আসসালামু আলাইকুম, সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৬ সপ্তাহের পরিকল্পিত এ্যাসাইনমেন্ট প্রোগ্রামে আজকে নিয়ে এলাম এই সপ্তাহে চলমান অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান (পার্ট-৩, ৫ম সপ্তাহ) এ্যাসাইনমেন্টের সমাধান। তাহলে শুরু করা যাক
(১) পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণ ভিন্ন হয় কেন ?
উত্তর: পৃথিবীর মেরু অঞ্চল বিষুবীয় অঞ্চলের তুলনায় কিছুটা চাপা। এই কারণে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে বিষুবীয় অঞ্চলের দূরত্ব বেশি এবং মেরু অঞ্চলের দূরত্ব কম। পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে যত দূরে যাওয়া যায়, অভিকর্ষজ ত্বরণের মান তত কমতে থাকে। এজন্যে বিষুবীয় অঞ্চলের অভিকর্ষজ ত্বরণ মেরু অঞ্চলের অভিকর্ষজ ত্বরণের তুলনায় কম হয়। পৃথিবী সম্পূর্ণ গোলাকার না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বস্তুর প্রতি অভিকর্ষজ ত্বরণের মান বিভিন্ন হবে। ফলে ওজনেও ভিন্নতা দেখা যায়। পৃথিবী সুষম গোলক না হওয়ায় কেন্দ্র হতে পৃথিবীর সকল স্থান সমদূরবর্তী নয়। যেহেতু gএর মান পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্বের উপর নির্ভর করে। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে gএর মানও বিভিন্ন হবে। বিষুবীয় অঞ্চলে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বেশি হওয়ায় gএর মানও কম হবে। আবার মেরু অঞ্চলে ব্যাসার্ধ কম হওয়ায় gএর মান বেশি হবে।
ফলে বিভিন্ন স্থানে gএর মান বিভিন্ন হয়।
(২) পৃথিবীতে তোমার ভর ৫০ কেজি; চাঁদে তোমার ওজন কমে যায় কেন?
উত্তর: বস্তুর ভর একটি ধ্রুব রাশি। কিন্তু বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণ gএর উপর নির্ভর করে। যেসব কারণে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান পরিবর্তন হয় সেসব কারণে বস্তুর ওজনও পরিবর্তন হয়ে থাকে। ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় বস্তুর ওজন ততই কমতে থাকে। বস্তুর ওজন বস্তুর মৌলিক ধর্ম নয়। কোন বস্তুর ওজন থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে। পৃথিবীর কেন্দ্রে অভিকর্ষজ ত্বরণ শূন্য। তাই সেখানে বস্তুর ওজন শূন্য। মহাশূন্যে কোন বস্তুর ওজন শূন্য হলে তখন বস্তুর উপর কোন মহাকর্ষ বল কাজ করে না।তাদের অভিকর্ষ জনিত ত্বরণের মান প্রায় পৃথিবীর ছয় ভাগের এক ভাগ।
সুতরাং চাঁদে ১ কেজি ভরের বস্তুর ওজন হবে ১.৬৩ নিউটন। কোন বস্তুর ওজন পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। যদি দূরত্ব বাড়ানো হয়; তবে সেই বস্তুর উপর পৃথিবীর আকর্ষণ বল কমে যায়। ফলে ওজন হ্রাস পায়।
পৃথিবীতে আমার ভর = ৫০ কেজি
পৃথিবীপৃষ্ঠে অভিকর্ষজ ত্বরণ g = ৯.৮
মিটার/সেকেন্ড২
পৃথিবীপৃষ্ঠে আমার ওজন= ৫০ × ৯.৮
= ৪৯০ নিউটন
চাঁদে আমার ওজন= ৫০ × ১.৬৩ নিউটন
= ৮১.৫০ নিউটন
সুতরাং বলা যায়, চাঁদে বস্তুর ওজন কমে। দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে বস্তন ওজনও কমে।
(৩) একটি চকচকে কাঁচের গ্লাসে কিছু পানি নাও। এবার গ্লাসের মধ্যে একটি পাথর ফেলে দাও। এবার নিচের কাজ গুলো কর।
উত্তর: আমি একটি চকচকে গ্লাসে কিছু পানি নিলাম। তারপর গ্লাসের মধ্যে একটি পাথর ফেলে দিলাম। যে পরিবর্তন দেখা যাবে তা নিচে দেওয়া হলো
আমি যখন গ্লাসের উপর দিয়া সরাসরি পাথরটিকে দেখলাম তখন মনেহল, পাথরটি তার নিজস্ব অবস্থান থেকে কিছুটা উপরে মনে হয়। এবং পাথরটির আকার কিছুটা বড় মনে হয়। এমনটি ঘটার কারণ আলোর প্রতিসরণ। আলো এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে গেলে মাধ্যমের ঘনত্বের কারণে আলোর দিক পরিবর্তন হয়। এরমানে হলো আলো ঘন মাধ্যম থেকে হালকা মাধ্যমে এলে আলো সরল পথ পরিবর্তন করে। অর্থাৎ আলো কিছুটা মোটা এবং উপরে দেখায়।
সুতরাং পানি ভর্তি কাঁচের গ্লাসে পাথর এরূপ আকার ও অবস্থানগত পরিবর্তন হলো আলো প্রতিসরণেরই কারণ।
.
কোন সমস্যা হলে কমেন্ট করুন এবং পরবর্তী এ্যাসাইনমেন্টগুলো পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।