আপনি কি জানেন আপনি যা যা করছেন সেগুলোর খবর আপনি ছাড়াও অন্যকেও জানে? সেই অন্য একজন আপনার সমস্ত গতিবিধির উপর নজর রেখে চলেছে। কিন্তু কিভাবে সেই অজানা ব্যক্তি আপনার উপর নজর রাখছে? এ বিষয়েই জানবো এই আর্টিকেলে।
আপনার হাতের ফোন কিংবা আপনার ব্যবহৃত ল্যাপটপ কম্পিউটারের জন্যই আপনি এই বিপদে আছেন। বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশান ও ফোনে ব্যবহৃত অ্যাপের মাধ্যমে অন্য কেউ আপনার উপর নজর রাখছে। আমরা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করে থাকি এবং সেই ডিভাইস গুলো যখন ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকে তখন সেই ডিভাইসের মাধ্যমে আপনার গতিবিধি তারা লক্ষ্য রাখে। আপনি একটি কথা জেনে আশ্চর্য হবেন যে আপনি যা কিছু অনলাইনে করেন সেই সমস্ত কিছুই ট্র্যাক ও রেকর্ড করা যায়।
আপনার এ সমস্ত তথ্য বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বেশ চড়া মূল্যে বিক্রিও করা হয়। কিন্তু আপনি কিছুই জানতে পারেন না। আপনি যে সমস্ত হসপিটাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা করাতে যান সেখানেও আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকে না। আপনি হয়তো চিন্তাও করেননি যে বিভিন্ন হসপিটাল এবং ফার্মেসি আপনার মেডিক্যাল রেকর্ড বিক্রি করে দেয়। যখনি আমরা হসপিটালে চিকিৎসার জন্য যায় তখন আমাদের থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য তারা সংগ্রহ করে রাখে যেমন- নাম, ঠিকানা, ভোটার আইডি কার্ড, ফোন নম্বর, কোন রোগের চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন ইত্যাদি সকল বিষয়। এ সমস্ত তথ্য আমরা বিশ্বাস করে তাদের জানায় এবং ভেবে থাকি যে আমাদের তথ্য সুরক্ষিত থাকবে। কিন্তু বিষয়টি সম্পূর্ণ উল্টো।
কিছু হসপিটাল আমাদের ব্যক্তিগত নানান তথ্য লাভজনক দামে বড় বড় ইনস্যুরেন্স কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়। তারপর তারা সেই কোম্পানি গুলো আমাদের তথ্য বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়। এজন্য আমাদের ফোনে হেলথ ইনস্যুরেন্স, ফাইনেন্স ও মেডিকেল সম্পর্কিত বিভিন্ন কল ও এসএমএস আসতে থাকে।
এছাড়াও আপনি কি জানেন বিজ্ঞাপন দাতারা আপনার মুখ দেখতে পায় আপনার ক্যামেরার মাধ্যমে? আজ আমরা যত ধরনের ল্যাপটপ, মোবাইল ও ট্যাবলেট ব্যবহার করি সেসব ডিভাইস গুলোর সামনে ক্যামেরা থাকে, যেগুলো আমরা সেলফি ও ভিডিও কলের জন্য ব্যবহার করি। আপনি জানলে অবাক হবেন যে যখনি আপনি কারোর সাথে ভিডিও কলে কথা বলেন তখন ওই ব্যক্তি ছাড়াও আরো অন্যকেউ আপনাকে দেখতে পায়। আপনার এই বিষয়টা হয়তো বিশ্বাস করতে কষ্ট হতে পারে, কিন্তু এটাই বাস্তবতা। যারা আপনার সাথে এ কাজ গুলো করে তারা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থার কাছে এসব তথ্য বিক্রি করে মোটা অঙ্কের মুনাফা নিয়ে থাকে।
বিভিন্ন সময় আমরা বিভিন্ন জায়গায় পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করে থাকি। যা কিনা আপনার জন্য বিশাল বিপদের কারণ হতে পারে। যখন কোনো কোম্পানি আপনাকে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারের সুবিধা দেয় তখন তা আপনার জন্য মোটেও ভালো নয়। তারা ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারের সুবিধা দিয়ে আপনার থেকে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য আপনার অজান্তেই হাতিয়ে নেয়। কারণ এর পেছনে তাদের বড় স্বার্থ থাকে। তারা আপনার সমস্ত ইনফরমেশন আপনার ব্যবহৃত ডিভাইস থেকে খুব সহজে পেয়ে যায়। এজন্য যেকোনো জায়গায় ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারের আগে সাবধান থাকুন। কয়েকটি বড় বড় কোম্পানি এতিও স্বীকার করেছে যে তারা তাদের গ্রাহকদের ফোন ট্রাক করে।
এজন্য নিজেকে সাবধান করতে হলে এখনই ইন্টারনেটে কিভাবে নিরাপদ থাকা যায় সে বিষয় গুলো সম্পর্কে ধারনা নিন। আশা করি এই আর্টিকেলটি থেকে নিজেকে সতর্ক করার জন্য বেশ কিছু তথ্য পেয়েছেন। ধন্যবাদ।