খ্রিস্টজন্মের ২৮৭ বছর আগে গ্রিসদেসের অন্তর্গত সিসিলির রাজধানি সাইরাকিউস নগরে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন আর্কিমিডিস। তার পিতা ফেইডিয়াস ছিলেন একজন জ্যোতির্বিদ। মিশর দেশের আলেকজান্দ্রিয়া নগরি ছিল সেকালের এক প্রসিদ্ধ শিক্ষা কেন্দ্র। আর্কিমিডিস সেখানেই লেখাপরা করেন। ছাত্রাবস্থায় জ্যামিতি ও গনিত পরতে অনেক ভালবাসতেন । বিখ্যাত পণ্ডিত ইউক্লিডের কানন ছিলেন তার অন্যতম শিক্ষা গুরু। আলেকজান্দ্রিয়ায় পরা শেষ করে তিনি হলেন গনিতবিদ। গনিতশাস্র পাঠ করে মানুষের ভাল হবে ভেবে তিনি চলে এলেন নিজ জন্ম ভুমি সাইরাকিউসে। সেখানে এসে গনিতবিদ্যা চর্চায় নিয়গ হন। কাগজ তখনো আবিস্কার হয়নি। তাই কখন কখন তাকে দেখা যেত বালির উপর দাগ কেটে গানিতিক সমস্যা সমাধান করতে। কখন দেখা যেত মাটিতে ছাই দিয়ে রেখা টেনে মাপজোক করতে। আবার কখন দেখা যেত যন্ত্রপাতির সামনে বসে চিন্তা করতে। কি নিয়মে এসব যন্ত্র কাজ করছে তা নিয়ে ভাবতেন। আজিবন এই নিয়ে সাধনা চালিয়ে তিনি শুধু গনিতেই নয় কারিগরি বিদ্যায়ও পারদর্শী হয়ে উঠলেন। বিশশের রহস্য বের করতে নিজুক্ত হলেন। অনেকগুলো সমস্যার সমাধানও করলেন এই প্রতিভাবান মানুষটি। যখন রোম দেশের সেনাপতি মার্সেলাস তার বিরাট সেনা নিয়ে স্থল ও জলপথে সাইরাকিউস আক্রমন করতে এসেছিলেন , তখন রাজা হিয়োরর পাশে গিয়ে দারিয়েছিলেন আর্কিমিডিস। নিত্যনতুন সমরাস্র বানিয়ে তিনি সাইরাকিউসকে রক্ষার দায়িত্ব নেন তিনি। মস্ত বর বর অবতল আয়নার সাহায্যে শত্রুপক্ষের জাহাজগুলুতে সুর্জের আলো কেদ্রিভুত করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সমুদ্রের তিরের দিকে সাইরাকিউস নগরি প্রাচির দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। এই প্রাচিরের পিছনে আর্কিমিডিস বসিয়েছিলেন বর বর যন্ত্র। ঐসব যন্ত্রের সাহায্যে তিনি পাথর বর্শন করে শত্রু দের ছত্রভঙ্গ করে দিতেন। আর ঐ প্রাচীরের উপরে বর বর কতগুলো কপিকল বসিয়ে তিনি বর বর লোহা , পাথর ইত্যাদি ছুরে মারতেন। ফলে শত্রুর অনেক জাহাজ পানিতে ডুবে জায়। এত কষ্ট করেও সাইরাকিউসকে রক্ষা করা গেল না। রোমক সেনাপতি ৮ মাস ধরে অবরোধ করে রাখল নগরিকে। খাদ্য ফুরিয়ে গেল। অবশেষে সাইরাকিউসের বাসিন্দারা আত্মসমর্পণ করল। শত্রুপক্ষের লোক হলেও রোমক সেনাপতি মার্সেলাস আর্কিমিডিসকে শ্রদ্ধা করতেন। তিনি বুজতে পেরেছিলেন যে আর্কিমিডিস সাধারন মানুষ নন। তিনি অসাধারন প্রতিভার মানুষ। তাই রোম সৈন্যরা যখন নগরিতে প্রবেশ করল তখন মার্সেলাস তার সৈন্যদের সতর্ক করে দিলেন যেন আর্কিমিডিসের গায় কোন আঘাত না লাগে। কিন্তু সে আদেশ আদেশই রয়ে গেল। সৈন্যরা যখন নগরি লুট করছিল তখন আর্কিমিডিস বালির উপর রেখা টেনে একটা সমস্যার সমাধান করছিল। সৈন্যরা তার পরিচয় জানতে চায়। কিন্তু তিনি এতই মগ্ন ছিলেন যে অন্য কোন দিকে তার খেয়াল ছিল না। উত্তর না দেয়ায় সৈন্যরা তাকে আঘাত করে। তখন সেই বুড় মানুশটি বলল আমার রেখা যেন মুছে না জায়।
কথাও শেষ হল আর আর্কিমিডিসের ধর থেকে মাথাও আলাদা হয়ে গেল।
সেনাপতি মার্সেলাস এই খবর শুনে অনেক ব্যথিত হলেন। তিনি এই মহান ব্যাক্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার একটি সুন্দর স্মিতিসওধ নির্মান করলেন। আর তার উপর খোদাই করে দিলেন একটি জ্যামিতিক চিত্র। একটি বেলুনের মধ্যে একটি গোলাকার চিত্র।
একটি শহরের নিরাপত্তা রক্ষার চেয়ে একটি বেলুনের আয়তন নির্ণয় করাকে তিনি বেশি মূল্যবান মনে করেন।একই ব্যাসবিশিস্ট একটি গোলক এবং একটি বেলুন তৈরি করে বেলুনের মধ্যে গোলোকটিকে বসিয়ে তিনি প্রমান করেছিলেন যে , এদের আয়তনের অনুপাত ২ঃ৩।
আর্কিমিডিস বলেছিলেন যে এটাই তার জীবনের সর্বশ্রেস্ট আবিষ্কার।
আমরা জানি যে আর্কিমিডিসের মত এমন মহান মানুষ এবং বিজ্ঞানী আর কখন এই পৃথিবীতে আর কখন আসবে না। তিনি তার জিবনে অনেক কিছু আবিষ্কার করেন। জা আমাদের জ্ঞানকে অনেক বারিয়ে দিয়েছে। তাই যতদিন এই পৃথিবী থাকবে , মানুষ থাকবে , বিজ্ঞান থাকবে ততদিন মানুষ তাকে ও তার আবিষ্কারকে শ্রদ্ধাভরে স্বরন করবে।