অনলাইনে ইনকাম শুরু করুন এখন থেকেই

বন্ধুরা আশা করি সবাই ভালো আছেন

আজ আপনাদের সাথে যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবো সেগুলো হচ্ছে অনলাইন থেকে ইনকামের পদ্ধতি।

 

 

অনলাইন একটি সুবিশাল প্লাটফর্ম যা সবার জন্যই উন্মুক্ত। সেই বিশাল যায়গা থেকে আপনি আপনার দক্ষতার উপর অবস্থান করে ইনকাম করতে পারেন মাসে ৫০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০০০০ টা অব্দি।

আপনাদেরকে অনলাইনের ইনকামের কিছু প্লাটফরমের সাথে পরিচয় করিয়ে দিইঃ

১। আউটসোর্সিং

২। ক্রিয়েট মেকার (যেমনঃ ইউটিউব, ফেসবুক, ব্লগ ইত্যাদি)

৩। প্রোডক্শন (সার্ভে, সেলস)

৪। ভার্চূয়াল এসিস্ট্যান্ট

৫। সি.পি.এ, এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

৬। ইনভেস্টমেন্ট

৭। মাইনিং

আমি উপরের যে প্লাটফর্মের নাম উল্ল্যেখ করলাম তার প্রত্যেকটা নিয়েই আলোচনা করবো। তার আগে আমাদের এটা জানা উচিত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা না থাকলেও আপনি কিছু কাজ করতে পারবেন যেটার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট টাইম ব্যয় করতে হবে ও পুঁজি খাটাতে হবে।

১। আউট সোর্সিং: আউট সোর্সিং কাজ কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয় নই, এটা বিভিন্ন কাজের সমাহারে। যেমন, ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও মেকিং, রাইটং ইত্যাদি।

আউট সোর্সিং কাজে অনেক বেশি পারদর্শী না হলে বর্তমান সময়ে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকা অনেক কষ্টসাধ্য। উদাহরন স্বরুপ আমি যখন প্রথম আউটসোর্সিং কাজ শুরু করি তখন ডাটা এন্ট্রি থেকেই শুরু করি। আমাকে প্রত্যেক ডাটা কালেকশনের জন্য ০.৪০ সেন্ট প্রদান করতো। আমি দিনে ১০০০ ডাটা দিতে পারতাম অনায়সে। কিছুদিন পরে ফিলিপাইন এর ফ্রির‌্যান্সাররাই ওই একই কাজের জন্য মাত্র ০.০৮ সেন্ট করে নিতে শুরু করলো। ফলে বাধ্য হয়ে বাজারে টিকে থাকতে নিজের দরও কমিয়ে দিতে বাধ্য হলাম। আবার কিছু কাজ আপনি বায়ার থেকে নিলেন কিন্তু কাজটি বায়ারের চাহিদা মত হলো না। সেক্ষেত্রে কাজটি আবার নতুন করে তৈরি করে দিতে হয়েছে অথবা অর্ডার ক্যান্সেল করে তাদের ডলার ব্যাক করতে হয়েছে, যাতে মার্কেটে আমার ফিডব্যাক খারাপ না হয়ে যায়। আর বর্তমান সময়ে তো একাউন্ট তৈরি করা ও ভেরিফাই করাও এক জটিলতার সৃষ্টি হয়। তার পরে কাজ পাওয়া, পেপাল সমস্যা তো আছেই। এত বাধা উৎরে যদি করতে পারেন তো ভালো না হলে আপনি চলে যেতে পারেন পরবর্তী ধাপে।

২। ক্রিয়েট মেকার : আপনি যদি ভালো ভিডিও বানাতে পারেন অথবা লেখালেখি করতে পারেন তাহলে এটা আপনার স্থান। এখানেও আপনি কয়েক রকম অপশন পাবেন হাতে-

(ক) ইউটিউবঃ ইউটিউব এই  সময়ে সবচেয়ে বৃহত্তম প্লাটফরম ইউটিউব নিয়ে আমি গত পোষ্টেই আলোচনা করেছি আপনি সেই পোষ্টটি দেখে নিতে পারেন বিস্তারিত দেওয়া আছে।

লিংকঃhttps://grathor.com/%e0%a6%87%e0%a6%89%e0%a6%9f%e0%a6%bf%e0%a6%89%e0%a6%ac-%e0%a6%a5%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%86%e0%a7%9f-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%b9%e0%a6%9c-%e0%a6%aa%e0%a6%a6/

(খ) ফেসবুকঃ ফেসবুক এবটি বিশ্ব বাজার দখল করে রেখেছ। আপনি যদি ইনকাম করতে চান তাহলে আপনি সহজেই একটি বৃহত্তর গোষ্টির সাথে নিজেকে সংযুক্ত করে ফেলতে পারবেন। ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে চাইলে আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। আসেন সেই নিয়মগুলো নিয়েই আলোচনা করি।

  • প্রথমত আপনার থাকতে হবে একটি ফেসবুজ পেজ।
  • সেই পেজে কমপক্ষে ১০ হাজার ফলোয়ার থাকা লাগবে।
  • আপনি যে ভিডিও পেজে আপলোড করবেন সেই ভিডিও ১ মাসে ৩ হাজার ঘন্টা ওয়াচ হতে হবে।
  • ভিডিও কোন কপিরাইট হওয়া যাবে না।
  • অন্য কারো ভিডিও শেয়ার করে দিলেও হবে না।
  • আপনি যদি ঠিক মত করতে পারেন তাহলে মাসে অন্তত ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন এই মাধ্যম থেকে।

(গ) ব্লগঃ আপনার যদি নিজের কোন ব্লগ না থাকে তাহলে আজই blogger.com এ গিয়ে খুলে নিতে পারেন নিজের ব্লগ। আর সাজিয়ে নিন নিজের মন মতো। এবার শুরু করে দিন আপনার কাজ। তার আগে জেনে নিই আপনি কোন কাজগুলো করতে পারবেন আর কোনগুলো পারবেননা।

  • কখনো কারো কন্টেট কপি করে দেওয়া যাবে না।
  • কোন প্রকার অশ্লীল কন্টেট পোস্ট করা যাবে না।
  • অপ্রয়োজনীয় কোন কন্টেট দেওয়া যাবে না।
  • আপনার পোস্টগুলি নিয়মিত সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন।
  • বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বিষয়গুলি নিয়ে নিয়মিত যুক্তিসংগত পোস্ট করুন।

৩। প্রোডাকশনঃ প্রোডাকশ বলছি এই কারনে এখানে আপনি যত কাজ করবেন বা যতটুকু দিবেন তারাও আপনাকে তার বিনিময়ে ততটুকু দিবে। প্রোডাকশনে কাজ করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত পন্থা দুটি।

(ক) সার্ভেঃ অনেকেই নিয়মিত সার্ভে সাইটে কাজ করে মাসে ৫০০০০ হাজার টাকা থেকে বেশি ইনকাম করে থাকে। সার্ভে অর্থাৎ জড়িপ/মতামত। আপনি মতামত প্রদান করবেন তার বিনিময় আপনাকে তারা পে করবে। আপনি নিয়মিত ৬/৭ টা সাইটে সার্ভের কাজ করতে পারবেন। সার্ভে করতে গেলে আপনার প্রয়োজন ভালো একটি ইন্টারনেট সংযোগ কম্পিউটার, একটি ভালো ভিপিএস। সার্ভে করতে গেলে আপনাকে ভালো ইংলিশ জানতে হবে। এখান থেকে প্রত্যেক দিন অন্তত আপনি ৩০-৪০ ডলার সহজেই ইনকাম করতে পারবেন। প্রত্যেক দিন মাত্র ৬ ঘন্টা সময় দিয়ে।

(খ) সেলস্ঃ বর্তমান সময়ে অনলাইনে সেলস্ খুবই জনপ্রিয় একটি পন্থা। আপনি যদি স্মার্ট, বাকপটু হয়ে থাকেন তাহলে অনলাইনে প্রোডক্ট সেল করে মাসে অন্তত কুড়ি হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে অনেক প্লাটফরম আছে যাদের পন্য বিক্রয় করলে আপনাকে পে করবে।

৪। ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্টঃ আপনি যদি ইংরেজিতে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি করেতে পারেন ভার্চূয়াল এসিস্ট্যান্ট এর কাজ। এই কাজটি খুবই সহজ একটি কাজ। যে কোন ওয়েব সাইটে গ্রাহকদের সাথে কথা বলা, সমস্যার সমাধান দেওয়া আপনার কাজ। প্রচুর সাইট আছে যারা নিয়মিত ভার্চুয়াল এসিস্টেন্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে। স্যালারিও অনেক ভালো। ঘন্টায় ৫ থেকে ৮ ডলার পর্যন্ত পেতে পারেন এই কাজ করে।

৫। সিপিএ/এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: এই পদ্ধতিতে ইনকাম করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে অনেক কিছুর ব্যবহার জানতে হবে। যদি আপনি সিপিএ করেন তাহলে জানতে হবে সিপিএ কি, সিপিএ এর পূর্ণাঙ্গ মানে কস্ট পার এ্যাকশন অর্থাৎ আপনাকে একটি লিংক দেওয়া হবে এবং ঐ লিংকটি কোন দেশের কোন জনগোষ্টির নিকট পৌছাতে হবে তাও বলে দেওয়া হবে। যদি আপনার রেফারেল ব্যবহার করে আপনি ঔ লিংকটি নির্দিষ্ট মানুষের কাছে পৌছাতে পারেন তাহলে আপনি পয়সা পাবেন তাতে তাদের প্রোডাক্ট সেলস্ হোক আর না হোক। যেমনঃ আপনাকে একটি লিংক দিয়ে বলা হলো লিংকটি ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের মানুষের কাছে পৌছাতে হবে। আপনাকে তার বিনিময়ে ২০ সেন্ট করে প্রদান করবে। এখন আপনি সেই লিংকটি কোন স্যোসাল মাধ্যমে পোস্ট করার মাধ্যমে পাঞ্জাব প্রদেশের ১০০০ লোকের কাছে পৌছে গেল এবং ওখান থেকে ১০০ লোক আপনার লিংকটিতে ক্লিক করলো, তাহলে আপনি পাবেন ১০০ গুন ২০ সেন্ট অর্থাৎ ২০ ডলার। আর এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং পদ্ধতিটাও ঔ একই তবে পার্থক্য হলো যদি আপনার প্রোডাক্ট বিক্রি হই তবেই তারা আপনাকে পে করবে।

৬। ইনভেস্টমেন্টঃ আপনি যদি কোন কাজ না করেই টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে অনলাইনে যে কোন ট্রাস্টেট ইনভেস্টমেন্ট সাইটে আপনি ইনভেস্ট করতে পারেন। আপনার ইনভেস্টমেন্ট করা অর্থ দিয়ে তারা শেয়ার বাজার, কন্স্ট্রাকশন সাইটের ব্যবসা করে আপনাকে তা থেকে লভ্যাংশ প্রদান করবে। এখানে প্রত্যেক দিনের লভ্যাংশ প্রত্যেক দিনই দিয়ে দেই।

৭। মাইনিং: অনলাইনে মাইনিং একটি ব্যায়বহুল পক্রিয়া। আগে মাইনিং সম্পর্কে বিস্তারিত একটু বলি। আমরা যখন এক একাউন্ট থেকে আর একাউন্টে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রান্সফার করি তখন ঔ ক্রিপ্টোকারেন্সি অনেক গাণিতিক হিসাবের মধ্য দিয়ে যায়। আপনি যখন মাইনিং ইন্স্টুমেন্ট তৈরি করবেন তখন আপনার ইন্স্টুমেন্ট ব্যবহার করে হিসাব করার করনে আপনার একাউন্টে কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরি হবে এটাকেই মাইনিং বলে। বর্তমানে হাজার হাজার ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে লেনদেন হচ্ছে। তার মধ্যে জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি হচ্ছেঃ বিটকয়েন, ইথারিয়াম, ডগি ইত্যাদি। তবে আপনার যেনে রাখা ভালো মাইনিং থেকে আপনাকে ভালো ইনকাম করতে হলে অবশ্যই আপনাকে ৫০০০০০ টাকা ইনভেস্ট করতে হবে, তবেই আপনি মাসে অন্তত লাখ খানেক টাকা ইনকামের আশা করবেন।

 

বন্ধুরা আজ অনেক কিছু নিই আলোচনা করলাম। আশা করি আপনাদের বিষয়গুলি নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তার খোরাক যোগাবে এবং আপনি আপনার স্ক্রীল অনুযায়ী সেরা পদ্ধতিটি ইনকামের জন্য বেছে নিবেন।

Related Posts

1 Comment

মন্তব্য করুন