“আজ বেঁচে আছি কাল মরেও যেতে পারি”

আসলামুআলাইকুম, প্রিয় পাঠক-পাঠিকা, আশা করি সবাই ভাল আছেন আল্লাহর রহমতে। প্রতিটা জীব মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। জন্ম যার আছে মৃত্যুবরণ ও সে করবে। এটাই সৃষ্টিকর্তার বিধান, এটাই প্রকৃতির নিয়ম, এটাই বাস্তবতা। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ, এ কারণে মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত বলা হয় অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা। মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব বলার একমাত্র কারণ হলো মানুষের মতো অন্য কোনো প্রাণী বা জীবের জ্ঞান ,বুদ্ধি, বিবেকবোধ বা বিচার করার ক্ষমতা নেই।

আমি এখন এই পোস্টটি লিখছি , জানিনা এই পোস্ট লেখা টি শেষ করতে পারবো কিনা ,কারণ মৃত্যু যে কোন সময় হতে পারে। আমাদের সকলকে সব সময় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত।

আমি আজ আছি ,কাল হয়তো নাও থাকতে পারি, সবটাই আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন । সময় এবং স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। যেটুকু সময় আমরা এই পৃথিবীতে নিঃশ্বাস নিতে পারছি সেটুকু সময় এর উচিৎ সঠিকভাবে কাজে লাগানোর।

ব্যাপারটা আমিও ভেবে দেখেছি যে,
আসলেই আমার থাকা না থাকায় পৃথিবীর কিছুই যায় আসে না, কিচ্ছু যায় আসে না। আমি থাকা অবস্থায় পৃথিবীটা যেমন আছে
আমি না থাকলেও ঠিক এমনটাই থাকবে।

এই পৃথিবীতে আমি কি পেয়েছি আর কি পাইন সেটার হিসেব না করে আমি যেটুকু পেয়েছি সেটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট আমি। আর আমি যা পায় নি তা আমার ছিলনা। তাই আফসোস করে এই মূল্যবান সময়টুকু নষ্ট করব না ।

আমার থাকা না থাকায় কারো কিচ্ছু যায় আসে না। হ্যাঁ যায় আসে না। এমনকি আমার
পরিবার, বন্ধু, আত্মীয় কারোর না। হ্যাঁ ,হয়তো মারা যাওয়ার কিছু দিন পর্যন্ত অনেকে আমার জন্য কাঁদবে ,অনেকেই আমার কথা মনে রাখবে। কিন্তু কয়েক বছর পরে ঠিকই এখন যেমনটা আছে, তেমনটাই হয়ে যাবে। আমি বলে যে আমার একটা অস্তিত্ব ছিল, সেটা তাদের মনেও থাকবে না। এটাই বাস্তবতা। হ্যাঁ ,এটাই প্রকৃতির নিষ্ঠুর নিয়ম।

যেহেতু আমি পরিচিত নই, হওয়ার বিন্দু পরিমাণ ইচ্ছেও আমার নেই, যে কয়টা দিন পৃথিবীতে আছি অপরিচিতের মতোই বাঁচতে
চাই এবং অপরিচিত হয়েই চলে যেতে চাই।

তবুও এইযে আমি পৃথিবীতে আসলাম। সৃষ্টিকর্তা আমাকে পাঠালেন দুনিয়াতে তার কি
কোন উদ্দেশ্য নেই?? প্রশ্ন ছিল আমার আর
উত্তরটা সৃষ্টিকর্তা নিজেই দিয়ে দিয়েছেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,”আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে এজন্য যে,তারা আমারই ইবাদত করবে”
(সূরা আয যারিয়াতঃ৫৬)

হ্যাঁ, আমাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে সৃষ্টিকর্তার দাসত্ব তথা ইবাদত করার জন্য।জীবনটা কয়েক দিনের মাত্র। আসে কয়েক দিনের জীবনে আমরা পরে আছি দুনিয়াবী চিন্তায় , এই দুনিয়ায় কি করব কি খাব কিভাবে চলব সেদিন তাই মগ্ন হতে হতে আমরা আখিরাতে পরকাল ভুলে গিয়েছি।

আচ্ছা, ইবাদত মানে কি শুধু সালাত,সিয়াম, হজ্জ, যাকাত এগুলোই?
এগুলো ইবাদতের মূল ভিত্তি। তবে শুধু এগুলোই ইবাদাত না চাইলে সকল ক্ষেত্রেই আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে ইবাদত করতে পারি।

আমাদের ২৪ ঘন্টা হবে ইবাদত।
ঘুম থেকে উঠা শুরু করে আবার ঘুমুতে যাওয়া
পর্যন্ত।
মাত্র দূইটা পদ্ধতি অনুসরণ করে আমরা সব সময়ই বলতে মশগুল থাকতে পারি,
১) আমি যা কিছু করব তা আমার মহান আল্লাহতালা অর্থাৎ আমার সৃষ্টিকর্তার আদেশ অনুযায়ী এবং যা কিছু করা থেকে বিরত থাকবো তাও আমার সৃষ্টিকর্তার নিষেধ অনুযায়ী।

২) সকল কাজ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ইসলামের নির্দেশনা মোতাবেক মোতাবেক করব।

এই দুইটি বিষয় মাথায় রাখলে আমাদের ২৪ টা ঘন্টা ইবাদতের মধ্যে কাটানো সম্ভব। উদাহরণ দিলে অনেক বড় করা যাবে।

এটা দিনের আলোর মতোই সত্য যে ,দিন যখন হয়েছে রাতের আঁধার ও ঠিক নেমে আসবে। তেমনি জন্মগ্রহণ যখন করেছি, মৃত্যুবরণও তখন করতেই হবে।
এ দ্বীনের আমাকে প্রয়োজন নেই। বরং আমি
এ দ্বীন ছাড়া নিঃস্ব। দুনিয়াতে,আখিরাতেও।
এ দ্বীন ছাড়া আমি হারিয়ে যাবো,হেরে যাবো।
অল্প কিছু মানুষ যারা আমাকে চেনে তারাও আমাকে মনে রাখবে না,আল্লাহও আমাকে
মনে রাখবে না যদি আমি আল্লাহর এই দ্বীনকে
অবহেলা করি।নিজের ইচ্ছেমতো চলি। আল্লাহ ও নবী রাসুলের দেখানো পথে চলার তৌফিক দান করুক এই কামনা ব্যক্ত করে এখানেই আমার লেখাটা শেষ করছি।

আমাদের সকলকে সৃষ্টিকর্তার দেখানো পথে চলার তৌফিক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমীন।

সবাই ভাল থাকবেন , সময়ের সঠিক ব্যবহার করবেন তাহলেই ইহকালীন ও পরকালীন সফলতা আসবেই।

আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

10 Comments

মন্তব্য করুন