বলা হয়ে থাকে যে ‘ছাত্রনং অধ্যয়নং তপ’। তবে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি কিছু করার তাগিদ থাকে। কেননা এ সময় সাংসারিক কোন চাপ বহন করতে হয় না। যাই করুক না কেন মনোযোগ দিতে কোন সমস্যা হয় না। সম্ভব ছোট ছোট অনেক আয়।
কেন করবেন
যেহেতু সাংসারিক কোনো চাপ থাকে না সেহেতু নিজেকে প্রস্তুত করার যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। পাশাপাশি লেখাপড়ার খরচ আর হাতখরচ নিজেরটা নিজেই ম্যানেজ করা যায়… ভবিষ্যতের লক্ষ স্পষ্ট হয়ে যায়।
কি করবেন
এটাই মূল আলোচনা। একটা সময় ছিল ছাত্ররা একটাই কাজ করতো তা হল টিউশনি করা। কিন্তু সময়টা এখন অনেক বদলে গেছে। এখন ঘরে ঘরে টিচার তাই বিকল্প কিছু চিন্তা করতে হয়। বর্তমানে এমন অনেক ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে আসুন জেনে নেই
টিউশনি
এটা সকলে জানে তবুও আলোচনা দাবি রাখে। সপ্তাহে ২/৩ টি টিউশনি করে খুব ভালোভাবে নিজের হাত খরচ এবং লেখাপড়া চালিয়ে নেয়া যায়। তবে প্রতিযোগিতা অনেক বেড়েছে। তাই টিউশনিতে আধুনিকতার পাশাপাশি টেকনিক খাটাতে হয়। নলেজ বৃদ্ধি, মনিটরিং, হ্যান্ডনোটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মাঝে নিজেকে জনপ্রিয় করে তোলারা বিকল্প নাই। এছাড়াও অনলাইন টিউটর হিসেবে কাজ করতে পারেন। জমানো টাকা ভবিষ্যতে লেখাপড়া শেষ করে ব্যবসা করতে কাজে লাগতে তাকা।
কোচিং
কোচিং ব্যবসা একটি ভালো পেশা। ছাত্র অবস্থায় শুরু করলেও লেখাপড়া শেষ করে লেগে থাকার সুযোগ রয়েছে। এর বহুমুখী দিক রয়েছে। ভবিষ্যতে ভর্তি কোচিং, নিয়োগ, ট্রেনিং করিয়ে টাকা কামাতে পারবেন…
কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার
চাকরির বাজারে কম্পিউটার ট্রেনিং এর বিকল্প নেই। শুধু চাকরি নয় যেকোনো কাজে কম্পিউটার এর ব্যবহার বাড়ছে। আপনি নিজে যদি কম্পিউটার শিখে কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার দিতে পারেন পাশাপাশি অনলাইন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে আপনার।
ছোট ব্যবসা
অল্প পুজিতে ছোটখাটো যেকোনো ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে আপনাকে উদ্যোক্তা হতে সাহায্য করবে। যেমন টি-শার্টের ডিজাইন, মৎস্যচাষ ইত্যাদি। এভাবে ছোট ছোট অনেক আয় এর মাধ্যমে আপনি হতে পারেন সাবলম্বী।
অনলাইন ব্যবসা
ইন্টারনেট ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় অনলাইনে ব্যবসা অনেক সহজ হয়েছে। নির্দিষ্ট কয়েকটি আইটেম পেজ বা গ্রুপ এর মাধ্যমে অনলাইনে আপনিও ব্যবসা করতে পারেন। কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আছে বিভিন্ন কুরিয়ার ও হোম ডেলিভারি সেবা। কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারেন-
- নাম নির্ধারণ করা
- পননির্ধারণ ও মান
- সঠিক মূল্য
- পণ্য হস্তান্তর সিস্টেম
- টাকা লেনদেন
- প্রচার
ব্লগিং
বর্তমানে অত্যন্ত প্রচলিত একটি অনলাইনের ব্লগ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারেন। নিজের ব্লগে অথবা অন্যের ব্লগে জমা দিয়ে আয় করা যায়। ছোট ছোট অনেক আয় এর সাথে সাথে ধীরে ধীরে হয়ে উঠতে পারেন ভালো মানের লেখক। অনলাইনে লেখালেখি এরকম বিভিন্ন সাইট আছে যা আপনি ঘুরে দেখতে পারেন। সেগুলো থেকে আপনি অনেক আইডিয়া পেয়ে যাবেন।
হাতের কাজ
আপনি যদি সৃষ্টিশীল ও পরিশ্রমী হোন তাহলে হাতের কাজের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। পেইন্টিং কিংবা হস্তশিল্প করে, গহনা তৈরি অথবা শোপিস তৈরি করে টাকা ইনকাম করতে পারেন। হস্তশিল্পের ট্রেনিং পাওয়া যায় বাংলাদেশ বিসিক, মতিঝিল । এছাড়া প্রাইভেট বিভিন্ন অরগানাইজেশন থেকে নিতে পারেন ট্রেনিং। এক্ষেত্রে আপনাকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করতে পারে ইউটিউব। আর এগুলো বিক্রি করবেন আপনার পরিচিত সার্কেল অথবা অনলাইনের মাধ্যমে।
হোম ডেলিভারি
একটা সময় ছিল বাসা থেকে বের হয়ে অনেক দূর থেকে পণ্য সংগ্রহ করতে হতো কিন্তু এখন হাতের নাগালেই বাসার দরজায় এসে উপস্থিত হয় আপনার প্রয়োজনীয় পণ্যটি। নির্দিষ্ট কোন সার্ভিস অথবা যেকোনো পণ্যের হোম ডেলীভারী দিতে পারেন। যোগাযোগ করতে পারেন বিভিন্ন সাইটে যারা ডেলিভারির জন্য নিয়োগ করে থাকে। গ্রাহক পরিচিত সার্কেল অথবা নিজের পেজের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং
লাভজনক দারুন এক উপায় এফিলিয়েট মার্কেটিং। কম সময়ে প্রচুর ইনকাম করা সম্ভব এই উপায়ে। আপনার ব্লগ, ফেসবুক গ্রুপে বিভিন্ন অনলাইন ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর প্রোডাক্ট প্রচার কর, বিক্রির মাধ্যমে আপনি অ্যাপনার কমিশন পেতে পারেন। এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কমিশন একটা সময় আপনাকে বিশাল আয় এনে দেবে।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করা
ছাত্রাবস্থায় সময় পাওয়া যায় প্রচুর। ঘুরাঘুরি করা যায় অনেক। আপনার যদি ঘুরাঘুরির শখ থাকে আর আপনিও যদি সুন্দর ছবি তুলতে পারেন তাহলে সেগুলো অনলাইনে বিক্রি করে ইনকামের দারুন একটা উপায় হতে পারে আপনার। ইন্টারনেটে এরকম প্রচুর ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে আপনি আপনার তোলা ছবিগুলো আপলোড দিতে পারেন। সেখান থেকে ভালো একটা আয় হতে পারে। তবে ছবি হতে হবে হাই কোয়ালিটি রেজুলেশন এবং মানসম্পন্ন।
শেষ কথা
আপনি যদি পার্টটাইম জব করতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তাই দেরি না করে শুরু করুন আপনার স্বাধীন ইচ্ছা আর ছোট ছোট অনেক আয় করুন। তবে অবশ্যই একটি সুন্দর পরিকল্পনা করে নিন, গবেষণা করুন। হয়তো আপনার প্যাঁশন হতে পারে আপনার পেশা।
আর্টিকেলটি কেমন হল কমেন্ট করুন। শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ দিন ।