কাঠের নকশা মেশিন দাম বাংলাদেশ এবং প্রয়োজনীয়তা

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমিও ভালো আছি। আজকে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব কাঠের নকশা মেশিন দাম বাংলাদেশ এ কত? এই সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য। আপনারা জানতে পারবেন এই মেশিন কত দামে পাওয়া যায়। তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

কাঠের নকশা মেশিন দাম বাংলাদেশ

আমাদের গ্রামভিত্তিক বাংলাদেশ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। আর আমাদের এই ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির দিকে চোখ ফেরালে আমরা দেখতে পাই, যে অবিচ্ছেদ্য অংশটি এসবের একটি প্রধান অংশ দখল করে আছে সেটি হলো কাঠের নকশা।

প্রধান অংশ কেন বললাম সেই বিষয়টি একটু পরিষ্কার করে বলে নেই। আমরা সেইই প্রাচীনকালের রাজা বাদশার আমলের ইতিহাসের পাতাগুলোয় চোখ বুলালে, সেখানে তাদের রাজমহল, অন্দরমহলসহ বাড়ির বিভিন্ন জায়গার যে বিবরণগুলো পাই সেখানে প্রাধান্যের শীর্ষে প্রায়ই থাকে কাঠের উপর খোদাইকৃত নকশা। বিশেষত ঐতিহাসিকদের অপূর্ব ভাষাশৈলীতে সিংহ দ্বারের নকশার বিবরণ আমাদের সবার জানা।

রাজা বাদশার আমল থেকে এখন পর্যন্ত এদেশের গ্রামবাংলার প্রায় প্রতিটি বাড়িরই অবিচ্ছেদ্য অংশ কাঠের নকশা। সে কুঁড়েঘর হোক কিংবা হোক জমিদারি হালের বাড়ি। প্রান্তিক পর্যায়ের যেসব মানুষ রয়েছেন তাদের বাড়ির দরজায় হয়তো কারুকার্য খচিত নকশা খুঁজে পাওয়া না গেলেও নববধূর আলতারাঙা পায়ের ছাপ কাঠের সাথে বাঁধাই করে রাখার দৃশ্য সৌন্দর্যপিপাসু হৃদয়ে ধরা না দিয়ে পারেনা।

জমিদারি হালের বাড়ি হলে তো কোন কথাই নেই। প্রধান দরজা, খাট-পালঙ্কসহ নানা ধরনের কাঠের আসবাবপত্রে নকশা দেখা যায়। দেশে শিল্পায়ন ও নগরায়নের হার বাড়লেও বাঙালিয়ানার একটি প্রধান স্বরূপ কাঠের নকশার স্থান এখনো বাংলার হৃদয় জুড়ে। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে, শহুরে পরিবেশে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাব দেখা গেলেও অনেক বাড়িতেই নকশা করা কাঠের আসবাবপত্র দেখতে পাওয়া যায়। এমনকি বিদেশজুড়েও রয়েছে এর খ্যাতি।

প্রাচীন এই ঐতিহ্যের খ্যাতি ধরে রাখতে, নকশার কারিগররা সেই প্রাচীনকাল থেকেই বংশপরম্পরায় কিংবা জীবিকার তাগিদে সুন্দর সুন্দর নকশা তৈরি করে আসছেন। কাঠের উপর সুনিপুণ অলংকরণ আগেকার সময় থেকেই নিজ হাতে করে আসছেন কারিগররা। বাংলাজুড়ে সোনার চেয়েও দামী এই মানুষগুলো জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত পরিশ্রম করে নকশা তৈরি করে যাচ্ছেন। একইসাথে দেশ ও জাতির ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখছেন।

<

তবে পূর্বের তুলনায় কাঠের উপর নকশা তোলার কাজ সহজ হয়েছে। যুগের হাওয়ায় তাল মিলিয়ে এখানেও এসেছে প্রযুক্তি। আজ কাঠের নকশা তৈরি করতে কারিগরের পাকা হাতের স্থান দখল করেছে মেশিন। লাইনটি একটু আবেগঘন হলেও এটাই বাস্তবতা। কারিগরদের মতেও, যন্ত্রে সুবিধা বেশি, সময় লাগে কম। প্রকৃতপক্ষে, পূর্বে কাঠের উপর ছবি এঁকে তার উপর হাতুড়ি, বাটালি ব্যবহার করে বিভিন্ন আসবাবপত্রে অলংকরণ করা হতো।

এতে সময় ও পরিশ্রম দুটোরই পরিমাণ ছিল বেশি। কিন্তু এখন ছবি আঁকা হচ্ছে কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে এবং হাতুড়ি বাটালির স্থলে মেশিন ফুটিয়ে তুলছে চাহিদামাফিক নিপুণ অলংকরণ। ফলশ্রুতিতে কমেছে সময়, বেড়েছে কারিগরদের উপার্জন। পাল্টে যাচ্ছে পেছনের সারিতে পড়ে থাকা নকশার কারিগরদের জীবন।

এতক্ষণ যে বাস্তবতার কথা বললাম, সেই বাস্তবতার পেছনে রয়েছে বিজ্ঞানের একটি আবিষ্কার, সিএনসি উড রাউটার মেশিন। মেশিনটি অনেকটা প্রিন্টারের মতো। প্রিন্টার কি করে! কম্পিউটারে থাকা তথ্যের সফট কপিকে হার্ড কপিতে রূপান্তর করে। অর্থাৎ তথ্যসমূহ কাগজের উপর প্রিন্ট করা অবস্থায় পাই। একইভাবে এই রাউটার মেশিন কম্পিউটারে আঁকা নকশা কাঠের উপর ফুটিয়ে তোলে। অন্যভাবে বলতে গেলে, রাউটার মেশিনের মাধ্যমে আমরা নকশার সফট কপিকে হার্ড কপি হিসেবে কাঠের উপর পাই। যেখানে হার্ড কপি হলো কাঠের উপর খোদাইকৃত নকশা।

এখন প্রশ্ন হলো, নকশা করতে হলে কারিগরদের কম্পিউটারের ব্যবহার জানতে হবে?

মেশিনটি যেহেতু কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তাই এই প্রশ্নটি স্বাভাবিকভাবেই আসতে পারে। হ্যা, কম্পিউটারের ব্যবহার একটু শিখতে হয়। শুধুমাত্র, একজন কারিগর যে নকশাটি কাঠের উপর আঁকতেন, সেই নকশাটি তিনি কম্পিউটারের সফটওয়্যারের মাধ্যমে আঁকবেন।

প্রথমত, সিএডি অর্থাৎ কম্পিউটার-এইডেড ডিজাইন সফটওয়্যারে আঁকতে হবে। এ ধরনের কিছু সফটওয়্যারের নাম হলোঃ অটোসিএডি, সলিডওয়ার্কস, স্কেচলিস্ট থ্রিডি ইত্যাদি।

পরে এই সিএডি ডিজাইনকে সিএনসি মেশিন ল্যাঙ্গুয়েজে কনভার্ট করে নিতে হবে। কনভার্শনের ক্ষেত্রে এনসি-স্টুডিও, সিনটেক, ডিএসপি ইত্যাদি সফটওয়্যারগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এরপর কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মেশিনটি কাঠের উপর রেখে সাবধানে অন করতে হবে। এরপর আর মানুষের কোন কাজ নেই, কাজ করবে মেশিন, সিএনসি উড কাটার মেশিন।

নকশা খোদাই করা ছাড়াও কাঠকে আরো প্লেইন করতে ব্যবহৃত হয় প্লেইনার। নকশাটিকে আরো সুন্দর করে তুলতে কাঠের উপরিতলে কোথাও কোন ছিদ্র করতে ব্যবহৃত হয় ড্রিল মেশিন।

এবারে জেনে নেয়া যাক, সিএনসি উড কাটার মেশিন কত দামে কিনতে পাওয়া যায়? কাঠের নকশা মেশিন দাম বাংলাদেশ

এই মেশিন বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। প্রকারভেদে মেশিনের দাম বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু হয়ে কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে ৪ লাখ টাকায় ও কিনতে পাওয়া যায়। তুলনামূলক কম দামের মেশিনের কোয়ালিটি ভালো না হওয়ায় বেশি দিন টিকে না। তাই কিনতে হলে বেশি দামের কেনাই ভালো।

আজ এই পর্যন্তই। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ

Related Posts

2 Comments

মন্তব্য করুন