ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে ফ্রীতে মেসেজ, কল, ভিডিও কল করার অনেকগুলো অ্যাপ রয়েছে। তবে সবগুলো অ্যাপের তুলনায় অন্যতম জনপ্রিয় একটি অ্যাপ হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp)। আপনি যদি একজন নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চিত আপনি এই অ্যাপটি ব্যবহার না করলেও এর নাম হয়তো কখনো শুনে থাকবেন। যদি না শুনে থাকেন তবে আজকের আর্টিকেলটা পুরো পড়ুন। whatsapp/হোয়াটসঅ্যাপ এর নাড়িভুঁড়ি নিয়ে থাকছে আজকের এই আর্টিকেলটা।
পোস্টে যা যা থাকবেঃ
whatsapp এর শুরু?
whatsapp প্রোগ্রামিং ভাষা কি? মানে কোন প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়ে তৈরি?
whatsapp কেন জনপ্রিয়?
whatsapp কিভাবে আয় করে?
whatsapp এর মালিকানা?
হোয়াটসঅ্যাপ কি? (What Is WhatsApp?)
সোজা কথায় হোয়াটসঅ্যাপ হচ্ছে এমন একটি অ্যাপ যেটির মাধ্যমে আপনি ইন্টারনেট ব্যবহাকার করে ফ্রীতে মেসেজ, ভিডিও কল, ভয়েস কল, ভয়েস পাঠানো, ছবি/ভিডিও শেয়ার করতে পারবেন। খুবই সহজে মেসেজ, ভিডিও/অডিও কল, ছবি/ভিডিও শেয়ার করতে পারার জন্য আজ হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপটি এত জনপ্রিয়। বর্তমানে প্রায় ১৮০টির বেশি দেশের প্রায় ২ বিলিয়ন মানুষ WhatsApp ব্যবহার করছেন।
WhatsApp এর শুরু:
আজ থেকে প্রায় ১৩ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে যাত্রা শুরু করেছিল হোয়াটসঅ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ এর অরজিনাল মালিক হচ্ছে Brian Acton, Jan Koum, এই দুইজন। তারা দুজনেই সর্বপ্রথম এই অ্যাপটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ২০১৪ সালের দিকে WhatsApp যুক্ত হয় ফেসবুকের সাথে। আর তাই বর্তমানে হেড কোম্পানি meta এর আওতাধীন অ্যাপ হিসেবে ফেসবুকের মতো কাজ করে যাচ্ছে WhatsApp।
whatsapp প্রোগ্রামিং ভাষা কি? মানে কোন প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়ে তৈরি?
অনেকের মাথায় প্রশ্ন আসতে পারে কোন ধরনের প্রোগ্রামিং ভাষায় বা কোড দ্বারা তৈরি হয়েছে এই আপনি। ‘Erlang programming language’ দ্বারা তৈরি করা হয় WhatsApp।
WhatsApp কেন জনপ্রিয়?
বিভিন্ন কারণে জনপ্রিয়তার শেখরে পৌঁছে গিয়েছে এই অ্যাপটি। চলুন জেনে নেই কি কি কারণে এই অ্যাপটি এতটা জনপ্রিয়। যেমন:
১. বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়
২. সহজেই যোগাযোগ ব্যবস্থা
৩. নিরাপদ মেসেজ এবং কল
৪. ইমোজি
৫. দারুন সব ফিচার
১. বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়
WhatsApp জনপ্রিয় হওয়ার একটি বড় কারণ হচ্ছে এটি যেকেউ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারে। শুধুমাত্র ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই আপনি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে সকল ধরনের মেসেজ, কল সকল কিছুই করতে পারবেন। এটি ব্যবহার করতে খুব বেশি এমবির প্রয়োজন হয়না। সবার সামর্থের মধ্যেই রয়েছে।
২. সহজেই যোগাযোগ ব্যবস্থা
হোয়াটসঅ্যাপ জনপ্রিয় হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা। অর্থাৎ হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে কম সময়ের মধ্যেই নতুন কারো সাথে আপনি যোগাযোগ করতে পারবেন কোনো ঝামেলা ছাড়া। আর এই সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্যেই হোয়াটসঅ্যাপ এত জনপ্রিয়।
৩. নিরাপদ মেসেজ এবং কল
কোনো অ্যাপ ব্যবহার করার পূর্বে আমরা অনেকে ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার বিষয়টি কতটা শক্তিশালী এসে বিষয়ে খোজ নিয়ে থাকি। হোয়াটসঅ্যাপ অতীব জনপ্রিয় হয়ে উঠার আরো একটি বড় কারণ হচ্ছে তারা নিরাপদে মেসেজ এবং কল এর সুবিধা গ্রাহকদের প্রদান করে থাকে।
৪. ইমোজি
মেসেজ করার ক্ষেত্রে ইমোজি আর ব্যবহার আমরা সবাই করি। মেসেঞ্জার, ইমো ,টেলিগ্রাম ইত্যাদি অ্যাপগুলোর ইমোজি এর তুলনায় হোয়াটসঅ্যাপ এর ইমোজিগুলো বেশ দারুন। অনেক ব্যবহারকারীরা এসব ইমোজিগুলোর জন্য হোয়াটসঅ্যাপ বেশি ব্যবহার করে থাকে।
৫. দারুন সব ফিচার
হোয়াটসঅ্যাপ এর মধ্যে রয়েছে নিত্যনতুন সব ফিচার, এসব ফিচার এর মধ্যে একটি হচ্ছে WhatsApp Status, যেকেউ চাইলে কয়েক সেকেন্ড এর একটি হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস তৈরি করে সেটিকে শেয়ার করতে পারেন। আর এটির জন্যেও বেশ জনপ্রিয় এই অ্যাপটি। এছাড়াও আরো নানাবিধ কারণে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় এই অ্যাপটি।
WhatsApp কিভাবে আয় করে?
হোয়াটসঅ্যাপ In app purchase সিস্টেমে আয় করে না, গ্রাহকদের কোনো ফিচার ব্যবহার করার জন্য হোয়াটসঅ্যাপকে কোনো সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হয়না, মেসেঞ্জার এর মত কোনো থার্ড পার্টি এড হোয়াটসঅ্যাপে দেখানো হয়না। তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ কিভাবে আয় করে?
২০১৫ সালে ফেসবুক যখন হোয়াটসঅ্যাপকে ১৫০ কোটি ডলারের বিনিময়ে কিনে নিয়েছিল তখন থেকে শুরু হয় এই প্রশ্নটি নিয়ে ঝড়। কিভাবে আয় করে হোয়াটসঅ্যাপ? ইন্টারনেটে যে জিনিসটির সবচেয়ে হাই ডিমান্ড বা ভ্যালু বেশি সেটি হচ্ছে একজন ব্যবহারকারীর ডেটা। হোয়াটসঅ্যাপ এর ব্যবহারকারীদের ডেটা ফেসবুক বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন বা বিজনেস ব্যাবস্থা আরো ভালোমতো পরিচালনা করতে সক্ষম হয়।
বুঝতে পারেন নি? আমরা যে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে মেসেজ, কল করি এগুলো হচ্ছে ব্যবহারকারীর ডেটা। ফেসবুক এসব ডেটা কালেক্ট করার মাধ্যমে জানতে পারে মানুষের চাহিদা এর বিষয়ে। এবং তারা সে অনুসারে বিজ্ঞাপন ব্যাবস্থা বা বিজনেস পরিচালনা করতে সক্ষম হয়। আর এভাবেই আয় করে থাকে ফেসবুক। ফেসবুক বলার কারণ হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ এর হেড কোম্পানি কিন্তু মেটা, সে অনুসারে হোয়াটসঅ্যাপ সরাসরি কোনো অর্থ উপার্জন করে না।
কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ দ্বারা হেড কোম্পানি তাদের ইনকাম সোর্স আরো জোরদার করতে সক্ষম হয় সহজ কথায়।
হোয়াটসঅ্যাপ এর মালিকানা?
উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে ফেসবুক কতৃক ১৫০ কোটি ডলারের বিনিময়ে কিনে নেওয়া হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপকে। সে অনুযায়ী বর্তমানে এই অ্যাপ এর মালিকানাধীন রয়েছে ফেসবুক এর হেড কোম্পানি মেটা (Meta)।
শেষ কথা
আজকে আমরা হোয়াটসঅ্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে পারলাম। আশা করছি আর্টিকেলটা আপনাদের ভালো লেগেছে, ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন, ধন্যবাদ।