পৃথিবীটা সাগরের জোয়ারের মতো উত্তাল। সভ্যতা ও সংস্কৃতি ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। পিছিয়ে নেই মানুষের চাহিদাও। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এক অন্য জগতে প্রবেশ করেছে মানুষ। একের পর এক নতুন সৃষ্টির আগ্রহ আর গবেষণা নামক শব্দটিকে মানুষ তার কোমল হৃদয়ের মধ্যে ঢুকিয়ে নিচ্ছে অনবরত। উন্নত রাষ্ট্রগুলো উন্নতির শিখরে পৌঁছে গেছে তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে। চিন্তাকে গবেষণা বলে নামকরণ করা যায়। পৃথিবীর এমন কোন সাহিত্য, শিল্প, গণিত বা প্রযুক্তি নেই যেখানে গবেষণা নামক শব্দটি নেই। আর আজকাল ইন্টারনেট কম্পিউটার ব্যতীত এ কথা চিন্তাও করা যায় না। গবেষণার জন্য দরকার তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়া, বিশ্লেষণ এবং সুন্দর করে প্রদর্শন। পুরনো গবেষক এবং বর্তমানে গবেষকদের মধ্যে অনেক পার্থক্য।দৈহিক পরিশ্রম উঠে যাওয়ায় বর্তমান গবেষকরা পৃথিবীর অনেক চমকপ্রদ আবিষ্কার উপহার দিচ্ছে মানুষকে। গবেষণা তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক দুই ধরনের হতে পারে। প্রথমটি চিন্তাভাবনা বিষয়ক সকল তথ্যের ভান্ডার হলেও দ্বিতীয় টি হল ল্যাবরেটরীতে ব্যবহারিক গবেষণা। ল্যাবরেটরীতে বসে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি তৈরি করা, পরিচালনা করা অথবা মানুষের উপকারের জন্য ব্যবহার করার মত নানান ধরনের ঔষধি কীটও হতে পারে। আজকে পৃথিবীর সফল কোন গল্প এই গবেষণা ব্যতীত হয়নি। যন্ত্রের ভেতর যন্ত্র বসিয়ে অথবা রসায়নবিদ্যার পরমাণুকে বিভাজ্য প্রমাণ করার জন্য কতইনা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে গবেষকরা। পৃথিবীতে যত কিছু নিয়ে গবেষণা হয়েছে তন্মধ্যে ইংরেজিতে পাই (π) সর্বশীর্ষে। এই পাই এর মান বের করার জন্য পৃথিবীতে যতগুলো বিজ্ঞানী গবেষণা করেছেন আর অন্য কোন জিনিস নিয়ে ততটা গবেষণা কেউ করেনি। ইন্টারনেটের এই দুনিয়ায় ছোট-বড়, বৃদ্ধ, যুবক, সবাই এখন গবেষণার কাজে নিয়োজিত হতে পারে সহজেই। জাতীয় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মানের জার্নাল গুলোতে নিজেদের সৃষ্টিকর্ম গুলো আর্টিকেল আকারে প্রকাশ করা যায়। যেগুলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চিন্তাশীল ব্যক্তিদের নজর কাড়তে পারে। বর্তমান পৃথিবীতে করোনা ভাইরাস নামক মারাত্মক এক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাস থেকে উদ্ধার পেতে চাইলে প্রথমে দরকার চিন্তা ও গবেষণা। অবশ্য পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি উন্নত দেশের বিজ্ঞানীরা গবেষণা শুরু করে দিয়েছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীরাও এই ভাইরাসটির মোকাবেলায় নতুন কোন মেডিসিন আবিষ্কার করার চেষ্টা করছে। যেমন আমরা উল্লেখ করতে পারি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত তিনজন অধ্যাপক করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক মূলক তথ্য আন্তর্জাতিক জার্নালে পাবলিশ করেছে। বিভিন্ন স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটির মেধাবী তরুণ স্টুডেন্টরা আজ লেগে পড়েছে গবেষণায়। পৃথিবীটা হাতের মুঠোয় থাকায় আমরা যেমন যেকোনো তথ্য বাতাসের গতির মত পেয়ে যাচ্ছি ঠিক তেমনি চিন্তা চেতনা গুলোকেও কাজে লাগাতে পারছি বাতাসের গতির মতোই। ব্যবহারিক গবেষণা তে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যায় বলে বিজ্ঞানের অনেক গবেষণাতে আজকাল বিজ্ঞানীদের আর ল্যাবরেটরিতে বসে থাকতে হয় না তারা অনেক দূর থেকে পরীক্ষাটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। সম্ভাবনাময় এ পৃথিবীতে অন্ধকারে ডুবে যাওয়া মানুষের জন্য আলো হয়ে দেখা দিতে পারে একটি গবেষণা।
ফজলে রাব্বী দ্বীন
ইইই, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট)।