সরকার ভিলা: লোকে এই বাড়িটিকে ভূত এর বাড়ি বলে জানে। লোকে বলে এখানে নাকি বিশ বছর আগে
এক মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এই ভিলার পাশেই রাজুর বাসা। রাজুর একটা ডিটেকটিভ এজেন্সি আছে। এই এজেন্সির লিডার রাজু। রাজু এবং আরও চারজন মিলে এই এজেন্সি খোলে। রাজুর বেশ নামডাকও আছে সেই এলাকায়। এক রাতে একজন লেখক আত্মাদের নিয়ে মজাদার কিছু বই লেখার জন্য সরকার ভিলায় আসে। ভিলাটির ওয়াচম্যান লেখককে বারণ করছিল ভেতরে রাত না কাটাতে। হঠাৎ একটি কান্নার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় এবং ওয়াচম্যান বলে, ‘আত্মা কাঁদছে’।
এ বলে ওয়াচম্যান দৌড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু লেখক ভয় পেলেন না। সে আর উৎসাহে ভেতরে যায় এবং সেখানে সে একটি ঘড়ের ভেতর থেকে নুপুরের আওয়াজ পায়। লেখক সেই ঘরে যায় এবং ঘরটির লাইট হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। লেখক বলে, ‘লাইট বন্ধ হল কিভাবে?’ সে এ নিয়ে বেশি কিছু ভাবল না। সে তার পকেট থেকে লাইটার জ্বালিয়ে ঘরে হাঁটতে থাকে। হঠাৎ ঘরের এক পাশ থেকে আলো দেখা যায়। আলোর মাঝে এক ছায়াও দেখা যায়। লেখক তার ক্যামেরা বের করে ছবি তুলতে থাকে। এবং হঠাৎ পরে যান। পরের দিন রাজুর দল তদন্তের জন্য আসে। তারা বাড়িটি ভাল মত লক্ষ্য করতে লাগলো। এবং একটি ক্যামেরা খুঁজে পেল।
তারা বুঝতে পারে যে এই ক্যামেরাটি লেখকের। রাজু দেখে গতকাল রাতে ২৫ টি ছবি তোলা হয়। কিন্তু সব ছবি ছিল কালো। রাজুর দলের একজন বলে, ‘রাজু, ভূতের ছবি তোলা যায় না। তারপর তারা লাশটিকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। তারা জানতে পারে যে লোকটি হার্ট এটাকে মারা গেছে। তারা আরো জানতে পারে যে, লোকটি হার্ট এটাকের পরে তার গলা এমন ভাবে টেপা হয়েছিল যে তার গলার সব হাড় ভেঙ্গে গিয়েছে। তখন সবাই ভাবে যে এই কাজটি ভূতের। কারণ কোন মানুষের পক্ষে এতো জোরে গলা টেপা সম্ভব নয়। তখন রাজু সরকার ভিলায় রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তখন একজন ভয়ে কাঁপা গলায় বলে, ‘রাজু, সরকার ভিলায় রাত না কাটালে হয় না? একবার আমার চাচার একটি ভূতের সাথে ধাক্কা লেগেছিল। তারপর সে এক সপ্তাহ মেয়ের গলায় কথা বলেছিল।
আমার যদি এমন হয়?’ রাজু বলে, ‘না, আমি সেখানেই রাত কাটাব।’ পরের দিন রাতে রাজু ও তার দল সরকার ভিলায় রাত কাটাতে যায় এবং তারা দুই দলে ভাগ হয়ে যায়। এমন সময় এক দল নূপুরের আওয়াজ শুনতে পায় এবং এবং সেই দলের একজন যায় কোথা হতে নূপুরের আওয়াজ হচ্ছে তা দেখতে। অন্যজন হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়। যে ঘর থেকে আওয়াজ আসছিল সেখানে গিয়ে দেখা যায় কেউ নেই। যে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল ও খুব ভাল মেয়েদের গলায় কথা বলতে পারে। ওর নাম আদন। আদনও সেই ঘরটিতে যায়। ও তার দলের সদস্যকে ভয় দেখানো চেষ্টা করে। এমন সময় তারা দেখল ঘরের ভেতর থেকে কে যেন পালিয়ে গেল। তারা উভয়ই তার পিছু করতে থাকে। এমন সময় দ্বিতীয় দলটি শুনতে পায় যে ছাদ থেকে কে যেন বলছে, ‘আমাকে মেরো না দয়া করে।
আমি আরও বাঁচতে চাই।’ দ্বিতীয় দলের সবাই ছাদে গেল এবং দেখল যে একটি মেয়ে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নিচে পরে গেছে। তারা নিচে গিয়ে দেখে যে কেউ নেই। -রাজু পরের দিন সকালে ওয়াচম্যান কে জিজ্ঞেস করে, এ বাড়ির মালিক কে?’ ওয়াচমেন বলে,ফাহিম মাহমুদ।’ ‘সে কোথায় থাকে?’ ‘আমেরিকায়।’ ‘আচ্ছা, এ বাড়িতে কে কে কাজ করত? সানজিদা নামের এক মহিলা। রাজু ও তার টিম সানজিদাকে খুঁজে বের করে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করে।
তারা সানজিদার কাছ থেকে জানতে পারে যে এখানে ২০ বছর আগে রকি নামের একটি ছেলে একটি সোনার মূর্তি ও কয়েক কোটি টাকা লুকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু রকি পুলিশের সাথে সংঘর্ষে মারা গেছে। তারা এই বাড়িটির ভেতর তন্ন তন্ন করে খুঁজতে থাকে। রাজু হঠাৎ খেয়াল করে কারপেটের নিচে কিছু একটা উঁচু হয়ে আছে। রাজু কারপেটটি সরায় এবং কাঠের একটা দরজা। রাজু দরজাটি খোলে এবং তারা সবাই সেই দরজা দিয়ে নিচে যায়। ও নিচে গিয়ে তারা অনেকগুলো বক্স দেখতে পায়। তখন রাজু বলে, ভূত তাহলে সব লুট করে নিয়ে গিয়েছে। তারা ঘরটিতে প্রমাণ খুঁজতে থাকে। তখন একজন বলে, ‘বুঝালি রাজু, ভূতের হাঁপানি রোগ আছে তারা সবাই তখন ওয়াচম্যান কে সন্দেহ করতে শুরু করে। তারা ওয়াচম্যানের বাসায় যেয়ে দেখতে পায় ওয়াচম্যান কিছু একটা খুঁজছে। তখন রাজু ওয়াচম্যানকে ইনহেলার দেয় এবং ওয়াচম্যান তা গ্রহণ করে।
তারপর একজন মেয়ের গলা বের করে বলে, ‘এ সত্যি কোথা বল না হলে তোকে মেরে ফেলব।’ পরে ওয়াচম্যান বলে, “স্যার আমাকে বাঁচান। আমি সব বলছি। রাজু বলে, ‘থামো। ওকে আর ভয় দেখিও না।’ তারপর ওয়াচম্যান বলে, “আমি শুধু মূর্তি আর টাকাগুলো বের করে সানজিদাকে দিয়ে দিয়েছি। সানজিদা আজ রাতে এ দেশ থেকে চলে যাবে। এ ছাড়া আমি আর কিছু জানি না। তখন তারা সানজিদাকে ধরার জন্য রাস্তায় দ্রুত পেতে থাকে। এবং দেখে সানজিদা সি এন জি থেকে নেমে একটি বাড়িতে ঢোকে। তারা সে বাড়িতে গিয়ে দেখে একজন বুড়ো মানুষ শুয়ে আছে, রাজু বলে, ‘আপনি কি কাউকে এ বাড়ির ভেতর আসতে দেখেছেন? সে বলে, “না। মিথ্যা কথা বলবেন না। সত্য বলুন।’ ‘আমার কথা বিশ্বাস না হলে নিজেই খুঁজে দেখুন কাউকে পান কিনা।
সবাই বাড়িতে খুঁজতে থাকে। হঠাৎ তারা লক্ষ্য করে বুড়ো মানুষটি নেই। রাজু বলে, ‘তাড়াতাড়ি চলো। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে ওকে পালাতে দেওয়া যাবে না। তারা হাঁটতে হাঁটতে এক ফটোগ্রাফারকে দেখল। রাজু বলে, ‘আপনি এত রাতে এখানে কি করছেন?’ সে বলে, ‘পাখির ছবি তুলছি। আমি পাখির ছবি তুলে ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিনে দেই।’ এতো রাতে আপনি কিভাবে পাখির ছবি তুলছেন?’ তখন সে শিস বাজায় এবং একটি পাখির আওয়াজ শোনা যায়। তখন তারা ফটোগ্রাফারকে ছেড়ে দেয়। হঠাৎ একজন বলে যে, ‘ওই সানজিদা। কারণ ওই ফটোগ্রাফার এবং ওই বুড়ো মানুষ দুজনের হাতে একই ট্যাটু ছিল। তখন তারা সানজিলাকে ধরে এবং জানতে পারে যে ওই রকি। রকি এই ভূতের ঘটনা ছড়িয়েছে এবং পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য রকি মেয়ে সেজেছিল। শেষে রকির ফাঁসি হল এবং সেই মূর্তি ও টাকা সরকারকে দেওয়া হলো।