আসসালামুয়ালাইকুম বন্ধুরা কেমন আছেন? নিশ্চয় ভালো৷ জি বন্ধুরা ভালো থাকলেই ভালো৷ আজ আপনাদের সাথে খুবই গুরুত্বপুর্ণ একটি টপিক নিয়ে আলোচনা করব৷ সেটা হচ্ছে সাইবার অপরাধ৷ যাকে বলা হয় ইন্টারনেট জগতে আপরাধ৷
2012 সালের সেপ্টম্বরের 30 তারিখ বাংলাদেশের মাটিতে একটি অত্যন্ত দূংখের ঘটনা ঘটেছিল৷সে রাতে চট্রগ্রামের রামুতে অসংখ্য বৌদ্ধবিহার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল৷
2013 সালে এপ্রিলের 15 তারিখ মার্কিন যুক্তরাষ্টের বস্টন শহরে একটি ম্যারাথন দৌড়ের শেষে উপস্থিত দর্শকদের মাঝে একটা বোমা বিস্ফোরণ হয়ে 3 জন মারা যায়৷আহত হয়েছিল দুই শতাধিক৷
2011 সালের জুন মাসের 9 তারিখ নিউইয়র্ক টাইমসের একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল, সিটি ব্যাংকের লক্ষ লক্ষ গ্রাহকে ক্রেডিক কার্ড এবং তার গোপন তথ্য প্রকাশিত হয়ে গেছে৷ যে কারনে অসংখ্য মানুষের টাকা পয়সার নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে৷
এই উপরের তিনটি ঘটনার একটির সাথে আরেকটির মিল নেই মনে হলেও আসলে প্রত্যেকটার পেছনে কাজ করেছে সাইবার অপরাধ৷রামুর বৌদ্ধবিহার ধ্বংশ করার জন্য মানুষের মাঝে ধর্মবিদ্বেষী মনোভাব তৈরি করার উদ্দেশ্যে একটি আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটের সাহয্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷বস্টনের বোমা হমলার জন্য ঘরে বসে বোমাটি তৈরি করা হয যায়,সেটি হামলাকরী ইন্টারনেট থেকে শিখে নিয়েছিল৷ ক্রেডিট কার্ড নম্বর বের করার জন্য দুর্বৃত্তরা কোনো একটি ব্যাংকের তথ্য ভান্ডার হ্যাক করেছে৷
তো বন্ধুরা তথ্য প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের কারনে আমাদের জীবনের যেমন অনেক নতুন নতুন সুযোক সুবিধার সৃষ্টি হয়েছে৷ ঠিক সেরকম সাইবার অপরাধ নামে এক ধরনের অপরাধ জন্ম হয়েছে৷ তথ্য প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে এই অপরাধ গুলো করা হয় এবং অপরাধীরা সাইবার অপরাধ করার জন্য নিত্য নতুন পথ আবিষ্কার করে যাচ্ছে৷ তেমনি কয়েকটি সাইবার অপরাধ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আজকে৷যেগুলো থেকে আমাদের সাবধানে থাকতে হবে৷
স্প্যাম: আমরা যারা ইমেইল ব্যবহার করি তারা কম বেশি অনেকেই এই অপরাধটি দিয়ে আক্রান্ত হয়েছি৷ আসলে স্প্যাম হচ্ছে যন্ত্র দিয়ে তৈরি একটি অপ্রয়োজনীয়, উদ্দেশ্য মূলক কিংবা আপত্তিকর ইমেইল যেগুলো প্রতিমহুর্ত পাঠানো হচ্ছে৷ স্প্যাম এর আঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য নানা ধরনের ব্যবস্থা নিতে গিয়ে সবার অনেক সময় এবং সম্পদের অপচয় হয়৷
প্রতারণা:সাইবার অপরাধের একটা বড় অংশ হচ্ছে প্রতারণা৷ ভূল পরিচয় এবং ভূয়া তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে নানা ভাবে নানা ভাবে যোগাযোগ করা হয় এবং তাদেরকে নানা ভাবে প্রতারিত করার চেষ্টা করা হয়৷
আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ: অনেক সময়েই ইন্টারনেটে কোনো না কোনো সম্পর্ক ভূল কিংবা আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ করে দেওয়া হয়৷ সেটা শত্রুতামুলক হতে পারে,রাজনৈতিক হতে পারে৷ কিংবা অন্য যেকোনো অসৎ উদ্দেশ্য হতে পারে৷আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ করে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করায় বাংলাদেশে কয়েকবার ইন্টারনেটে ফেসবুক বা ইউটিউব এর মতো জনপ্রিয় সেবা বন্ধ রাখতে হয়েছিল৷
হুমকি প্রদর্শন: ইন্টারনেট, ই-মেইল বা কোনো একটি সামাজিক যোগাযোগ সাইট ব্যবহার করে কখনো কখনো কেউ কোনো একজন কে নানা ভাবে হয়রানি করতে পারে৷ ইন্টারনেটে যেহেতু একজন মানুষকে সরাসরি অন্য মানুষের মুখোমুখি হতে হয়না তাই কেউ চাইলে সহজেই আরেকজন কে হুমকি প্রদর্শন করতে পারে৷
সাইবার যুদ্ধ: ব্যাক্তিগত পর্যায়ে একজনের সাথে আরেক জনের সংঘাত অনেক সময় আরো বড় আকার নিতে পারে৷একটি দল বা গোষ্ঠি এমনকি একটি দেশ নানা কারনে সংঘবদ্ধ হয়ে অন্য একটি দল, গোষ্ঠি বা দেশের বিরূদ্ধে এ ধরনের সাইবার যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে৷ভিন্ন আদর্শ বা ভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রায়ই ঘটছে এবং সেখানে অনেক সময়ই সাইবার জগতের রাজনীতি বা আইনকানুন ভঙ্গ করা হয়৷
এই অপরাধ গুলো ছাড়াও আরো অনেক রকম অপরাধ আছে যার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মানুষ প্রতারণা শিকার হচ্ছে৷ আমাদের উচিত সকলকে এগুলো বিষয় নিয়ে সচেতন করা৷ ধন্যবাদ সবাইকে পোষ্টি পড়ার জন্য৷ আশা করি ভালো লেগেছে৷আজ এ পর্যন্তই দেখা হবে অন্য কোনো টপিক নিয়ে অন্য কোনো সময়৷ ততক্ষেনে ভালো থাকবেন৷ আল্লাহ হাফেজ