আজকে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।
প্রায় ৫-৬ মাস ধরে “পাই নেটওয়ার্ক” প্লাটফর্মে আছি। আমার এক বন্ধু এক প্রকার জোরাজুরি করে আমার মোবাইলে এপটি ইন্সটল করে দেয় আর বলে প্রতিদিন একবার এপে ঢুকে মাইনিং চালু রাখতে,কিছুদিন পর যখন এই প্রজেক্ট মেইন নেটে পৌছাবে তখন পাই কয়েন উইথড্র করে বিক্রি/ট্রেড করতে পারবো। ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে মোটামুটি অভিজ্ঞতা থাকলেও আমার মোটেও ইচ্ছে ছিলো অতিরিক্ত একটা এপ ফোনে রাখার,শুধুমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ডের কথা ভেবে ভাবলাম থাকুক,অনেক এপ আছে ফোনে, একটা অতিরিক্ত থাকলে ক্ষতি কি ?
আজ প্রায় ৫-৬ মাস পরে বলতে গেলে আমি এই এপের উপর আসক্ত হয়ে গেছি। প্রতিদিন প্রায় ৮-১০ ঘন্টা এই এপেই কাটাই। না, ডেইলি এটাতে মাইনিং চালু করতে ১০-১৫ সেকেন্ডের বেশী লাগে না। বাকি সময় আমি এটার বিভিন্ন চ্যাট রুমে বিচরণ করি। বিশ্বব্যাপি পাই নেটওয়ার্ক মেম্বারের দেখা মিলে চ্যাট রুমগুলোতে। ভারত,পাকিস্তান, ইউরোপ,আফ্রিকা সকল জায়গা থেকে মানুষ পাই কয়েন মাইনিং করছে এই এপ দিয়ে।
চ্যাট রুমের মোডারেটর,এডমিনরাও খুব ফ্রেন্ডলি এবং হেল্পফুল।রিসেন্টলি বাংলা ভাষাভাষী মেম্বারদেরকে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন দেবার জন্য পাইওনিয়ার (বাংলা) চ্যাট রুমও ক্রিয়েট করেছে পাই নেটওয়ার্ক কতৃপক্ষ। সেখানে প্রচুর বাঙ্গালী মেম্বারের দেখা মিলে। সবাই প্রচুর আশাবাদী।
আমার এতোদিনের অবজারভেশন আর অভিজ্ঞতা বলে, এটা ১০০% একটা জেনুইন প্রজেক্ট। স্ক্যাম হবার কোনো চান্সই নেই। এটার ক্রিয়েটর “কোর টিম” নামে পরিচিত, যারা বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আর গ্রাজুয়েট। তাও আবার স্ট্যানফোর্ডের “ব্লকচেইন সাবজেক্ট” এর প্রফেসর। পাই নেটওয়ার্ক এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে “FAQ” আর “White paper” পেইজে এই প্রজেক্ট এর সবকিছু খুব ডিটেইলসে আর ওপেনলি বর্ণনা করা হয়েছে, কোনো গোপনীয়তা নেই। সারা বিশ্বব্যাপি মেধাবী ডেভেলপাররা বর্তমানে এই প্রজেক্ট এ নিজেদের সময় আর মেধা দিচ্ছে এবং এই বছরের শেষ দিকে পাই কয়েন মার্কেটে রিলিজ হবে। তখন পাই নামক ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা-বেচা বা ট্রেড করা যাবে খুব সহজেই।
আপনার যদি ভালো একটা স্মার্ট ফোন থাকে তাহলে আপনিও আজ থেকে বিনামূল্যে পাই ক্রিপ্টোকারেন্সি জমাতে পারবেন এবং ভবিষ্যতে লাভবান হতে পারবেন।পদ্ধতি একদম সহজ, পাই নেটওয়ার্ক এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অথবা প্লে-স্টোর / এপ স্টোর থেকে “Pi Network” এপ নিজের ফোনে ডাউনলোড করুন, সঠিক ইনফরমেশন দিয়ে নেটওয়ার্ক এ রেজিষ্ট্রেশন করুন ব্যাস। এবার শুধুমাত্র প্রতিদন একবার করে এপে ঢুকে আপনার কয়েন মাইনিং প্রসেস চালু রাখুন, পাই কয়েন নিজে নিজেই আপনার একাউন্ট এ জমা হবে।
নিচে একদম নিরপেক্ষভাবে “পাই নেটওয়ার্ক” এপের কিছু সুবিধা আর অসুবিধা তুলে ধরা হলোঃ-
সুবিধাগুলোঃ-
১/ ইউজার ফ্রেন্ডলি এপ, আংগুলের এক টিপে পাই কয়েন মাইনিং চালু করা যায়।
২/ এপটি একদম ইকো-ফ্রেন্ডলি, কোনো অতিরিক্ত ডাটা কাটে না, ফোনে কোনো অতিরিক্ত জায়গা দখল করে না, এমনকি ব্যাটারির লাইফও একদম নষ্ট করে না।
৩/ পাই কয়েন মাইনিং এর জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ব্লকচেইন উপর অতিরিক্ত কোনো জ্ঞান থাকার দরকার একদম পরে না, যেকোন কেউ খুব সহজে নিজের জন্য কয়েন মাইনিং করতে পারবে।
৪/ এপের চ্যাট-রুম গুলোতে অনেক ভালো ভালো, অভিজ্ঞ মেম্বার, মোডারেটর /এডমিনের দেখা মিলে যারা নতুন মাইনারদেরকে হেল্প বা গাইডলাইন দেবার জন্য ২৪ ঘন্টা এক্টিভ থাকে।
অসুবিধাগুলোঃ-
১/ প্রতিদিন একবার এপে ঢুকে আপনাকে মাইনিং বাটন চাপতে হবে, না হলে আপনি ইন-এক্টিভ হয়ে যাবেন আর নতুন পাই কয়েন আপনার একাউন্টে যোগ হবে না।
২/ পাই নেটওয়ার্ক এর KYC ভেরিফিকেশন নিয়ে বর্তমানে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে, তবে এটা টেম্পরারি। রিসেন্টলি “কোর টিম” ঘোষণা দিয়েছে তারা শীঘ্রই বিকল্প কিছু KYC ভেরিফিকেশন এপস নেটওয়ার্ক এ আনবে যাতে সকল মেম্বার খুব ইজিলি নিজেদের KYC ভেরিফিকেশন করতে পারে।
৩/ পাই প্রজেক্ট বর্তমানে ফেইজ-২ আছে তাই এই অবস্থায় আপনি আপনার জমানো কয়েন উইথড্র দিতে পারবেন না। এপ থেকে কয়েন উইথড্র দিবার জন্য আপনাকে ২০২১ এর শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ২০২১ এর শেষ দিকে পাই প্রজেক্ট মেইন নেটে প্রবেশ করবে তখন সেটা ওয়ার্ল্ড-ওয়াইড রিলিজ হবে এবং সবাই নিজ নিজ কয়েন বিক্রি করতে পারবে।
সবকিছু মিলিয়ে, পাই প্রজেক্ট এমন একটা প্রজেক্ট যেটা লাইফ-টাইমে একবারই আসে। আপনি এটা মিস করলে খুব সম্ভবত আপনাকে ভবিষ্যতে আফসোস করতে হবে যেভাবে এখন সবাই বিটকয়েন এর জন্য আফসুস করছে।
তবে পাই নেটওয়ার্ক এ রেজিষ্ট্রেশন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একটা ইনভাইটেশন কোডের প্রয়োজন পরবে, ইনভাইটেশন কোড ছাড়া আপনি এই প্লাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না।