জীবনে সফলতা অর্জনে যে কয়টি উপায় না জানলেই নয়( ৯টি জীবন বদলানো টিপস্)

জীবনে সফলতা কেনা চাই। তবে, সফলতা অর্জনের এই প্রতিযোগিতায়, আশার সেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো সবার ভাগ্যে জোটে না।অনেকের মতে সফলতা তারাই ছিনিয়ে আনতে পারে যাদের টেলেন্টের মাত্রা বেশি।যদিও একথা পুরোপুরি সত্য নয়।কিছু টেকনিক জানা থাকলে আপনিও পেতে পারেন আকাশ ছোয়া সফলতা।আজ আমি এমন কিছু টপিক নিয়ে কথা বলব যেগুলো জানা থাকলে আপনিও উঠতে পাারেন সফলতার স্বর্ণ শিখরেঃ-

  1. বেছে নিন নিজের পছন্দের বিষয়

সবার প্রথমে আমি যে উপকরণটির কথা বলব তা হলো আগ্রহী মন।প্রবল ইচ্ছাশক্তি একটা মানুষকে কঠোর পরিশ্রম, পজিটিভ মানসিক উত্তেজনা সৃষ্টি,প্রেরণা দান,সৃজনশীলতা সৃষ্টি ও খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।পক্ষান্তরে, ইচ্ছাশক্তি না থাকলে বেশিদূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না।কঠিন কিছু দেখলেই আমরা ঘাবড়ে যায়,হার মেনে নিই।

তাই সফলতা লাভে আপনার প্রথম দায়িত্ব আপনার পছন্দের বিষয়টিকে খুজে নেয়া।নিজের পছন্দের বিষয়টিকে খুজতে, প্রয়োজনে,বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নির্ভিকভাবে অংশগ্রহণ করুন,নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করুন যেন খুজে পেতে পারেন আপনার পছন্দের জিনিসটি।

2.কঠোর পরিশ্রমে নেমে পড়ুন 

আগ্রহের বিষয়টি তো খুজে পেলেন।তবে,কেবল আগ্রহ দিয়ে সফলতা আনা সম্ভব নয়।এজন্য, আপনাকে হতে হবে পরিশ্রমী,করতে হবে সময়ের সদ্ব্যবহার। ইচ্ছাশক্তি দ্বারা নির্বাচিত বিষয়টিতে দক্ষতা অর্জনের খাতিরে আপনাকে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে এবং মনে রাখতে হবে –

“The harder you work,the more luck you seem to have.”

3.কাজকে ভাগ করুন ছোট ছোট ভাগে

আমরা যখন আমাদের স্বপ্নটার দিকে তাকায় তখন খুব বড় মনে হয় এবং মনে হয় এতোকিছু আমি কীভাবে করব।আসলে,সবকিছু আপনাকে একদিনে করতে হবে না।মনে করুন আপনি ঠিক করেছেন,তিন বছর পর আপনি ঐ জায়গাটায় যাবেন। অর্থাৎ, এই তিন বছর হচ্ছে আপনার কর্মের সময়।এক্ষেত্রে, আপনি চিন্তা করতে পারেন,প্রতিদিন কত ঘণ্টা করে কাজ করলে বা কতটুকু সময় দিলে আপনি তিন বছর পর ঐ জায়গায় যেতে পারবেন। এভাবে,প্রত্যেকদিনের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন ও প্রতিদিন সকালে উঠে শুধু সে দিনের লক্ষ্য বা কাজ নিয়ে চিন্তা করুন।পরের দিনের কথা ভাবা লাগবে না।

প্রয়োজনে একটি রুটিন ও বানাতে পারেন।শুধু,একটিবার স্ট্রিকলি প্রতিদিনের কাজ ঠিকভাবে শেষ করে দেখেন, রুটিনটি মেনে দেখেন,নির্ধারিত সময় পর সফলতা আসবেই।

4. খুজে নিন নিজের পরামর্শদাতা

পড়ে মনে হতে পারে, পরামর্শদাতা দিয়ে কী হবে?সত্যি কথা বলতে,সফলতার যে জায়গায় আপনি যেতে চান সে জায়গায় অলরেডি কিছু মানুষ আছেন।তাদের কাছে যেনে নিন তারা সেখানে কীভাবে গিয়েছেন এবং আপনার সমান থাকতে তারা কি কি কাজ করত।এই কিছু উপকরণ সফলতা অর্জনের দিকে আপনাকে সঠিক পথ দেখাবে।

5.আনন্দ খুজে নিন কাজের মধ্যে

আনন্দের সাথে কোনো কাজ করলেই সে কাজটি সুন্দরভাবে শেষ হয়।পক্ষান্তরে, আনন্দ না থাকলে যেমন কাজটা করতে ভালো লাগে না তেমনি কাজটি কেমন যেন অগোছালো ও অকপটে মনে হয়। তাই,কাজের মধ্যে আনন্দ খুজে নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কীভাবে?

এক্ষেত্রে যেটা করতে পারেন সেটা হল,কাজের শেষে নিজের জন্য পুরষ্কারস্বরূপ ছোটখাটো কিছু বরাদ্দ রাখতে পারেন। যেমন,আপনি ঠিক করতে পারেন, এই কাজটি শেষ করার পর আমি এই চকলেটটি বা বিস্কুটটি খাব কিংবা বন্ধুদের সাথেে কিছুক্ষণ আড্ডা দিব।এই ছোটখাটো উপহারের অঙ্গিকার আপনার কাজের আগ্রহ ও গতি উভয়ই বৃদ্ধি করবে।এছাড়া মাঝে মাঝে এমন লেখা বা ভিডিও  ও দেখতে পারেন যেগুলো আপনাকে ঐ কাজের প্রতি প্রেরণা দিবে।

6.সবকিছুকে নিন সহজভাবে 

সর্বদা কঠিনভাবে চিন্তা করতে গিয়ে দেখা যায়,অনেকসময় আমরা অনেক সহজ বিষয়কেও কঠিনভাবে দেখি।এই কঠিন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে আমরা ভয় পেয়ে যায়,নারভাস হয়ে যায় এবং বুঝতে পারি না কি করব।সত্যি কথা বলতে এর জন্য যেটা দায়ী সেটা হল আমাদের কঠিন দৃষ্টিভঙ্গি।পক্ষান্তরে, সহজভাবে নেয়ার মাধ্যমে আমরা সহজেই সমস্যাটাকে বুঝতে ও সমাধান বের করতে পারি।তাই,পরেরবার কোনো সমস্যায় পরলে নিজেকে বলুন,

‘keep it simple’

7.নিজের কমফোর্ট জোনের বাইরে আসুন 

আপনার সফলতা অর্জনের বাধাগুলোর দিকে একটু লক্ষ করলে দেখবেন সর্বপ্রথম বাধা কিন্ত নিজের কমফোর্ট জোনের বাইরে আসতে না পারা।আমরা অনেকসময় অপরিচিত কারো সাথে কথা বলতে বা সাহায্য চাইতে দ্বিধা বোধ করি যা সফলতা লাভে চরম বাধা।তাই,চেষ্টা করবেন নিজের কমফোর্ট জোনকে টা টা বলতে।কারণ-

“All progress takes place outside  the comfort zone.”

8. আশা রাখতে শিখুন

কোনো একটি গ্লাস অর্ধেক পুরানো থাকলে,আশাবানরা বলে, “শুকরিয়া যে গ্লাসটি অর্ধেক পুরানো আছে।’অন্যদিকে নিরাশরা বলে,” হায়!গ্লাসটা তো অর্ধেক খালি”।তাই,সর্বদা আশা রাখার চেষ্টা করুন,এজন্য নয় যে আশা আপনাকে রাতারাতি সফলতা এনে দিবে।বরং,এজন্য যে,আশা আপনাকেআত্নবিশ্বাস দিবে,উদ্যম জাগাবে সামনে এগিয়ে যেতে।

7.হারার আগে হারবেন না

আমরা অনেকসময় হেরে যাওয়ার আগেই হাল ছেড়ে দিই,হেরে যায়।যদিও হাতে সময় ও সম্ভাবনা আছে। অতএব,হাল ছাড়া যাবে না।শেষ মুহূর্তটা পর্যন্ত কাজ করে যেতে হবে। একবার হারলে বারবার চেষ্টা করতে হবে।নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা চালাতে হবে।সাথে এ কথাটি মাথায় রাখতে হবে –

“I maynot be the best….But I sure am trying my best. “

আরেকটা উক্তি জোর গলায় বলতে চাই।তা হলো,বিখ্যাত দার্শনিক  Thomas A.Edison এর বাণী-

“Our greatest weakness lies in giving up.The most certain way to succeed in life is always to try just one more time.”

এ কিছু কথা মনে রাখলে ও মেনে চললে আপনিও সফলতার মুখ দেখবেন বলে আশা রাখছি।আমার এ কথাগুলো যদি একজনের জীবনেও প্রভাব ফেলে কিংবা উপকারে লাগে তবে ঔটাই হবে আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।

আশা করছি পড়ে ভালো লেগেছে। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি।

Related Posts