পাখি সহ সকল সৃষ্টি মানুষের উপকারের জন্য।

ইমাম তাবারানী বিশুদ্ধ সনদে হযরত সাঈদ বিন জুবাইর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তায়েফে মৃত্যুবরণ করেন।
আমরা তার জানাজায় শরিক হওয়ার জন্য গেলাম।
দেখলাম গরণিক আকৃতির একটি পাখি আসলো।
প্রবেশ করল তার লাশের ভিতর।
আমরা একে লাশ হতে বের হতেও দেখলাম।
তারপর তাকে দাফন করা হলে কবরের এখন হতে কাউকে তেলাওয়াত করতে শোনা গেল।
পবিত্র কোরআনুল করীমের কিছু আয়াত।

তার কাহিনীর বর্ণনা হলো এই,
গরনিক একটি মৌসুমী পাখি।
এটা যখন মৌসুম পরিবর্তনের উপলব্ধি করে,
তখন নিজের নিবাসে চলে যায়।
যাত্রার পূর্বে একজন নেতা এবং পথ প্রদর্শন, ও তত্ত্বাবধান এর জন্য দিশারী নির্বাচন করা হয়।
উড়ার সময় এরা একসঙ্গে ঝাকে ঝাকে এবং অনেক উপর দিয়ে উড়ে।
যাতে কোনো শিকারি জন্তু আক্রমণ করতে না পারে।
এসব পাখি মেঘ দেখলে,

অন্ধকার হলে কিংবা পানাহারের প্রয়োজন বোধ করলে নিচে নেমে আসে,
কিন্তু অবতরণের সময় ডাক বন্ধ করে দেয়।
যাতে দুশমনরা এদের খোঁজ না পায়।
এরা নিদ্রার সময় নিজের মুখটি বাহুর নিচে লুকিয়ে ফেলে।
কেননা এরা জানে,
মাথা অপেক্ষা বাহু যন্ত্রণা সহনি অধিক সক্ষম।
তদুপরি দুটি শেষ্ঠাঈ চোখ ও মগজ মাথাতেই রহিয়াছে।
শয়নের সময় এরা প্রত্যেকেই এক পা তুলে রাখে।
যাতে গভীর নিদ্রা না আসে।
দলনেতা বা পাহারায় নিযুক্ত পাখিটি কখনো ঘুমায় না বরং চারদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখে।
কাউকে আসতে দেখলেই বিকট শব্দে চিৎকার শুরু করে।
………………
ইয়াকুব বিন সিরাজ বলেন,
আমি রুমের নাগরিক জনৈক ব্যক্তিকে দেখেছি।
সে আমাকে বর্ণনা করেছে,
একবার আমি যুনজ নদীতে নৌকা ভ্রমণ করেছিলাম।
বাতাসের উল্টো প্রবাহ আমাকে একটি দ্বীপে নিয়ে ফেললো।
সেখানে আমি ঘুরতে ঘুরতে একটি বস্তির নিকট পৌঁছলাম।
সেখানে গিয়ে আমার আশ্চর্যের অন্তর হইল না।
কি আশ্চর্য!
সেখানকার লোকদের দুর্গ মাত্র এক বিঘত।
আবার তাদের অধিকাংশেরই এক চোখ কানা।
আমাকে দেখে তারা আমার চতুর্দিকে জড়ো হল।
আমাকে তাদের বাদশার নিকট নিয়ে গেল।

বাদশা আমাকে খাঁচার মতো একটি কারাগারে বন্দী করল।
কিছুদিন পরে আমি দেখলাম,
তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
আমি তাদের জিজ্ঞাসা করলাম,
তোমরা কোন যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছ?
তারা বলল,
আমাদের কিছু শত্রু আছে।

তারা এসে আমাদের ওপর হামলা করে।
এটি তাদের আসার মৌসুম।
কদিন পর দেখলাম এক ঝাঁক পানকৌরি এসে তাদেরকে ঠোকুর মারতে থাকলো।
তাদের একচোখ হওয়ার কারণও ছিল এটাই। পাখিগুলো নিজের চঞু তাদের চোখ ফুটো করেছিল।
আমি একটি বাস নিয়ে পাখিগুলোকে তাড়াতে শুরু করলাম।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্ত পাখি পালিয়ে গেল।
এতে তারা আমার প্রতি খুবই অভিভূত হল এবং আমাকে অশেষ আদর সমাধান করলো।
(আল্লাহ হাফেজ)
আসসালামু আলাইকুম

Related Posts

15 Comments

মন্তব্য করুন