বড় ধরনের কোনো ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। ইতিহাসে প্রথমবারের মত দেশের ক্রিকেটাররা ‘ধর্মঘট’ এর ডাক দিয়েছেন। অঘোষিত এই ধর্মঘটের ফল হিসেবে দুপুর ৩টায় সংবাদ সম্মেলনে বসবেন ক্রিকেটাররা।
দু’দিন আগেই বিপিএলের নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের খোলামেলা মন্তব্য দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। বিপিএলে লেগ স্পিনারদের খেলানোর বাধ্যতামূলক নিয়ম নিয়েও কথা বলেছেন সাকিব। জানিয়ে দিয়েছেন, বিপিএল খেলোয়াড় তৈরির কোনো মাধ্যম নয়।
বিপিএল নিয়ে বিসিবির অন্য যে সব সিদ্ধান্ত- সেগুলোর মধ্যে ক্রিকেটারদের
পারিশ্রমিকেরও একটা বিষয় ছিল। আগের চেয়ে তো বেশিই হবে না, বরং কমানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে চলমান জাতীয় ক্রিকেট লিগে খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি এবং অন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও সেগুলোর কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়নি।
জানা গেছে, সাকিব-তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ থেকে শুরু করে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যোগ দিচ্ছেন এই প্রতিবাদে। মাশরাফি বিন মর্তুজাও যোগ দিতে পারেন বলে জানা গেছে। তবে, তিনি আজ ক্রিকেটারদের জমায়েতে অংশ নেবেন কি না- এখনও নিশ্চিত নয়।
সাকিবের নেতৃত্বে ক্রিকেটাররা যে ১১টি দাবি পেশ করেছেন…
১। কোয়াবের বর্তমান কমিটিকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
২। প্রিমিয়ার লিগ আগের মত দল-বদলের নিয়ম করতে হবে, যে যার পছন্দমত দলে যাবে। হস্তক্ষেপ করা যাবেনা।
৩। এ বছর না হোক, তবে পরের বছর থেকে আগের মত বিপিএল করতে হবে, বিদেশি ক্রিকেটারদের সামঞ্জস্য রেখে লোকাল ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বাড়াতে হবে।
৪। ম্যাচ ফি ৫০% বাড়াতে হবে। প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ফি ১ লাখ, বেতন বাড়াতে হবে, বারো মাস কোচ ফিজিও দিতে হবে, প্রতি বিভাগে প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫।আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে বল দিয়ে খেলা হয় ঘরোয়া লিগে সেই বল ব্যবহার করতে হবে , দৈনিক ভাতা ১৫০০ টাকায় খাবারদাবার, ফিটনেস মেইনটেইন হয়না, তা বাড়াতে হবে। এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে যাবার জন্য প্লেন ভাড়া দিতে হবে, হোটেল ভালো হতে হবে, জিম ও সুইমিংপুল সুবিধা থাকতে হবে।
৬। চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা ও বেতন বাড়াতে হবে।
৭। দেশি সব স্টাফদের বেতন বাড়াতে হবে, কোচ থেকে গ্রাউন্ড স্টাফ, আম্পায়ার সবার বেতন বাড়াতে হবে।
৮। ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়ানডে টুর্নামেন্ট বাড়াতে হবে, বিপিএলের আগে আরেকটি টি-২০ টুর্নামেন্ট এর আয়োজন করতে হবে যাতে বিপিএলে ভালো পারফরম্যান্স করা যায়।
৯। ঘরোয়া ক্রিকেটের সময়সূচি ফিক্সড হতে হবে, যাতে সবাই প্রস্তুতির একটা সময় পায়।
১০। ডিপিএলের পাওনা টাকা সময়ের মধ্যে দিতে হবে।
১১। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ দুটার বেশি খেলা যাবে না নিয়ম তুলে দিতে হবে। সুযোগ থাকলে সবাই খেলবে।
.
শেষে সাকিব এও বলেন,নারী দলের কোনো দাবি থাকলে তাও শুনবেন ক্রিকেটাররা। তাদের সঙ্গেও একাত্মতা জানাতে পারবেন।
আমি মনে করি সব দাবিই যৌক্তিক, জায়গামত ধরছে বোর্ডকে। ভারত সফর বাতিল হলে ভারতীয় বোর্ড ধরবে বিসিবিকে, অন্যদিকে দাবি না মানলে ক্রিকেটাররা ধরবে। যাবা কই! 😂
পুনশ্চঃ টাকা কিন্তু জনগণের পকেট থেকে দেয়া হয়না, বিসিবিই দেয়। বিসিবির অর্থায়ন স্পন্সর, আইসিসি আর খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স থেকে হয়।