, সেটাই তো বলা যায় না।
যেমন ধরি ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়ার অনেক বৈশিষ্ট প্রাণীর সাথে মিলে যায়। আবার অনেক বৈশিষ্ট উদ্ভিদের সাথে মিলে যায়। ফলে এই ব্যাকটেরিয়াকে উদ্ভিদও বলা যায় না, আবার প্রাণীও বলা যায় না। তাহলে কি এরা জীব নয়?নিশ্চয়ই এরা জীব। কিন্তু উদ্ভিদ আর প্রাণী জীববিজ্ঞান দিয়ে এদের ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না। ফলে দরকার পড়ছে অন্য কোনো শাখার। আর এর ফলেই আরও একটি শাখা গড়ে উঠেছে।
আবার পৃথিবীতে এতগুলো জীবকে শ্রেণিতে না ভাগ করলে, আমরা সহজেই বুঝতে পারব না যে, কোন জীবের নাম কি/বৈশিষ্ট কি? এসব জীবের নামকরণ আর বৈশিষ্টের জন্য জীববিজ্ঞানের আরও একটি শাখার দরকার পড়ে। ফলে এই প্রয়োজনের তাগিদে গড়ে উঠেছে জীববিজ্ঞানের আরও একটি শাখা, যার নাম ট্যাক্সোনমি বা শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা।
এভাবে বিভিন্ন জীবের অস্তিত্ব, কার্যপ্রণালী, বংশবিস্তার ইত্যাদি নানান জিনিসের জ্ঞানের দরকার পড়তেই আছে। ফলে প্রয়োজন হতে থাকে আরও অন্য কোনো শাখার। তাই জীববিজ্ঞান আজ অনেক শাখায় বিভক্ত হয়ে গেছে।
এতগুলো শাখাকে শ্রেণিবদ্ধ করে ২-৩টি মূল শাখায় ভাগ করলে সহজেই সেই শাখাগুলো সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যাবে বলে, জ্ঞানের প্রায় প্রতিটি বিষয় মোট ২ ভাগে ভাগ হয়ে থাকে। ভৌত আর মৌলিক। যেহেতু জীববিজ্ঞানও হলো জ্ঞানের একটি বিষয়, তাই এর শাখাদেরকেও মোট ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ
১) ভৌত বা মৌলিক শাখা
২) ফলিত শাখা
ভৌত শাখা হচ্ছে সেই শাখা, যেখানে জীববিজ্ঞানের যত তত্ত্বীয় বিষয় আছে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। আর ফলিত শাখায় যে সমস্ত বিষয় আলোচনা করা হয়, সেই বিষয়গুলো জীববিজ্ঞানের জীবন-সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়। এই সমস্ত শাখা নিয়ে আমি পরে আলোচনা করব।
তাহলে বন্ধুরা তোমরা কি বুঝতে পারলে, কেন জীববিজ্ঞানের শাখাগুলোর প্রয়োজন হয়? আর কেনই বা এতো শাখার সৃষ্টি হয়েছে?
তোমাদের মূল্যবান মতামত দিয়ে তার উত্তর দিয়ে দিও।
ধন্যবাদ সকলকে।