বাংলাদেশের যদি সেরা কিছু পর্যটন কেন্দ্রের তালিকা করতে বলা হয় তাহলে কক্সবাজারের নাম নিঃসন্দেহে উপরের দিকে থাকবে। এক বিশ্বের সর্ববৃহত সমুদ্রসৈকতের টানেই প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ঘুরতে আসেন এইখানে। এর পাশাপাশি আরও কিছু দর্শনীয় স্থান হচ্ছে বোদ্ধ মন্দির, বার্মিজ মার্কেট, হিমছড়ি,মেরিন ড্রাইভ সড়ক ইত্যাদি।
দেশের পর্যটন খাতের একটি বড় অংশ আসে কক্সবাজার থেকে। তাই কক্সবাজারের সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য সরকারি এবং বেসরকারি মহল বেশ সবসময়ই সচেষ্ঠ থাকেন।যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের থেকে অনেক উন্নত। গড়ে উঠছে একের পরে এক আন্তর্জাতিক মানের ফাইব স্টার হোটেল। রয়েছে তাবু টেনে ক্যাম্প,প্যারাসেলিং এর মতো নানা বিনোদনের সুব্যবস্থা। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম বারের মতো কক্সবাজারে চালু হয়ে গেলো “উড়ন্ত রেস্তোরাঁ”!নামতা কিছুটা অপরিচিত হলেও উন্নত দেশ গুলো তে এই নাম টা নতুন নই।এর মানে হলো উড়ন্ত অবস্থায় বসে ভুড়িভোজ করার সুযোগ সম্বলিত হোটেল।মানুষের চিরকালই রয়েছে উড়ার প্রতি এক অন্যরকম ফ্যাশিনেসন।এইসব ফ্যাশিনেশন গুলো নিশ্চয়ই কোথাও ঘুরতে গেলে হয়তো আরও বেশি করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।
তাই দেশের প্রথম উড়ন্ত রেস্তোরাঁ হিসেবে আদর্শ স্পট কক্সবাজার না হয়ে অন্য কিছু হতেই পারে না। এরই জের ধরে বিগত ৩০ নভেম্বর উদ্ভোদন হয়ে গেলো দেশের প্রথম উড়ন্ত রেস্তোরাঁ ফ্লাই ডাইং!এইখানে রেস্তোরাঁ টি তে আপনি পাবেন আকাশে উড়ে উড়ে খাবারের স্বাদ উপভোগ করার সুযোগ। যার জন্য আপনাকে গুনতে হতে পারে ন্যুনতম চার হাজার থেকে আট হাজার টাকা। ব্যাপ্তি হবে দেড় ঘন্টার মতো।
সুগন্ধা পয়েন্টের হোটেল সি প্রিন্সেসের পাশের প্লটে দৃষ্টিনন্দনভাবে বসার পর্যাপ্ত স্থান রেখে চালু করা হয়েছে এই রেস্তোরাঁ। এর পশ্চিম পাশের খালি স্থানে বসানো আছে একটি ক্রেন।
বিশেষ এক পাটাতনে ২০ জনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ডাইনিং টেবিল-চেয়ারের উপরে ছাতার মতো এক ধরনের ছাদ দিয়ে চারপাশ খোলা রাখা হয়েছে।
পছন্দমতো খাবার অর্ডারের মাধ্যমে উড়ন্ত ডাইনিংয়ে বসে খাবার খেতে পারবেন।
এ সময় সমুদ্র সৈকত থেকে থেকে ১৬০ ফিট উপরে তুলে চারদিকে ঘুরতে ঘুরতে থাকবে পাটাতন। তখন উঁচুতে বসে উপভোগ করতে পারবেন সৈকত ও এর আশপাশের দৃশ্যও।
দেশের প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতির এই ‘ফ্লাই ভাইনিং’ নির্মাণ করেছে আন্তর্জাতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘ইউর ট্রাভেলস লিমিটেড’।তারা জানিয়েছেন যথাযথ নিয়মনীতি মেনেই তারা এই উদ্যোগ টি নিয়েছেন পর্যটন জেলা কক্সবাজার কে আরও আকর্ষণীয় করার পরিকল্পনায়।
নিঃসন্দেহে এইটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি ভিন্নধর্মী উদ্যোগ। এইসব ভিন্নধর্মী উদ্যোগ গুলো সফলতা পেলেই অন্য শিল্পউদ্যাক্তরাও আগ্রহী হয়ে উঠবেন আমাদের পর্যটন খাত নিয়ে।
১৬০-১৭০ ফুট উপরে সাগরের কোল ঘেঁষে উড়ন্ত রেস্তোরাঁয় খাবার খাওয়ার লোভ সামলান যথেষ্ট মুশকিলই বটে!তাই অনেকের নেক্সট ঘুরতে যাওয়ার বাকেট লিস্টে কক্সবাজার আবার নতুন ভাবে, নতুন আংগিগে জায়গা পাবে এই বিষয়ে আমার অন্তত কোনো সন্দেহ নেই।