আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। ভাত আর মাছ ছাড়া আমাদের একটা দিনও চলেনা। মাছ আমাদের অনেক পছন্দের একটি খাবার। তবে চাইলে যে কেউ সঠিকভাবে মাছ রান্না করতে পারে না। তাই জন্য আমি একটা চমৎকার মাছের রেসিপি তৈরি করে দেখাবো।
এই একটিমাত্র রেসিপি দিয়ে অনেকগুলো মাছের রেসিপি তৈরি করতে পারবেন। যারা ব্যাচেলর আর প্রবাসে বসবাস করেন তাদের জন্য এই রেসিপিটি অনেক উপকারে আসবে। মাছ কাটা থেকে শুরু করে মাছ রান্না করা পর্যন্ত ধাপে ধাপে অনেকগুলো টিপস-এন্ড-ট্রিকস থাকবে।
উপকরন
রুই মাছ ৪ পিস
আলু ৪ টি
আদা বাটা ১ চা চমচ
পেঁয়াজের কুচি ১ কাপ
রসুন বাটা ১ চা চামচ
জিরার গুড়া ১ চা চামচ
টমেটো ৪ টি
হলুদের গুড়া ১ টেবিল চামচ
লাল মরিচের গুড়া ১ টেবিল চামচ
কাঁচা মরিচ ৪ টি
ধনিয়া পাতার কুচি ৫ গ্রাম
লবন পরিমানমতো
সয়াবিন তেল ১ কাপ
পদ্ধতি
আমি এখানে ৪ পিস রুই মাছ নিয়েছি। মাছগুলো আমি সাইজ অনুযায়ী টুকরো টুকরো করে কেটে নিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিয়েছি। আপনারা যে কোন মাছ দিয়ে এই রেসিপিটি তৈরি করতে পারবেন। কাতল,রুই, মৃগেল মাছ সবগুলো মাছ একই পদ্ধতিতে রান্না করতে পারবেন।
কথা দিচ্ছি রান্নার সেরা স্বাদ আসবে। আমি মাছের টুকরোগুলো মধ্যে এক চা-চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে দিচ্ছি। সাথে একটা সমস্যা লবণ মাখিয়ে দেবো। হলুদ এবং লবণ একটু কম বেশি হলেও সমস্যা নেই। এখন আমি হলুদ এবং লবণ মাছের টুকরোগুলোগুলোর সাথে ভাল করে মিশিয়ে নেব।
একটু সময় নিয়ে এই মাছের পিচগুলোতে ভালোভাবে মাখতে হবে। এখন চুলার মধ্যে একটি কড়াই বসিয়ে দিচ্ছি। কড়াইতে গরম হয়ে গেলে সেখানে এক কাপ পরিমান তেল ঢেলে দেবো। তেলটা ভালোমতো গরম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। মাছ বাজার পূর্বে তেল অবশ্যই হাই হিটে গরম করে নিতে হবে।
তেল গরম হয়ে গেলে মাছের পিস গুলো দিয়ে দেবো। তেল কম গরম হলে কিন্তু মাছগুলো কড়াই এর তলায় লেগে যাবে এবং মাছের টুকরোগুলো ভেঙে যাবে। মাছ ভাজার সময় এই টিপসটি অবশ্যই মনে রাখবেন।
মাছগুলো তেলে দেয়ার সাথে সাথে উল্টিয়ে দেয়া যাবে না কিছুক্ষণ ভাঁজার পরে তারপর উল্টিয়ে দিতে হবে। একপাশে ১ থেকে ২ মিনিট ভাজার পর উল্টিয়ে দিন। মাছের টুকরোগুলো বেশি ভাঁজবেন না এতে শক্ত হয়ে যাবে। এর ফলে মাছ রান্না করার সময় মাছের ভেতর তেল-মসলা ঢুকবে না ফলে রান্না ভালো হবে না। মাছগুলো ভাজা হয়ে গেলে তেল থেকে উঠিয়ে নিন।
এবার চুলার আঁচ হাই থেকে মিডিয়াম করে দিন। সেই তেলের সাথে ১ কাপ পেঁয়াজ কুচি ঢেলে দিন। পেঁয়াজ কুচি কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে ভেঁজে নিচ্ছি। পেঁয়াজ কুচি কিছুক্ষণ ভাঁজার পর এবারে দিয়ে দিচ্ছি ১ চা চামচ রসুন বাটা, ১ চা চামচ হলুদের গুঁড়া, ১ চা চামচ মরিচের গুঁড়া, ১ চা চামচ জিরার গুঁড়া, ১ চা চামচ লবণ দিচ্ছি।
এখন চামচ দিয়ে পেঁয়াজ কুচি সহ মশলাপাতি কষিয়ে নেবো। চুলা কিন্তু মিডিয়ামে থাকবে। মশলা কষানো হয়ে গেলে সামান্য পরিমাণ পানি মিশিয়ে দিচ্ছি এতে মশলা গুলো পুড়ে যাবে না।
এবার আলু মিশিয়ে দেবো। এখন আলুর টুকরো গুলো তেল মশলার সাথে নেড়েচেড়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে নেবো। আলুর টুকরা ৩-৪ মিনিট রান্না করে নেবো। এবার পানি মিশিয়ে দিন। পানি এমনভাবে মেশাবেন যাতে সেই পানি দিয়ে আলু সিদ্ধ হয়। এখন ঢাকনা ঢেকে দিয়ে আলু গুলো কিছুক্ষণ ৫ মিনিট সিদ্ধ করে নেবো। ৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে নিবো। আলু কিছুটা সিদ্ধ হলে এবার টমেটো মিশিয়ে দিন।
। টমেটো দেয়ার ২ মিনিট পর পানি মিশিয়ে দিন। পানি এমনভাবে দিতে হবে যাতে সবকিছু ঢুবে থাকে। এবার ঢাকনা ঢেকে দিয়ে আরো ৫ মিনিট রান্না করবো। ৫ মিনিট রান্নার পর ঢাকনা খুলে ভেজে রাখা মাছের টুকরোগুলো দিয়ে দেবো। হালকাভাবে নাড়িয়ে দিতে হবে বেশি নাড়াচাড়া করা যাবেনা এতে মাছ ভেঙে যাবে।
আবারো ঢাকনা ঢেকে ৫ মিনিট রান্না করুন। লবনটা একটু চেক করে নিয়ে ৪-৫ টি কাটা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিন। হাতলা নাড়িয়ে দিন। এবার উপরে ধনিয়া পাতার কুঁচি ছিটিয়ে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে ঢাকনা ঢেকে আরো ২ মিনিট রান্না করে নেবো। ব্যাস হয়ে গেলো দারুন মজাদার মাছের রেসিপি।
গোপন টিপস
– মাছের তরকারিতে টমেটো মিশিয়ে দিন এতে স্বাদ কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
– মাছ ভাজার আগে তেল প্রচুর গরম করে নিন।
– আলুর খোসা ছাড়ানোর পর ৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন এতে স্বাদ অনেক ভালো হবে।
– মাছের তরকারিতে অতিরিক্ত ঝোল থাকলে কর্ন ফ্লাওয়ার মিশিয়ে দিন।