আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠকবৃন্দ। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। বরাবরের মতো আমি আপনাদের মাঝে সত্য ঘটনা অবলম্বনে রহস্যময় ভূতের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আপনাদের বলে রাখি যে এখন থেকে আমি এগুলো এপিসোড আকারে প্রকাশ করব। আশা করি আপনাদের অনেক বেশি ভালো লাগবে। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে আজকের গল্প শুরু করি।
সময়টা ছিল 1990 সালের দিকে। তখনকার দিনে গ্রামে বাচ্চা প্রসবের জন্য গাইনি নামক এক মহিলা পাওয়া যেত। যেহেতু তখনকার মানুষের এত বেশি সুযোগ-সুবিধা ছিলনা হাসপাতালের অথবা তা খুব একটা বিশ্বাস করতেন না। তো একদিন গাইনী মহিলা রাত্রে তার কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন। তার হাতে ছিল হারিকেনের টিমটিমে আলো। হঠাৎ একটা লোক গাইনির পথ আগলে রেখে বললো মাইজি আপনার সাথে কিছু কথা আছে। আমার স্ত্রী প্রসব বেদনায় খুব কষ্ট পাচ্ছে আপনি আমাকে দয়া করে সাহায্য করুন। গাইনি যদিও তখন ক্লান্ত-শ্রান্ত ছিলেন তারপরেও লোকটির কথা শুনে বেশ মায়া হলো। লোকটির গায়ে শুধুমাত্র একটি লুঙ্গি ছাড়া আর কিছুই ছিল না। গাইনি ভয় পেতে থাকলো যদি ইনি ডাকাত হন। তারপরেও এত কিছু না ভেবে উনি তার সাথে হাটতে থাকলেন। গাইনি খেয়াল করলেন যে হারিকেনের আলো উনার ঠিক সহ্য হচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর উনি বললেন মাইজি আপনি কি হারিকেনের আলো একটু বন্ধ করবেন আমি তো আপনাকে সাথে নিয়ে যাচ্ছি। গাইনি তখন ভাবতে থাকলো যদি নিভিয়ে দিই তাহলে যদি ডাকাতি করে, যদিও ডাইনির কাছে টাকাপয়সা খুব একটা ছিল না। এভাবেই হাঁটতে হাঁটতে একসময় তারা গ্রামের প্রত্যন্ত একটি খালপাড়ে এসে হাজির হলো। গাইনি তখন কিছুটা আচ করতে পারলেন যে আসলে আজকে তার সাথে কি হতে চলেছে। তিনি ভাবতে থাকলেন এতদিন এসে ভূত-প্রেতের কথা শুনে এসেছি আজ কি তাদের হাতেই আমার জীবনটা চলে যাবে। তবু তিনি সাহস রেখে বললেন আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এলেন? গাইনি খেয়াল করতে থাকলেন যে লোকটির আকৃতি এতক্ষণে বেশ পরিবর্তন হয়ে এসেছে।অনেকটা বানরের মতো আকৃতি ধারণ করেছে। গায়ে অসংখ্য পশম চোখ দুটো কেমন যেন জ্বলজ্বল করছে। গাইনি ভাবতে থাকলেন জীবন যদি চলে যায় কি আর করার, হয়তো এদের হাতে জীবন গেলে আল্লাহ আমাকে মাফ করে দিতে পারেন। কিছুক্ষণ পর লোকটি বললো মাইজি ভেতরে আমার স্ত্রী আছে। আপনি আমার সাথে আসুন এই কথা বলে লোকটি একটি ঝুপটির ভেতরে ঢুকে গেল। গাইনি ও উনার পেছনে পেছনে ঝুপটির ভেতরে চলে গেল। ভেতরে যাবার পর ভেতর থেকে অসহ্য রকমের গন্ধ আসতে লাগলো ঠিক যেন পচা মাছের। উনার ঠিক বমি আসতে লাগলো কিন্তু ভূতের কথা ভেবে উনি ঠিক বমি চেপে রাখলেন। কিছুক্ষণ পর এক কর্নারে দেখা গেল ঠিক ওনার মত এই বানরের আকৃতির উনার স্ত্রীর প্রসব বেদনায় ছটফট করছে। গাইনি ঠিক কিছু না ভেবে তার কাজ শুরু করে দিলেন। ঠিক বেশিক্ষণ লাগলো না প্রায় আধা ঘন্টার ভিতরেই একটা বাচ্চা প্রসব হলো। বাচ্চাটাও ছিল উনাদের মত আকৃতি অনেকটা বানরের মত। চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছিল। বাচ্চাটা আসার পরে এমন ভাবে আওয়াজ করতে লাগল ঠিক যেন মনে হল ভয়ঙ্কর আওয়াজ। কিন্তু হোক না ভুতের বাচ্চা। বাচ্চা তো বাচ্চাই। কিছুক্ষণ পর লোকটি এবং গাইনি ঝুপটির ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো। কি যেন কথা বলতে বলতেই হঠাৎ দূর থেকে মাইকে ফজরের আজানের সুর ভেসে আসতে লাগলো। হঠাৎ করে গাইনির মনে হল যেন লোকটি কোথায় হারিয়ে গেল। উনি তখন ঝুপটির ভেতরে ঢুকে দেখলেন যে ওখানে কিছুই নেই আসলে। শুধু কয়েকটা মাছের টুকরো পরে আছে এবং একই সাথে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করলো। গাইনি ভাবলেন যে এতক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে আমাকে দ্রুত বাসায় ফিরতে হবে। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে গাইনি খুব দ্রুততার সাথে তার বাসায় ফিরে এলেন। বাসায় আসার পর কারো সাথে এ বিষয়ে আর কথা বলেননি। লোকমুখে শোনা যায় উনি প্রায়ই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই ঘটনা কারো কাছে শেয়ার করেননি। কিন্তু গাইনি যখন মারা যায় তার ঠিক সাত থেকে আট দিন আগে তার নাতি-নাতনিরা ভূতের গল্প শুনতে চাইলো। তখন তাদের কাছে গাইনি এই গল্পটা বলেন। কিন্তু তারা তখন ঘটনাটা আচ করতে পারেননি কিন্তু গাইনি মারা যাবার অনেকদিন পরে তাদের নাতি-নাতনি থেকে শোনা যায় যে প্রায় রাতেই গাইনির ঘর থেকে বিড়বিড় করে কিছু আওয়াজ আসতো। আওয়াজটা ছিল ঠিক এরকম -আরে তুই কেমন আছিস? এটা এটা তো সেই বাচ্চা না? তোর ইস্ত্রি কোথা়য়? না না বাবা আমার কিছুই লাগবেনা, আল্লাহ এমনি আমাকে অনেক দিয়েছেন। না না তুই চিন্তা করিস না আমি মরে গেলেও এই কথা কাউকে বলব না। ঐ কথাগুলো শোনার পরেও তার নাতি-নাতনিরা তাকে কিছু বলতো না কারণ ভাবত যে তার অনেক বয়স হয়েছে। হয়তো এরকম ঘুমের ভেতরে কথা বলতো। কিন্তু তার মৃত্যুর পর তার বলে যাওয়া গল্পের সাথে এই কথাগুলোর মিল খুঁজে পান। গাইনি তার মৃত্যুর আগে প্রায় 200 অধিক বাচ্চা প্রসব করিয়েছিলেন।
তাহলে পাঠকবৃন্দ এই ছিল আমার আজকের ঘটনা। যদি আপনাদের বিন্দুমাত্র ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর যদি পারেন তাহলে সবার সাথে শেয়ার করবেন। পরের এপিসোডের ঠিক এরকমই আরো ভয়ানক গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন।
ভূতের ভালোবাসা এবং প্রতিশোধ
মিসেস রহমান গাড়িতে বসে রাগান্বিত হয়ে তার হাজবেন্ড কে বলছেন গাড়ি ডানে ঘুরাতে। তার হাজবেন্ড আরো বেশি রেগে গিয়ে বললেন...