৮ম শ্রেণীর সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ের প্রথম দুটি অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা (প্রথম পর্ব)

বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় (বিসিএস, ব্যাংক, প্রাইমারী, নিবন্ধন ইত্যাদি) সাধারণত বিজ্ঞান থেকে প্রশ্ন এসে থাকে। এজন্য ৮ম ও ৯ম-১০ম শ্রেণীর সাধারণ বিজ্ঞান বইটি পড়লে প্রতিযোগীতায় উত্তর করা অনেক সহজতর হয়। তাই আজকে ৮ম শ্রেণীর সাধারণত বিজ্ঞান বইয়ের প্রথম দুটি অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ লাইন ও কথাগুলো তুলে ধরলাম। পর্যায়ক্রমে সবগুলো অধ্যায় নিয়ে আলোচনা করব ইনশা-আল্লাহ।

প্রথম অধ্যায়: প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাস

১। আজ পর্যন্ত প্রায় ১৫ লক্ষ প্রজাতির প্রাণী আবিষ্কৃত হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত এদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

২। বিপুলসংখ্যক প্রাণীর গঠন ও প্রকৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জনের সহজ উপায় হল শ্রেণীবিন্যাস। প্রাণীদেহে বিদ্যমান বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে মিল-অমিল ও পরস্পরের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তার উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবিন্যাস করা হয়।

৩। শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে প্রয়োজনের তাগিদে বর্তমানে জীব বিজ্ঞানের একটি স্বতন্ত্র শাখা গড়ে উঠেছে। এর নাম শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যা।

৪। শ্রেণীবিন্যাসের সবচেয়ে নিচের ধাপ হচ্ছে প্রজাতি।

৫। প্রকৃতি বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াসকে শ্রেণিবিন্যাসের জনক বলা হয়।

৬। তিনি সর্বপ্রথম প্রজাতির বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করেন এবং দ্বিপদ বা দুই অংশ বিশিষ্ট নামকরণ প্রবর্তন করেন।

৭। দ্বিপদ নামকরণ মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Homo sapiens.

৮। দ্বিপদ নাম ল্যাটিন অথবা ইংরেজি ভাষায় লিখতে হয়।

৯। আধুনিক শ্রেণীবিন্যাসে সকল প্রাণী অ্যানিম্যালিয়া জগতের অন্তর্ভুক্ত।

১০। অ্যানিম্যালিয়া জগতের প্রাণীদের নয়টি পর্বের ভাগ করা হয়েছে। এই নয়টি পর্বের প্রথম আটটি পর্ব অমেরুদন্ডী এবং শেষের পর্বটি মেরুদন্ডী।

১১। স্তন্যপায়ী প্রাণীরা সন্তান প্রসব করে তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রম হচ্ছে প্লাটিপাস।

এক নজরে অ্যানিম্যালিয়া জগতের শ্রেণীবিন্যাস:

দ্বিতীয় অধ্যায়: জীবের বৃদ্ধি ও বংশগতি

প্রতিটি জীবের দেহ কোষ দিয়ে গঠিত। যেগুলো কোষ বিভাজন এর দ্বারা একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি কোষে পরিণত হয়। এভাবে বংশ বৃদ্ধি ঘটে।

কোষ বিভাজনের প্রকারভেদ: সাধারণত তিন ধরনের কোষ বিভাজন হয় ১।অ্যামাইটোসিস

২। মাইটোসিস – মাইটোসিস ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক অ্যামিবা ইত্যাদি এককোষী প্রাণী ও উদ্ভিদের দেহকোষ মাইটোসিস প্রক্রিয়া বিভাজিত হয়। মাতৃকোষের ক্রোমোজোম  অপত্য কোষের ক্রোমোসোম সংখ্যা সমান থাকে। মাইটোসিস বিভাজনের ফলে প্রাণী ও উদ্ভিদ দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের বিভাজন এর দ্বারা উদ্ভিদ কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে। মাইটোসিস কোষ বিভাজনকে ইকুয়েশনাল বা সমীকরণিক কোষ বিভাজন বলা হয়।

৩। মিয়োসিস  – মিয়োসিস কোষ বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজনও বলা হয়। কারণ অপত্য কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা অর্ধেক হয়ে যায়।

মাইটোসিস কোষ বিভাজন দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়।

ক) ক্যারিওকাইনেসিস – ক্যারিওকাইনেসিস হচ্ছে নিউক্লিয়াসের বিভাজন।

খ) সাইটোকাইনেসিস – সাইটোকাইনেসিস হচ্ছে সাইটোপ্লাজমের বিভাজন।

তবে ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিস শুরু হওয়ার আগে কোষের নিউক্লিয়াসের কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ করতে হয়। এ অবস্থাকে ইন্টারফেস বলে।

ক্যারিওকাইনেসিস পাঁচটি ভাগে বিভক্ত। ১. প্রোফেজ ২. প্রো-মেটাফেজ ৩. মেটাফেজ ৪. অ্যানাফেজ ৫. টেলোফেজ।

মিয়োসিস কোষ বিভাজন হয় বলেই প্রতিটি প্রজাতির বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায় টিকে থাকতে পারে।

গ্রেগর জোহান মেন্ডেলকে বংশগতি বিদ্যার জনক বলা হয়।

নিউক্লিক অ্যাসিড দুই ধরনের। ১) DNA এবং ২) RNA

সাধারণত ক্রোমোজোম এ বংশগতির ধারা পরিবহনের জন্য প্রধান উপাদান হচ্ছে DNA। তাই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রকৃত ধারক এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলো পুরুষানুক্রমে বহন করে DNA।

যেসব জীবে DNA থাকে না কেবলমাত্র RNA থাকে, সে ক্ষেত্রে RNA জিন হিসেবে কাজ করে। যেমন – তামাক গাছের মোজাইক ভাইরাস (TMV)।

Related Posts

10 Comments

মন্তব্য করুন