স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য এবং অপরিহার্য অংশের। বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়বে না। কখনো কি ভেবে দেখেছেন আপনার সেই স্মার্টফোনটি চোখের আড়াল হলে আপনার কি অবস্থা হবে? থাকতে পারবেন স্মার্টফোন ছাড়া? স্মার্টফোন আপনার যেমন পরিবার এর শুন্যতা পূরণ করেছে সেই সাথে আপনার পরিবার পরিজন থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে।তবে সব কিছুরই ব্যবহারের কিছু সীমা রয়েছে। স্মার্টফোন আমাদের উপকার করে থাকলেও স্মার্টফোন এর অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের জন্য মারাত্মক হানী কারক।
পূর্বে যখন মানুষের মাঝে এই স্মার্টফোন ছিল না তারা তখন তাদের বিনোদন এর মাধ্যমে পরিবারের সাথে সময় কাটাতেন, বই পরতেন, বন্ধু বান্ধবদের সাথে আড্ডায় একাত্ততা পোষণ করতেন,ঘুরে বেড়াতেন। কিন্তু বর্তমানে স্মার্টফোন এর অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষকে দুরে ঠেলে দিয়েছে তাদের প্রিয়জন থেকে। মানুষ এখন অবসর সময় কাটায় তার স্মার্টফোন এর সাথে। তার দিন শুরু হয় স্মার্টফোন এর মাধ্যমে দিন শেষেও সাথে থাকে তার স্মার্টফোনটি। এভাবে প্রত্যেক মানুষকে গ্রাস করে ফেলেছে তার স্মার্টফোন।মানুষের এখন বিশাল অংশ জুড়ে বিরাজ করছে স্মার্টফোন।
স্মার্টফোন এর অনেক উপকারী দিক থাকলেও স্মার্টফোন আমাদের অনেক ক্ষতির কারণও বটে।
১.আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের একটা বিরাট অংশ জুড়ে বিরাজ করছে স্মার্টফোন। তাই আমাদের সময় অপচয় এর প্রধান কারণ স্মার্টফোনটি।
২.অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহার এর ফলে লেখাপড়া থেকে দুরে ঠেলে দিচ্ছে।
৩. মানুষ মানুষের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টির জন্য দায়ী স্মার্টফোন।
৪. মানুষের হতাশা কিংবা ডিপ্রেশন এর জন্য দায়ী হাতের এই স্মার্টফোনটি।
তবে কখনো কি ভেবে দেখেছেন স্মার্টফোনটির জন্য আপনার হতে পারে আরও মারাত্মক রোগসমূহ। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে আসা যাকঃ
১.ইনসোমিয়াঃ
একজন সুস্থ মানুষের জন্য দৈনিক অন্ততপক্ষে ছয় থেকে আট ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়।কিন্তু কোন কারণে যদি আপনার ঘুম না হয় দিনের পর দিন তখন সেই সমস্যাকে বলা হয় ইনসোমিয়া বা নিন্দ্রাহীনতা।স্মার্টফোন এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এর ফলে এখন অনেকে ইনসোমিয়াতে আক্রান্ত হয়ে থাকে।তাই ঘুমের সময় আপনার স্মার্টফোনটি বন্ধ রাখুন। এতে আপনার ভালো ঘুম হতে সাহায্য করবে।আর যদি ইনসোমিয়া হয়ে থাকে তাহলে আপনার নিকটবর্তী ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করুন।
২.নমোফোবিয়াঃ
এটি একটি মারাত্মক রোগ। যদি স্মার্টফোন ব্যবহার করা আপনার নেশা হয়ে থাকে এবং মোবাইল ব্যবহার না করলে আপনি মানুসিক অসস্তি অনুভূত হয় তাহলে আপনি নমোফোবিয়া রোগে আক্রান্ত। আপনি যদি বুঝতে পারেন আপনি এই রোগে আক্রান্ত তাহলে আপনি অতি সহসায় চিকিৎসক এর সরণাপণ্য হউন।সেই সাথে স্মার্টফোন এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার সীমিত করার চেষ্টা করুন।
৩.পারকিনসনঃ
সাধারণত মোবাইল ফোনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে যখন হাত পায়ে কাঁপুনি হয় এবং সেই সাথে আসতে আসতে আপনি আপনার কাজ করার ক্ষমতা হারাতে থাকেন তখন তাকে পারকিনসন বলা হয়। এটি মস্তিষ্কের এক ধরণের স্নায়ুবিক রোগ।এই রোগের প্রাদুর্ভাব আসতে আসতে বাড়তে থাকবে।তাই নিজের প্রতি যত্নশীল হউন।
৪.ব্রেন টিউমার বা ক্যান্সারঃ
মোবাইল ফোনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এর ফলে হতে পারে ব্রেন টিউমার বা ক্যান্সার। কোষ তৈরিতে বাধা প্রদান করে মোবাইল ফোনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার।অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে ব্রেন টিউমার ক্যান্সারে রুপ নিতে পারে।
এতক্ষণ নিশ্চয়ই জানতে মোবাইল ফোনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কিভাবে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই আপনি দিন এ কখনোই নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা উচিত নয়।