আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছেন। বর্তমান সময়ে আমরা আমাদের পরস্পরের সাথে যোগাযোগ রক্ষার্থে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করি। এসকল প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের মধ্যবর্তী দূরত্ব কে কমিয়ে দিয়েছে এবং পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে দিয়েছে সহজতর। এই ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করছে ইন্টারনেট।
ইন্টারনেট কথাটির বাংলা অর্থ যদি বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে যা বুঝায় তা হল আন্তর্জাতিক জালিকা। হাস্যকর হলেও ঠিক তাই। এটি অনেকটা জালের মতোই আমাদের সবাইকে আবদ্ধ করে রেখেছে একই সুতোর ভিতরে। আগে যেখানে এক এলাকার সাথে অন্য এলাকার যোগাযোগ রক্ষা করা কঠিন হয়ে যেত সেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যোগাযোগ করা যাচ্ছে খুব সহজেই।
বর্তমান সময়ে আমরা সবাই কম বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করেই থাকি। আমাদের সবারই ইন্টারনেট সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা আছে। সময়ের সাথে সাথে ইন্টারনেট ও আমাদের কাছে এসেছে নতুন আঙ্গিকে। এই নতুন চেহারা কে আমরা জেনারেশন হিসেবে চিনি। সংক্ষেপে বলতে গেলে ১জি,২জি,৩জি,৪জি,৫জি ইত্যাদি। আমরা সবাই বর্তমানে ৪জি এবং ৫জি ব্যবহার করছি। সময়ের বিবর্তনে আমরা চতুর্থ জেনারেশন পার করে পঞ্চম জেনারেশনে অগ্রসর হয়েছি। কিন্তু পুরনো জেনারেশন গুলো কি এখনো বিদ্যমান আছে কি নেই সেটি নির্ভর করছে আমাদের এই প্রযুক্তিতে অগ্রগতির ওপর। প্রথম জেনারেশন এবং দ্বিতীয় জেনারেশন এর ধাপ পার হয়ে যখন আমরা তৃতীয় জেনারেশনে পা দিয়েছিলাম তখন আমাদের কাছে ওই সময়টি ছিল অনেকটাই বিস্ময়কর সময়।
আগের জেনারেশন গুলোর তুলনায় তৃতীয় জেনারেশন আমাদেরকে দিয়েছিল একটু নতুন ছোঁয়া। কিন্তু বর্তমানে এর জায়গা করে নিয়েছে চতুর্থ জেনারেশন এবং পঞ্চম জেনারেশন। ইন্টারনেট প্রোভাইডার গুলো তাদের নতুন জেনারেশনকে জায়গা করে দেওয়ার জন্য পুরোনো জেনারেশনকে বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ তৃতীয় জেনারেশন ইন্টারনেট সুবিধা তাদের পক্ষ থেকে বন্ধ করে দেওয়ার জানান দিয়েছে। বর্তমানে আমেরিকার বিভিন্ন ইন্টারনেট প্রোভাইডার তাদের তৃতীয় জেনারেশন ইন্টারনেট ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যার ফলে পুরোনো যে সকল ডিভাইস এর মধ্যে তৃতীয় জেনারেশন ইন্টারনেট এখন পর্যন্ত ব্যবহার করা সম্ভবপর হয়েছিল পরবর্তী সময়ে এই সুবিধা তারা আর গ্রহণ করতে পারবে না। তাদের ডিভাইসগুলো এর ভেতর ইন্টারনেট সুবিধা বন্ধ থাকবে যদিও ওয়াইফাই ব্যবহার করে ফোন গুলোতে ইন্টারনেট ব্যবস্থা সচল রাখার সম্ভবপর হবে। এছাড়াও পুরনো যেসকল আইফোন বা অন্য কোন ফোন, কিন্ডেল যেসকল ডিভাইসে ইন্টারনেট সুবিধা কেবল মাত্র তৃতীয় জেনারেশন পর্যন্ত ছিল সেই সকল ডিভাইস ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।
যেহেতু বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থা এখনও পঞ্চম জেনারেশন পর্যন্ত ব্যাপকভাবে বিস্তারলাভ করে নি সেহেতু এই ঘটনা বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ঘটা বর্তমান সময়ে প্রায় অসম্ভব। বাংলাদেশে যে হারে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই একসময় আমাদের মাঝেও তৃতীয় জেনারেশন ইন্টারনেট ব্যবস্থা একটি জাদুঘরের সাজান বস্তুর ন্যায় মনে হবে।