আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি। আজকের বিষয়ঃ নবজাতকের চুল কাটার ইসলামিক নিয়ম । তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
নবজাতকের চুল কাটার ইসলামিক নিয়ম
ইসলামের বিধান সুন্দর । দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত মানুষকে ইসলামী মোতাবেক জীবন পরিচালনা করতে হবে। ইসলামিক মোতাবেক জীবন পরিচালনা করতে পারাটাও একটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। আল্লাহ তায়ালা বলেন “অবশ্যই আল্লাহর রাসুলের জীবন বিধান রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ” ।
শিশুর জন্মের পরে প্রথম কাজ হচ্ছে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। তারপরে শিশুর ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেওয়া। একটি শিশু যখন জন্মগ্রহণ করে, সন্তান জন্মের এক সপ্তাহ পরে তার মাতা-পিতার দায়িত্ব সন্তানের আকিকা করা । এরপরে মাথার চুল কামানো এবং সন্তানের জন্য সুন্দর নাম রাখা।
ছেলে সন্তান হোক অথবা মেয়ে সন্তান হোক জন্মের ৭ দিনে চুল কামানো সুন্নত।
সাহাবী সামুরা ( রাঃ) থেকে বর্ণিত,
মুহাম্মদ ( সাঃ) বলেন, প্রত্যেক সন্তানই তার আকিকার মাধ্যমে বন্ধক হিসেবে রক্ষিত (নিরাপদ)। অতএব ৭ দিনে তার পক্ষ হতে আকিকা করো,তার চুল কাটো এবং তার সুন্দর নাম রাখো।
[আহমদ, তিরমিজি-সহিহ সূত্রে]
শিশুর চুল সমপরিমাণ রৌপ্য দান করার ব্যাপারে হাদীস বর্ণিত রয়েছে। কিন্তু হাদীসটি সহীহ হওয়ার ব্যাপারে অনেক আলেমগনের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে,
হাদীসে বর্ণিত রয়েছে হযরত আলী (রাঃ) বলেছেন,
মুহাম্মদ (সাঃ) হাসানের জন্য ছাগল আকিকা করে এবং তার কন্যা ফাতেমা (রাঃ) কে বলেন, তার মাথা মুণ্ডন
করে দাও এবং তার চুলের ওজন পরিমাণ রৌপ্য সদকা কর। [তিরমিযী, অধ্যায়, আযাহী, হাদীসঃ১৫১৯]
যেহেতু হাদীস শরীফ-এ ৭ দিনে মাথার চুল কামানোর কথা বলা হয়েছে তাই সপ্তম দিনের আগে মাথার চুল না কামানোই উত্তম। চুল কামানোর পরে শিশুর চুলের ওজন পরিমাণ রুপা বা স্বর্ণ সদকা করা মুস্তাহাব । শিশুর মাথা কামানোর পরে মাথায় জাফরান ব্যবহার করা সুন্নত । তবে যদি কোন ব্যক্তি ৭ দিনে অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে আকিকা দিতে না পারে তাহলে সে ১৪ দিন অথবা ২১ দিনে আকিকা করতে পারবে। তারপরেও যদি আকিকা দিতে সামর্থ্য না থাকে তাহলে পরে আদায় করে নিতে হবে।
আমরা জানি মুস্তাহাব অর্থ পছন্দনীয় । মুস্তাহাব পালন করলে সওয়াব রয়েছে, কিন্তু ছেড়ে দিলে কোন গুনাহ হবে না।
এ কারণে যদি কেউ সাত দিনে বাচ্চার চুল ফেলতে চান ফেলতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্য সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ চুল কামানোর সময় দীর্ঘ সময় সাবান পানির সংস্পর্শে রাখলে শিশুর নিউমোনিয়া রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, প্রিয় নবী মোহাম্মদ (সাঃ) একটি শিশুকে দেখলেন শিশুর মাথার কিছু অংশ চুল কামানো আর কিছু অংশ অবশিষ্ট রাখা । তখন তিনি বললেন তোমরা মাথার চুল পুরোটাই মুণ্ডাও অথবা পুরোটাই অমুণ্ডিত রাখো।
[মুসনাদ আহমদ : ৫৬১৫ ]
ইসলামের নিয়ম নীতি কত সুন্দর। জন্মের পরে সন্তানের মাতার চুল কামালে শিশুর জন্য বিভিন্ন রোগ থেকে হেফাজত করে। আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামকে পরিপূর্ণ ভাবে পালন করার তৌফিক দান করুক।
❤️ আমিন ❤️
পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।