বৃক্ষ আমাদের পরম বন্ধু।খাদ্য,বস্ত্র,আশ্রয়,স্বাস্থ্য সকল ক্ষেত্রেই বৃক্ষের উপযোগিতা অপরিসীম।উপরন্তু তার সৌন্দর্যে হৃদয় আপ্লুত হয়।কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে এসে সবুজ শ্যামল পৃথিবীর অস্তিত্ব আজ বিপন্ন।বিষাক্ত গ্যাসের কবলে পৃথিবীর বাতাস হয়ে উঠেছে ভারি এবং প্রাণীর জীবনকে করে তুলছে দুর্বিষহ। ঠিক এমনই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা এ সুন্দর ভুবনকে রক্ষার জন্য প্রাণী জগতের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য একটি মাত্র পথ আবিষ্কার করলেন,আর তা হলো “বৃক্ষরোপণ”।
বৃক্ষ শুধু আমাদের মানস – ভুবনের সৌন্দর্যের লিলাশক্তী নয়,বৃক্ষ আমাদের জীবনের ছায়াশক্তিও বটে।আমাদের দৈনন্দিন জীবন প্রবাহের এক অবিচ্ছেদ্য উৎস নির্ঝর হচ্ছে বৃক্ষ।বৃক্ষ খাদ্য তৈরির সময় সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় পরিবেশ হতে কার্বন ডাই- অক্সাইড গ্রহণ করে এবং উপজাত হিসেবে অক্সিজেন ত্যাগ করে ।সমগ্র মানবকুল বায়ুমণ্ডল হতে অক্সিজেন গ্রহণ করে।বৃক্ষ যদি অক্সিজেন ত্যাগ না করতো তাহলে বায়ুমন্ডলের অক্সিজেন ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যেত এবং প্রাণীকুল ধ্বংসের মুখে পতিত হতো।সুতরাং স্বাভাবিক শ্বাস- কার্যে সহায়তা করে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বৃক্ষের ভূমিকা অপরিসীম।
বিশেষ বিশেষ দিনে গাছ লাগানো যেতে পারে।সেটা হতে পারে জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী,সন্তানের প্রথম স্কুলে যাওয়ার দিন,পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিন বা অন্য কোনো বিশেষ দিনকে উপলক্ষ করে।বিভিন্ন জরিপে দেশে প্রাকৃতিক বনভূমির পরিমাণ কমে যাবার খবর পাওয়া গেলেও বনের বাহিরে অর্থাৎ সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। মানুষের সচেতনতা , কমিউনিটি উদ্যোগ এবং সরকারের সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির মাধ্যমে লোকালয়ে বাড়ছে গাছের সংখ্যা, এটা একটা আশার কথা।
মাননীয় প্রধনমন্ত্রী ‘ বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০১৯ ‘ এবং জাতীয় বৃক্ষ রোপন অভিযান ও বৃক্ষ মেলা ২০১৯ ‘ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রাকৃতিক জলাধার সৃষ্টি ও তা সংরক্ষণ এবং অধিক হারে বৃক্ষ রোপণের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।
বৃক্ষ রোপন করতে আঙিনা, ছাদ,সড়ক সহ অফিস- আদালত,স্কুল – কলেজের যেখানেই পরিত্যাক্ত জায়গা আছে , সেখানেই গাছ লাগানো যায়।
শহর অঞ্চলে বা অন্যান্য বিভাগীয় শহর এলাকায় অনেকের ইচ্ছা থাকলেও জায়গার অভাবে গাছ লাগাতে পারেন না। এক্ষেত্রে ‘ ছাদ – বাগান’ কর্মসূচির মাধ্যমে গাছ লাগানো যেতে পারে। বৃক্ষ মানুষকে মহৎ করে তুলে,শুদ্ধতা অর্জনের জন্যে বৃক্ষ মুখী হাওয়ার বিকল্প নেই! দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিশু – কিশোরদের যদি বৃক্ষ প্রেমী হিসেবে গড়ে
- তোলা যায় তাহলে সেদিন খুব বেশি দূরে নয় যেদিন দেশে ভরে উঠবে সবুজে সবুজে।এক্ষেত্রে অভিভাবকদের ও উচিৎ নিজ নিজ সন্তানদের বৃক্ষ প্রেমের প্রতি আগ্রহী করে তোলা।
(জুলাই – আগস্ট )গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়।প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে,রেললাইন ও সড়ক এর পাশে,সরকারি – বেসরকারি অফিস,রাস্তার পাশে,মসজিদের পাশে,পতিত ও খাস জমিতে,উপকূলীয় এলাকা, গৃহস্থালির আঙিনা ও বাড়ির ছাদে ফলদ,বনজ ও ঔষধি গাছ লাগানোর সুযোগ রয়েছে।দরকার শুধু চেষ্টা ও রক্ষণাবেক্ষণ এর যথাযথ উদ্যোগ।
সবুজ শ্যামল বিশ্বের মানচিত্র রক্ষার জন্য আজ একটি মাত্র পথ আমাদের সামনে খোলা রয়েছে,আর তা হলো অধিক বৃক্ষরোপণ ।
সরকারি স্লোগানের সাথে সুর মিলিয়ে পড়তে হবে ” একটি গাছ কাটার পূর্বে তিনটি চারা গাছ লাগাতে হবে। ”
বৃক্ষরোপণ অভিযান মানে কোনো উৎসবে মেতে উঠা নয় ,বরং বিপুল যে জীবন ধারা নিখিল বিশ্বজুড়ে প্রবাহমান তাকেই নতুন করে বন্দনা করা।তাই আর বৃক্ষ নিধন নয়,বরং বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণের প্রতি আমাদের সকলের যত্নবান হওয়া উচিত।আমরা আমাদের বর্তমান প্রয়োজনের জন্য ভবিষ্যৎ দেশ ও জাতিকে ভয়াবহ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারিনা। তাই আমাদের স্লোগান হাওয়া উচিত-
এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি,
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
“আসুন গাছ লাগানো সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করি।”
গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান
Good post
Ok
well
Gd
Okay
অভিনন্দন
Nice
ধন্যবাদ।