আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই।আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন।পৃথিবীতে ভ্রমণপিয়াসী মানুষের অভাব নেই। যারা ভ্রমণে নিজের সুখ খুঁজে পায় তারাই ভ্রমণ পিয়াসী নামে পরিচিত।আমিও তার ব্যতিক্রম নই।ছোট বেলা থেকেই আমার নতুন নতুন জায়গায় ভ্রমণ করবার তীব্র নেশা রয়েছে।যার ফলে আমি ছুটে বেড়িয়েছি এখান থেকে সেখানে,পাহাড় থেকে পর্বতে। আজ তেমনি আমি আমার ঘুরতে যাওয়ার এক অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
গত শীতের শুরুতে পরীক্ষার ফাঁকে পড়াশোনার চাপ যখন বিষিয়ে তুলছিলো ঠিক তখননি মন চাচ্ছিলো কয়দিনের জন্য কোথাও ঘুরে আসি। কিন্তু কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায় সেই ব্যাপারটা নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলায়। কাছের এক বান্ধুবীর পরামর্শে সেই সমস্যাটিও দূর হয়ে গেলো নিবিশে।কারণ যেহেতু সামনে আমার পরীক্ষা ছিলো তাই এমন এক জায়গা খুঁজছিলাম যেখানে একদিনে গিয়ে ঘুরে আশা যায়। আমার বান্ধবীর পরামর্শে কুমিল্লা তার মধ্যে অন্যতম।তাই আর দেরি না করে কুমিল্লা যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে নিলাম।
যেই ভাবা সেই কাজ। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে সকাল ৬ টায় বাসা থেকে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে বের হলাম।যেহেতু বাসে যাবো তাই খবর নিলাম কুমিল্লাগামী বাস কমলাপুর কিংবা সায়দাবাদ পাওয়া যায়।আমি যেহেতু ধানমন্ডিতে থাকি তাই কুমিল্লা যাবার জন্য আমি কমলাপুর বাসস্টেন্ড এ যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।কমলাপুরে গিয়ে আমি কুমিল্লাগামী রয়েল কোচ এর এসি বাসের টিকেট কাটলাম।১০ মিনিটের মধ্যে বাস চলে এলো। মহান সৃষ্টিকর্তাকে সরণ করে আমি আমার যাত্রা শুরু করলাম।কুমিল্লা যাত্রাপথে চারপাশের পরিবেশ দেখে যে কারো মন জুরিয়ে যায়।প্রকৃতি যেন নিজ হাতে চারপাশ সাজিয়ে দিয়েছে। প্রায় ২.৩০ ঘন্টা যাত্রার পর আমি কুমিল্লা শহরে নামি।কুমিল্লা শহরে নেমেই আমি সবার আগে কুমিল্লা শহরে রসমালাই খেতে মাতৃভান্ডার চলে যাই।অনেক দীর্ঘ লাইন অতিক্রম করে অবশেষে রসমালাই খেতে পারি।বিশ্বাস করুন কুমিল্লার রসমালাই এর সাথে অন্য কোথাকার রসমালাই এর কোন তুলনাই নেই।আপনি যতই খাবেন ততই আরও খেতে চাইবেন।রসমালাই খাবার পর আমি চলে যাই কুমিল্লা ধর্ম সাগরের উদ্দেশ্যে। সাগর না হলেও এক বড় সড় দীঘির মতো বিশাল হলো কুমিল্লা ধর্মসাগর পাড়।কুমিল্লা নগরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই পার্কটি। পার্কটি ঘুরে আমি চলে যাই কুমিল্লা স্টেডিয়াম এর উদ্দেশ্যে। বিশাল বড় এই ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামটিও কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রেই অবস্থিত।
ঘুরতে ঘুরতে দুপুর হয়ে যাওয়ায় আমি দুপুরের খাবার শেষ করে চলে যাই কোটবাড়ির উদ্দেশ্যে।প্রায় আধা ঘন্টার মধ্যে আমি টিকেট কেটে আমি শালবন বিহারে প্রবেশ করি।শালবহ বিহারে রয়েছে তৎকালীন ত্রিপুরা রাজার ধংসাবশেষ প্রাসাদ এবং সেই সাথে রয়েছে প্রত্নতথ্য যাদুঘর।যা আপনাকে ইতিহাসের সাথে এক মেলবন্ধন করাবে।প্রাসাদ এবং জাদুঘর এর পর আমি বেড়িয়ে পড়ি কুমিল্লা ক্যান্টনম্যান্ট এর উদ্দেশ্যে। সবশেষে আমি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শহীদদের ওয়ার সিমেট্রি দেখে আমি আমার কুমিল্লা যাত্রা শেষ করি।
পরবর্তীতে সেই ক্যান্টনমেন্ট থেকেই আবার রয়েল কোচ এর মাধ্যমে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই।আমার যাত্রা হয়তো সল্প ছিলো কিন্তু সেই যাত্রা কখনোই ভুলানো না।ভুবন ভরা প্রকৃতির ছোয়া আর অফুরন্ত সৌন্দর্য আমাগে আবার ডাকবে বার বার।তবুও কাজের টানে আবার কর্মস্থলের গন্তব্যেতে ছুটে যেতে হয়।সবাইকে ধন্যবাদ।
ঘরে থাকুন
সুস্থ থাকুন