প্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাই ও বোনেরা,
আসসালামু আলাইকু। ঘরে ও বাইরে দেশ এবং বিদেশে যে যেখানে যে অবস্থায়ই আছেন সবাইকেই জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বন্ধুরা কেমন আছেন আপনারা? জানি আপনারা ভালো নেই, তার কারণ বিশ্বজুড়ে মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবে আজ আমাদের ঘরের ভিতরেই থাকতে হচ্ছে। এটা আসলেই কস্টের বিষয়।
তবে ঘরে থাকটাই বর্তমান সময়ের জন্য উত্তম। আর যারা ছাত্র ছাত্রী আছেন তাদের জন্যই এই সময়টা একটা উত্তম সময় বলে ধরে নিব। তার কারণ যার বই পোকা আছেন তারাই সময়টাকে খুব বেশি কাজে লাগাতে পারছেন। তবে শুধু বই পোকাদের জন্য উত্তম হলে চলবে না সকল ছাত্র ছাত্রী ভাই ও বোনের জন্য সময়টা উপযুক্ত বলে মেনে নিতে হবে।
বন্ধুরা আমরা সবাই পড়াশোনা করি বা করে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না আমাদের কি পড়া উচিৎ, আমাদের ভবিষ্যতে কোন বিষয়টি বেশি প্রয়োজন। অথবা এই বিষয়ে সঠিক নির্দেশনাও আমরা ঠিক সময়ে পাই না বা এই নির্দেশনা দেবার মতও অনেক সময় আমাদের পাশে কেউই থাকে না। ফলে মন গড়া একটা বিষয় নিয়েই পড়াশোনা শুরু করি।
আর যখন আমরা বুঝতে পারি যে আমি যদি শুরু থেকেই এই বিষয়ে পড়তাম তাহলে আজ আমাকে বেকার থাকতে হতো না। আমি নিজেই নিজের পায়ে আজ প্রতিষ্ঠিত হতে পারতাম। হা বন্ধুরা এটাই সত্য আর এটাই হয়ে আসছে আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে যেখানে আমাদের গাইডলাইন দেবার মত কেউ থাকে না।
তো বন্ধুরা আপনাকে আর এই গাইডলাইনের অভাবে পড়তে হবে না। আপনি যদি গ্রাথোর ডট কম সাইটের সদস্য হয়ে থাকেন তাহলে মনে করবেন আজ আপনি পেয়ে গেছেন আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনার গাইডলাইন। স্কুল যাবার কথা যাচ্ছি, কলেজে ওঠার কথা উঠছি, একটা বিষয় নিয়ে পড়লেই হলো।
এই ধরনের চিন্তাধারার ছাত্র ছাত্রীদের জন্যই আজকের পোস্ট। বিষয়টি আপনারা থাম্বেল দেখেই এতক্ষনে বুঝতে পেরেছেন। হা বন্ধুরা বিষয়টি আইন নিয়েই। কেন আপনি আইন নিয়ে পড়বেন?? মাত্র দুইটি বাস্তব উদাহরন দিয়ে আপনাদের বুঝিয়ে দিবো এবং আজকের পোস্টের ইতি টানবো। বন্ধুরা পোস্টটি এড়িয়ে গেলেন তো আপনার কপাল আপনিই পোড়ালেন। সুতরাং এড়িয়ে না গিয়ে মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়ুন।
উদাহরন ১ঃ-
সুধীর রঞ্জন বিশ্বাস, বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার আমড়াগাছিয়া গ্রামের একটি নিম্নবিত্ত ঘরে জন্ম নেওয়া একজন সাধারণ মানুষ। স্বভাবে সাদাসিধা ও সহজ সরল। শিক্ষায় তেমন উচ্চতর ডিগ্রি না থাকলেও হাইস্কুল ডিঙিয়ে কলেজ পর্যন্ত উঠে ছিলেন। অভাব ও বয়সের তাড়নায় আর পড়াশোনা না করে বিয়ে করে সংসার জগতে প্রবেশ করেন।
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন আমি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে পারিনি বটে কিন্তু আমার প্রতিটি সন্তানকে আমি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবো। একে একে তার পাঁচটি ছেলে সন্তান তার অভাবি সংসারে জন্ম নেয়। নেমে আসে অভাবের কাল জৈষ্ঠ্যী ঝর। জানা গেছে একটি মেয়ে সন্তানের জন্যই তার পর পর পাঁচটি ছেলে সন্তান তার ঘরে জন্ম নেয়।
কিন্তু তার মনে একটু হালকা কস্ট থাকলেও তার প্রতিজ্ঞার কথা তিনি ভুলেন নি। অভাবি সংসারের দায়ভার একা বহন করতে কস্ট হচ্ছিল বলে তার স্ত্রীও তার সাথে যোগ দিলেন সংসারের আয় বাড়ানোর পথে। ধীরে ধীরে সংসারে কিছুটা পরিবর্তন দেখা দেয়। বড় ছেলে এমএ পাস করে, কিন্তু কোন চাকরি পাচ্ছে না। পাশাপাশি মেঝ ছেলেও এম এ পাস করছে কিন্তু কোন চাকরি পাচ্ছে না। বড় ভাইদের এই অবস্থা দেখে সেজ ছেলে নিজেই তার এসএসসি পাস যোগ্য চাকরি ধরে নিলেন।
পরবর্তীতে অবশ্য তিনিও চাকরির পাশাপাসি রাস্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স করেন। তার পরের ভাইটা একটু মেধাবি ছিলেন বলেই সেজ ভাইয়ের মত তিনিও মাস্টার্সর কমপ্লিট করে একটি সরকারি মাদক অধিদপ্তরের একটি সম্মানযোগ্য পদে চাকরী করছেন। আর ছোটটাও কলেজ ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পন করছেন। কিন্তু কেউই এমন কোন শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে নি যে শিক্ষায় চাকরীর জন্য ছুটাছুটি করতে না হয়। তার কারন একটাই তাদের বাবার প্রতিজ্ঞা ছিল উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করা কিন্তু কে কি হবে তার গাইডলাইন তিন তাদের দেন নি। কারন তিন জানতেনই না গাইডলাইন কি জিনিস।
উদাহরণ ২ঃ-
সংসারের অভাব মেটাতে কোন চাকরি না পেয়ে তারই মেঝো ছেলে ঢুকে গেলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। কিছুদিন পরে তাকেই প্রথম বিয়ে করানো হলো। কিন্তু বিধি বাম, শুরু হয়ে যায় সাংসারিক গোলযোগ। যাকে বিবাহ করেছেন তার সাথে অন্য কোন ছেলের সম্পর্ক থাকায় সম্পর্কটি বিচ্ছেদের পর্যায়ে চলে যায়। কিন্তু এখানে সমস্যা আরো জটিল থেকে জটিলতার দিকে আগাতে থাকে। তার কারন হিন্দু ধর্মে স্বামী স্ত্রীর বন্ধন অটুট থাকে একে বিচ্ছেদ ঘটানো যায় না এমনকি বাংলাদেশ সহ সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু আইনে স্ত্রী কিংবা স্বামী পরিত্যাগের জন্য কোন ধারাই নেই।
তারপরেও থেমে ছিল না সে সহ তার পরিবার, এর আইনি সমাধানের জন্য বিভিন্ন আদালতের বিভিন্ন আইনজীবীর দারস্থ হতে হয়েছে তাদের। অবশেষে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষয় ঘটিয়ে তার বিচ্ছেদ জনিত সমস্যার সমাধান করেছেন। তো বন্ধুরা এই উদাহরণ থেকে আমরা কি বুঝলাম? সে কিন্তু উচ্চ শিক্ষিত কিন্তু তারপরেও তাকে আইনের সহায়তা নিতে হয়েছে। আজ যদি সে কিংবা তার পরিবার থেকে কেউ আইন নিয়ে পড়াশুনা করতো এমনকি চাকরীর পাশাপাশি যদি আইন বিষয়ে একটা ডিগ্রী থাকতো তাহলে আজ তাকে এত এত টাকার অবক্ষয় ঘটাতে হতো না। আজ সে ও তার পরিবার বুঝলো আইন নিয়ে পড়ার উপকারিতা। এটাই গাইডলাইন যা শুরু থেকেই গ্রহণ করতে হয়।এবার আসুন আজকের পোস্টের উদ্দেশ্যে।
তো বন্ধুরা উপরের দুটি উদাহরণ যদি আপনারা ভালোভাবে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন ডিপার্টমেন্টাল শিক্ষা ও প্রফেশনাল শিক্ষার গুরুত্ব কতখানি। হা বন্ধুরা এখানে একটি বিষয় উহ্য থেকে যাচ্ছে আর সেটা হলো আপনারা হয়তো ভাবছেন ডিপার্টমেন্টাল শিক্ষাকে এখনে ছোট করা হচ্ছে। না, এটা একদম ভাববেন না। ডিপার্টমেন্টাল শিক্ষার পাশাপাশি প্রফেশনাল শিক্ষাও করা যায়। যেমন ধরুন আপনি সমাজ কল্যান নিয়ে অনার্স শেষ করছেন এখন রিতিমত আপনাকে ওই সাবজেক্টের উপর মাসটার্স করারা কথা। হা অবশ্যই আপনি ওই সাবজেক্টে মাসটার্স করার জন্য ভর্তি হবেন পাশাপাশি তখনি আপনি এলএলবিও ভর্তি হতে পারবেন। আর এটাকেই বলা হয় ডিপার্টমেন্টাল শিক্ষার পাশাপাশি প্রফেশনাল শিক্ষা গ্রহণ করা। তো দেখেন বন্ধরা এক দিকে আপনি সমাজ কল্যান নিয়ে মাসটার্স করলেন আর অন্য দিকে আপনি এলএলবিও কমপ্লিট করে ভারকাউন্সিল থেকে এডভোকেট পাশের সনদও নিলেন।
একবার ভাবুনতো আপনাকে এখনঃ
ক। চাকরির পিছনে দৌড়াতে হবে কি না?
খ। সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য অন্য আইনজীবীর পিছনে দৌড়াতে হবে কি না?
গ। কোন আইনজীবী এই সমস্যার সমাধান দিবে এটা আপনার বুঝার প্রয়োজন আছে কি না?
ঘ। কোন আদালতে গেলে আপনার সমস্যার সমাধান খুব শিগ্রই হবে এটা জানবেন কি না??
ঙ। আইন ব্যাপসা করবো না আমি চাকরি করবো এই সিদ্ধান্ত আপনি নিতে পারবেন কিনা?
চ। আমি চাকরিও করবো আবার আইন ব্যবসাও করবো দুই দিক থেকেই আপনি লাভবান কিনা?
বিবেচনা আপনার।
বিঃ দ্রঃ
একটা কথা না বল্লেই নয় আইন বিষয়ে পড়তে কোন সময় কিংবা বয়স আপনাকে বাধা দিবে না। আপনি যে কোন বয়সে এলএলবি ভর্তি হতে পারেন। তবে পড়াশোনা চলমান রয়েছে এমন একটি সময়ে ভর্তি হওয়াটাই উত্তম।
তো বন্ধুরা আমরা আসলে অনেকেই জানি না, আর জানার কোন মাধ্যমও আমাদের সামনে পড়ে না। আর তাই হেতুই আজকের এই পোস্ট। পোস্টটি যদি আপনার সামান্যতম উপকারে আসে কমেন্ট করতে একদম ভুলবেন না। সবাই-
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
মাস্ক পরুন ঘরে থাকুন।
করোনা প্রটোকল মেনে চলুন
সরকারি নির্দেশনা মেনে চলুন।