Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম: জানা রোগের অজানা কিছু কথা

আমাদের জীবনে স্বাস্থ্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শারীরিক সুস্থতা  যেমন প্রয়োজন ঠিক তেমনি মানসিক স্বাস্থ্য ও গুরুত্বপূর্ণ। আজকে আলোচনা করবো বর্তমান সময়ের আলোচিত একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা যা সাধারণত মহিলাদের মাঝে দেখা যায়,তা হলো পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম।

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বর্তমান সময়ের সবচেয়ে পরিচিত একটি রোগ চিকিৎসা বিজ্ঞানে, যা সাধারণত মহিলাদের শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্স অর্থাৎ হরমোন এর ভারসাম্যের তারতম্য ঘটায় এবং যার ফলে জরায়ুতে সিস্ট সৃষ্টি হয়।একেই পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বলে যাকে সংক্ষেপে PCOS ও বলা হয়। পিসিওস দেখা দিলে কোনো মহিলার শরীরে সাধারণত অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের এর আধিক্য যায়,যার ফলে জরায়ুতে এক বা একাধিক সিস্ট সৃষ্টি হয় ।
লক্ষণ:
সাধারণ কিছু বিষয় দেখে বোঝা যায় যে , একজন মহিলা পিসিওস এ আক্রান্ত যেমন,
১. অনিয়মিত ঋতুস্রাব
২. শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অবাঞ্চিত লোম
৩. মুখে লোম গজানো
৪. ওভারিতে একের বেশি সিস্ট
৫. ঘন ঘন মুড সুইং
৬. হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যাওয়া।

কি কারণে হয় :
সাধারণত পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম জিনগত ও পরিবেশগত কারণে দেখা যায়। অতিরিক্ত ওজন বেশি, আগে পরিবার এর কোনো সদস্যের এমন হয়েছে কিংবা নিয়মিত ব্যায়াম না করা এগুলোর কারণে সাধারণ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম দেখা যায়।

আল্ট্রাসাউন্ড করে সিস্ট আছে কিনা নির্ণয় করা হয় এবং রোগীকে সেই হিসেবে ই ঔষধ দেওয়া হয়।
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম‌ এ আক্রান্ত মহিলাদের মধ্যে সিরাম ইনসুলিন, ইনসুলিন রেজিট্যান্স, এবং হোমোসিস্টাইন এর মাত্রা বেশি থাকে।
চিকিৎসা:
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হয় যাদের শুরুতেই অনেক এ বুঝতে পারেন না ব্যাপারটা, আবার অনেক এ বুঝতে পারলেও বিষয় টি নিয়ে গুরুত্ব দেয় না,যার ফলে চিকিৎসকগণ রোগীর অবস্থা বুঝে সাধারণত দুইভাবে তাদের চিকিৎসা করে থাকেন।
১.খাবার ঔষধ
২. সার্জারি
খাবারের ঔষধ চিকিৎসক দেন সাধারণত অনিয়মিত ঋতুস্রাব বন্ধ থাকে যা তা দূর করার জন্য।যেমন:
বার্থ কন্ট্রোল পিল, ফার্টিলিটি পিল, ডায়বেটিস পিল।
বার্থ কন্ট্রোল পিল, শরীর এ হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং নিয়মিত মাসিক এ সাহায্য করে।
যারা মা হতে চান তাদের জন্য আরেক পদ্ধতি তাই দেওয়া হয় ফার্টিলিটি পিল। এছাড়া, অনেক রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায়,পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় তাই ডায়বেটিস পিল দেওয়া হয়।
সাধারণত তখন সকল পথ বন্ধ থাকে তখন ই চিকিৎসক সার্জারি করে সিস্ট বের করার সিদ্ধান্ত নেন। আর এখানেও রয়েছে নানা পদ্ধতি।
যেমন:
সিস্ট অ্যাস্পিরেশন :
এই পদ্ধতির সাহায্যে ওভারিয়ান সিস্টের FLUID বের করে দেওয়া হয় এবং সিস্ট দূর করা হয়।

ওফোরেক্টমি:
যে ওভারিতে সিস্ট আছে, সার্জারির মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেওয়া হয়।

হিস্টোরেক্টোমি:
জরায়ুটির যে সিস্টে আক্রান্ত, সার্জারির মাধ্যমে সেটুকু অংশ বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।

ওভারিয়ান ড্রিলিং:
সার্জারির মাধ্যমে ওভারিতে ছোট-ছোট গর্ত করে দেওয়া হয় যাতে আর অ্যান্ড্রোজেন তৈরি হতে না পারে।
সাধারণত পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমকে গুরুত্ব না দিলে, সঠিক চিকিৎসা না করলে, আস্তে আস্তে তা ধীরে ধীরে এন্ড্রোমেট্রিয়াম ক্যান্সারে রপান্তরিত হয় ,যা খুব মারাত্মক আ
ক্ষতি সাধন করে।
তাই পলিসিস্টক ওভারি সিনড্রোম থেকে মুক্তি পেতে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে সবার।
১. নিয়মিত ব্যায়াম
২. নিয়ন্ত্রিত ওজন
৩. নিয়মিত চেকাপ করানো
৪. ডাক্তারের দেওয়া ঔষধ নিয়মিত সেবন
৫. স্বাস্থ্য সম্মত খাবার গ্রহণ।
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম কিন্তু কখনওই সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয় না। যতদিন নিজের শরীরের দিকে , স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল থাকবেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেনএবং নিয়মিত ওষুধ খাবেন, ততদিনই PCOS নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যেহেতু এই সমস্যা একবার কমে গেলেও পুরোপুরি নির্মূল হয় না তাই নিয়মিত চেক-আপ করানো এক্ষেত্রে খুবই জরুরী একজন পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এর রোগীর জন্য।
পলিসস্টিক ওভারি সিনড্রোম এ সাধারণত রোগীরা যে ভুল করে তা হলো গাইনী বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে কিন্তু আসলে এই জায়গায় গাইনী বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে তেমন উপকার পাওয়া যায় না,মূলত হরমোন বিশেষজ্ঞ দেখানোই ভালো হবে এ ক্ষেত্রে।

Related Posts

11 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No