আসসালামু আলাইকুম
বর্তমানে কোভিড ১৯ এর কারনে পুরো পৃথিবি কেমন জানি থমকে গিয়েছে। সবথেকে বেশি সমস্যা হচ্ছে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষার্থীদের মুল্যায়নের জন্য পরিক্ষা নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা এই পরিস্থিতিতে। তাই অ্যাসাইনমেন্ট নেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট কাজ প্রদান করে সেগুলোর উপর অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহন করা হচ্ছে। অ্যাসাইনমেন্ট করার সহায়ক হিসেবে আমার এই লেখার উদ্দেশ্য।
আজ অষ্টম শ্রেনির ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার প্রথম অধ্যায়ের অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে লিখছি।
প্রশ্ন ১। “ইসলামের সাথে ঈমানের সম্পর্ক খুবই নিবিড়” কথাটির ব্যাখ্যা কর।
উত্তর ১। ইসলাম ও ঈমান এই দুটি শব্দ একে অপরের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। ইসলামের মূল বিষয় গুলোর প্রতি বিশ্বাসকেই ঈমান বলা হয়। ঈমান শব্দের অর্থ হল বিশ্বাস। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা, নবি-রাসুল, ফেরেশতা, আখিরাত তাকদির, এমন প্রতিটই বিষয়ের উপর মনে প্রানে বিশ্বাস আনাকেই ঈমান বলে। একজন মুসলিম হতে হলে সবার আগে ইসলামের প্রতিটি বিষয়ের উপর বিশ্বাস করতে হবে। অর্থাৎ ঈমান আনতে হবে।
ঈমানের তিনটি ধাপ রয়েছে।
ক অন্তরে বিশ্বাস করা
খ মুখে স্বীকার করা
গ তদানুসারে আমল করা।
মুলত ইসলামের যাবতীয় বিষয়ের উপর আন্তরিক বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি এবং তদানুযায়ী আমল করার নামই হল ঈমান। কাজেই আমরা বলতে পারি ইসলাম ও ঈমানের সম্পর্ক অতি নিবিড়।
প্রশ্ন ২। কপটতার নিদর্শন গুলো কী কী?
উত্তর ২। নিফাক শব্দের অর্থ কপটতা, ভন্ডামি, প্রতারণা ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায় মুখে ইমানের স্বীকার কিন্ত অন্তরে অবিশ্বাস করাকে নিফাক বা কপটতা বলা হয়। যে ব্যক্তি এরুপ করে তাকে বলা হয় মুনাফিক। কপটতার নিদর্শন হিসেবে নিচের তিনটি বিষয়কে গন্য করআ যায়। যেমন,
ক কথা বলার সময় মিথ্যা বলা।
খ কাউকে কথা দিয়ে সে কথা রক্ষা না করা
গ আমানতের খিয়ানত করা।
কপটতা বা মুনাফিক ব্যক্তি সমাজের জন্য বেশি ক্ষতিকর। তাই আমরা চেষ্টা করব উপরের কাজগুলো না করার।
প্রশ্ন ৩। নবি-রাসুলের পার্থক্য বর্ননা কর।
উত্তর ৩। নবি-রাসুলের পার্থক্যঃ পবিত্র কুরয়ান মাজীদে আমরা মাত্র ২৫ জন নবি-রাসুলের নাম দেখতে পাই। কিন্ত প্রকৃতপক্ষে তাদের সংখ্যা ছিল লক্ষাধিক। তাদের মদ্ধে সবাই রাসুল ছিলেন না। কিন্ন সবাই নবি ছিলেন। কিছু নবি, নবি ও রাসুল উভয়ই ছিলেন। নবি ও রাসুলের মধ্যে অর্থগত দিক দিয়ে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা যাদের(নবিদের ) প্রতি আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন কিংবা নতুন শরীয়াত প্রদান করেছেন, তারা হলেন রাসুল। আর যাদের(নবিদের ) প্রতি আসমানি কিতাব নাজিল করেননি কিংবা নতুন শরীয়াত প্রদান করেননি, তারা হলেন নবি । যেমন আমাদের মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.) ছিলেন নবি ও রাসুল। কারন মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.) এর উপর আসমানী কিতাব পবিত্র কুরআন মাজ়ীদ নাজিল হয়েছে। অপরদিকে হযরত হারুন (আ.) ছিলেন শুধু নবি, তার উপর কোন কিতাব নাজিল হয়নি। তাহলে আমরা বলতে পারি যে সকল রাসুলই নবি ছিলেন, কিন্ত সকল নবি রাসুল নন।
প্রশ্ন ৪। হাশরের ময়দানে কয় ধরনের সাফায়াত কার্যকর হবে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর ৪। শাফায়াত শব্দের অর্থ সুপারিশ বা অনুরোধ করা। ইসলামি পরিভাষায় ক্ষমা অ কল্যানের জন্য আল্লাহ তায়ালার নিকট নবি-রাসুলগনের সুপারিশ করাকে শাফায়াত বলে। হাশরের ময়দানে সাধারনত দুটি কারনে শাফায়াত করা হবে।
ক পাপীদের ক্ষমা ও পাপ মার্জনার জন্যে
খ পুণ্যবানদের মর্যাদা বৃদ্ধি অ কল্যান লাভের জন্যে
হাশরের ময়দানে্ দুই ধরনের সাফায়াত কার্যকর হবে।
ক শাফায়াতে কুবরাঃ একে শাফায়াতে উযমাও বলা হয় অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ শাফায়াত। এই শাফায়াত বা সুপারিশ এর পরই কেবল জান্নাতিগন জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। এরুপ শাফায়াতের অধিকার শুধুমাত্র মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.)এরই থাকবে।
খ শাফায়াতে সুগরাঃ কিয়ামতের দিন পাপীদের ক্ষমা অ পুন্যবানদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্যে শাফায়াত করা হবে। এই শাফায়াতের নাম হচ্ছে শাফায়াতে সুগরা। নবি-রাসুল, ফেরেশতা, শহিদ, আলিম, হাফিজ এ শাফায়াতের সুযোগ পাবেন।