আসালামুয়ালাইকুম কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। নতুন একটি আর্টিকেল নিয়ে চলে আসলাম আপনাদের মাঝে। আজকে নৌকার মাঝি নিয়ে একটি ছোট ভুতুরে কাহিনী শুনবো আমরা। তাহলে আর কি, সিট বেল্ট বেধে বসে পড়ুন পড়ার জন্য। নৌকার মাঝিদের দেবতা –
গল্পে নৌকার মাঝির নামঃ রাতুল, আমাদের গল্পের নায়ক তিনি। রাতুল একটি গ্রামের ছেলে। শেমনাথপুর গ্রামে সে তার বাবার সাথে থাকে ছোট্ট একটি বাড়িতে। রাহুলের জন্মের পর থেকে তার মায়ের একটি কঠিন অসুখ হয়। গ্রামের এক কবিরাজ বলে তার মায়ের সময় খুবই কম।
রাহুলের বাবা রক্তিম সাহেব ছিলেন একজন মাঝি। রাহুল যে গ্রামে থাকতো সেখানে ছিল মাঝে অবস্থিত একটি নদী। কেবল একজন মাঝি ছিল যিনি সবাইকে সে নদী দিয়ে নৌকা পর করে দিত। সে হিসেবে তার পিতার যা আয় হতো তাতে মধ্যবিত্তের সংসার হয়েও ভালোমতই কেটে যেত দিন।
তাদের তিন জনের পরিবার এভাবেই যেতে যেতে রাহুলের বয়স যখন ৮ তখন তার মা মারা যায়। রাহুল অনেক ভেঙে পড়েছিল। তার বাবা তার মায়ের সব ভালোবাসা তাকে দিত। এইভাবে রাহুল ক্রমশ বড় হতে থাকে। একসময় রাহুলের বয়স যখন ২১ তখন তার পিতা ক্রমশ অসুস্থ হতে পারে।
বয়স যে বাড়ছে ! আর কত। একদিন রাহুলকে তার বাবা ডেকে বলেন – সাবধানে থাকিস বাবা, আমি মারা গেলে তুই তো একেবারে একা হয়ে যাবি রে। নিজের যত্ন নিশ। কি যে বলো বাবা তোমার কিছুই হবে না – বললো রাতুল। তার বাবা অসুস্থ হওয়াতে সে এখন নৌকা দিয়ে যাত্রীদের পার করতে থাকে। ভালোমতো চলছিল সব, একদিন রাত গভীরে হটাৎ তার বাবা অনেক অসুস্থ হয়ে যায়। তিনি রাতুলকে ডেকে বলেন আমার বোধয় সময় শেষ, তুই নিজের যত্ন নিশ সবসময়। রাতুল বলে, এসব কি বলছো তুমি বাবা, বলে সে তার পিতাকে বলে চলো শহরে গিয়ে তোমাকে একটা ডক্টর দেখায় কিছু হবে না তোমার। কিন্তু তার বাবা যেতে চায় না, তবুও সে জর করে নিয়ে গেল।
গভীর রাতে নৌকায় করে তারা শহরের উদ্দেশে রওনা হলো, এমন সময় তার বাবা বললো দূরে একটি ঘন জঙ্গল আছে সেখানে যেনো রাতুল একা রাতে কখনই না যায়। অনেক রহস্য নাকি আছে এই জায়গা ঘিরে। এরপর কিছুক্ষণ পর নৌকায় তার বাবা মারা যায়, রাতুল এর ডাকে সাড়া না দেওয়ায় সে কাছে গিয়ে বুঝতে পারলো তার পিতা আর নেই। পুনরায় বাড়ি আসার সময় সে অনেক ভয় পাচ্ছিল।
এমন সময় একটি লোক দূরে বন থেকে বললো, মাঝি ভাই নিয়ে যাও আমাকে। সে লোকটিকে নৌকায় নিয়ে নিল। কিছুদূর যাওয়ার পর তাদের নৌকা আর সামনে না এগোলে রাতুল বাধ্য হয়ে পানির নিচে গিয়ে দেখলো। কিন্তু কিছুই দেখতে পেলো না।
কিন্তু এরপর হলো অবাক কাণ্ড। সে দেখলো লোকটি ভুত হয়ে তার বাবার মাংস খাচ্ছে। রাতুল খুবই ভয় পেয়ে কোনমতে পানিতে সাঁতার কেটে দৌড়ে তার মামার বাসায় এসে তার মামাকে সবটা বললো। তার মামা বলে, অনেক মাস আগে গ্রামে রঘু নামের এক লোক চলো। গ্রামে কেউ অন্যায় করলে তাকে ১৫ দিন না খাইয়ে বন্দী করে রাখা হতো। একদিন রঘু এক মহিলার সাথে খারাপ আচরণ করায় তাকে বন্দী করে রাখা হয়।
একদিন তার স্ত্রী তার সাথে দেখা করতে গেলে সে তার স্ত্রীকে ভয়ানক ভাবে খেতে থাকে। এরপর থেকে তাকে ঘন বনে রেখে আসা হয়। সেখানে না খেতে পেয়ে সে মারা যায়। এর পর থেকে সে বনে রাতে কেউ গেলে সে আর ফিরে আসে না।
রাতুল সে রাতে তার মামার বাসায় থেকে গেলো, এবং এরপর থেকে সে কখনো রাতে নৌকা নিয়ে বের হয়না। এই ছিল আমাদের গল্প, আসা করি আপনাদের ভালো লেগে থাকবে। ভালো লাগলে কমেন্ট করবেন, আল্লাহ হাফেজ।